কণ্ঠরোধের চেষ্টা? গণপিটুনির ঘটনায় টুইটার, সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা গাজিয়াবাদ পুলিশের
সম্প্রতি উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদে এক মুসলমান বৃদ্ধকে মারধর করে দাড়ি কেটে নেওয়া হয়। এখানেই শেষ নয়, তাঁকে জোড় করে বন্দেমাতরম এবং জয়শ্রীরাম বলতে বলা হয়। এই ঘটনার ভিডিওটি ভাইরাল হয় ট্যুইটারে। বেশ কিছু সংবাদমাধ্যমেও সম্প্রচারিত হয়। আর তারপরই উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদের পুলিশ একাধিক ব্যক্তি, সাংবাদিকের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে। পাশাপাশি, ট্যুইটারের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করে পুলিশ।
সরকারি সূত্রে খবর, এই ঘটনার ভিত্তিতে ট্যুইটারের ওপর থেকে আইনি সুরক্ষা তুলে নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। আইটি অ্যাক্টের ৭৯ ধারায় সুরক্ষা কবচ পেয়ে থাকে সংস্থাগুলি। ট্যুইটার এখন থেকে আর সেই সুরক্ষা কবচ পাবে না। সরকারের নয়া তথ্যপ্রযুক্তি আইন নিয়ে ইতিমধ্যেই ঠান্ডা যুদ্ধ চলছে টুইটারের। সূত্রের খবর, অসহযোগিতা করায় ট্যুইটারের আইনি সুরক্ষা তুলে নেওয়া হয়েছে। কোনও আপত্তিজনক বিষয়বস্তু পোস্ট করা হলে যিনি পোস্ট করেছেন, তাদের পাশাপাশি ভারতীয় আইন অনুযায়ী ট্যুইটারকেও আইনি পদক্ষেপের মুখে পড়তে হবে। যেহেতু ট্যুইটারের আইনি সুরক্ষা নেই এবং তারা ওই বিতর্কিত ভিডিওটিকে বিকৃত বলে চিহ্নিত করেনি, তাই তারাও আইনি পদক্ষেপের মুখে পড়বে।
ট্যুইটার ছাড়া সাংবাদিক রানা আয়ুব, সাবা নাকভি, মহম্মদ জুবের এবং কংগ্রেসের সালমান নিজামী, শামা মহম্মদ ও মাসকুর উস্মানীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এই সবার বিরুদ্ধেই ভিডিওর সত্যতা যাচাই না করে ভিডিও শেয়ার করে সাম্প্রদায়িক উস্কানি দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। এফআইআরে বলা হয়, ধর্মীয় আবেগে উস্কানি দেওয়ার স্পষ্ট উদ্দেশ্য নিয়েই ট্যুইটটি হাজার হাজার বার শেয়ার করা হয়েছে। সোমবার গাজিয়াবাদ পুলিশ ব্যাখ্যা চাওয়া সত্ত্বেও ট্যুইটার ব্যবহারকারীরা তা ডিলিট করেননি।
ট্যুইটার সহ এই আটজনের বিরুদ্ধে, আইপিসি ১৫৩, ১৫৩ এ, ২৯৫ এ, ৫০৫, ১২০ বি, ৩৪ ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
এসবের মাঝে এখন প্রশ্ন উঠছে ট্যুইটার এবং সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে এই কড়া পদক্ষেপ কি শুধুই আইনের মার প্যাঁচ? নাকি কণ্ঠরোধের চেষ্টা? এর আগেও বিজেপির তরফ থেকে বহু ভুয়ো ভিডিও, ছবি ভাইরাল করা হয়েছে এবং যাতে যথেষ্ট সাম্প্রদায়িক উস্কানি ছিল। তাহলে তখন কেন কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হল না? আর আজ যখনই বিজেপি সরকার বিরোধী কোন ভিডিও ভাইরাল হয়েছে তখনই আইনের দোহাই দিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিতর্ক দানা বাঁধছে।