ত্রিপুরায় ঘর বাঁচাতে মরিয়া বিজেপি, আলোচনায় বসছে শীর্ষ নেতৃত্ব
বিজেপি (BJP) ছেড়ে মুকুল রায় (Mukul Roy) তৃণমূলে (TMC) ফিরতেই রাজনৈতিক মহলে জোর জল্পনা, ত্রিপুরায় এবার ভাঙন ধরবে গেরুয়া শিবিরে। মুকুলের ছেলে শুভ্রাংশু (Subhrangshu Roy) থেকে শুরু করে দলের একাধিক নেতৃত্বের দাবি, ত্রিপুরার (Tripura) শাসকদলের বেশ কিছু বিধায়ক যোগাযোগ করছে তৃণমূলের সঙ্গে। দুবছর পর ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। তার আগেই মুকুল ঘনিষ্ঠ বিধায়করা শিবির বদলে করতে পারেন, এমন জল্পনা মাথাচাড়া দিতেই আসরে পদ্মশিবিরের হাইকম্যান্ড। ঘর বাঁচাতে ত্রিপুরার রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করলেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক বি এল সন্তোষ।
বুধবার সকাল থেকে দফায় দফায় রাজ্য সভাপতি ড. মানিক সাহা, দায়িত্বপ্রাপ্ত পর্যবেক্ষক ফণীন্দ্রনাথ শর্মা-সহ একাধিক রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেন সন্তোষ। যদিও বিজেপির দাবি, এটা রুটিন সাংগঠনিক বৈঠক। কিন্তু একথা আর গোপন নেই, ঘর বাঁচাতে মরিয়া বিজেপি। প্রাক্তন স্বাস্থ্যমন্ত্রী সুদীপ রায় বর্মনের নেতৃত্বে একাধিক বিদ্রোহী বিধায়ক তৃণমূলে যেতে পারেন বলে গুঞ্জন। একসময় তিনি-সহ অনেকেই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে এসেছিলেন। এবার উল্টো স্রোত ত্রিপুরায়। সেটাই চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে বিজেপির কপালে।
কিন্তু শাসকদলে কেন এমন ভাঙনের সম্ভাবনা, বিধানসভা ভোটের তো তাও বছর দুয়েক দেরি। তার অন্যতম কারণ, মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। গত বছর সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার সঙ্গে দিল্লিতে দেখা করতে যান সুদীপ-সহ ছয় দলবদলু বিধায়ক। মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে নালিশ করতেই সেই দিল্লি যাত্রা ছিল। কিন্তু নাড্ডার কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে পরে তাঁরা জনসমক্ষে জানান, সাংগঠনিক বৈঠক করতে গিয়েছিলেন। গত বছর রাজ্য পর্যবেক্ষক বিনোদ সোনকারের সামনেই ‘বিপ্লব হটাও, বিজেপি বাঁচাও’ স্লোগান তোলেন বিজেপি নেতা-কর্মীরা।
এদিন বিকেলে মানিক সাহা সাংবাদিকদের বলেন, কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব প্রত্যেক বিধায়ক ও মন্ত্রীদের শঙ্গে আলাদা আলাদা করে বৈঠক করেছেন। জানিয়েছেন, “বিনোদ সোনকারজি ত্রিপুরা সফরে এসেছেন, রাজ্য নেতা, সাংগঠনিক নেতৃত্ব, উপমুখ্যমন্ত্রী এবং সব বিধায়কদের সঙ্গে তিনি এক এক করে কথা বলেছেন। আগামিদিনের সাংগঠনিক দিশা দেবেন তিনি। পাশাপাশি শরিক দল আইপিএফটি-র সঙ্গেও বৈঠক হয়েছে।”
কিন্তু দলবদল নিয়ে মানিকের পাল্টা যুক্তি, “এমন কোনও সম্ভাবনাই নেই। সব বিধায়করা দলের সঙ্গেই আছেন। বিজেপি পরিবারে সব কিছু ঠিক আছে।” তবে নেতৃত্ব নিয়ে বিক্ষোভ দেখিয়েছেন অনেক বিধায়ক। সে প্রসঙ্গে রাজ্য সভাপতির মন্তব্য, “পরিবারে অনেক সময় মতানৈক্য হয়। তবে সেগুলি মিটিয়ে নেওয়া হবে।” এবার বিজেপি ভোটের আগে আদৌ ভাঙন আটকাতে পারে কি না সেটাই দেখার।