দরকার মজবুত শাখা সংগঠন, মাঠে নেমে পড়েছেন নতুন দায়িত্ব পাওয়া নেতারা
সাংগঠনিক রদবদলের পর তৃণমূলের শাখা সংগঠনগুলিকে আরও মজবুত ও সঙ্ঘবদ্ধ করতে ময়দানে নেমে পড়েছেন নতুন দায়িত্ব পাওয়া নেতারা।
যুব তৃণমূল, দলের মহিলা সংগঠন, শ্রমিক সংগঠনে, কৃষক ও খেতমজুর সংগঠনের দায়িত্বে এসেছেন সায়নী ঘোষ (Sayani Ghosh), কাকলি ঘোষদস্তিদার (Kakoli GhoshDastidar), ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (Ritabrata Banerjee) ও পূর্ণেন্দু বসু (Purnendu Basu)। নতুন দায়িত্ব পেয়েই জেলা সফর শুরু করে শাখা সংগঠনের অন্তর্গত বিভিন্ন ইউনিটকে আরও জোরদার করতে রূপরেখা তৈরি করার কাজ শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। নতুন দায়িত্ব না-পেলেও এই কাজে পিছিয়ে নেই তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যও।
২০০৩ সাল থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তৃণমূলের মহিলা সংগঠনের দায়িত্বে ছিলেন কাকলি। মহিলা তৃণমূলের (TMC) শীর্ষে ফিরে কাকলি ইতিমধ্যেই পূর্ব মেদিনীপুর, পশ্চিম মেদিনীপুর ও বাঁকুড়া গিয়েছেন। সদ্য হওয়া বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের মহিলা ভোটারদের বড় অংশ তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে দাঁড়িয়েছে। মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য মমতা গত এক দশকে একের পর এক প্রকল্প গ্রহণ করেছেন।
এই প্রেক্ষাপটে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের আগামী দিনের কর্মসূচি ও সংগঠনের কাজ আরও কার্যকরী করতে মহিলা তৃণমূলের রাজ্য কমিটির বৈঠক ডেকেছেন কাকলি। বারাসতের সাংসদের কথায়, ‘ইতিমধ্যে কয়েকটি জেলায় গিয়েছি। সোমবার মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য কমিটির বৈঠক হবে। সেই বৈঠকে আশু কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা হবে। আগামী দিনে কোন পথে আমরা চলব, তা এই বৈঠক থেকেই চূড়ান্ত করা হবে।’ মহিলা তৃণমূলের দায়িত্বে না-থাকলেও এত দিন কাকলির হাত ধরেই বঙ্গজননী শাখা রাজ্যে বিভিন্ন জায়গায় প্রসারিত হয়েছে।
ইস্পাত, চটশিল্প, রেল হকার, বন্দর, বিদ্যুৎ শিল্পের তৃণমূল ইউনিয়নগুলির সঙ্গেও বৈঠক সেরেছেন। বিভিন্ন ইউনিয়নের বক্তব্য নিয়ে শ্রম দপ্তরে গিয়েছেন। কয়েক দিনের মধ্যে বর্ধমানের শিল্পাঞ্চল, উত্তরবঙ্গের চা-শিল্পের নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন ঋতব্রত। আইএনটিটিইউসি-র রাজ্য সভাপতির কথায়, ‘বিভিন্ন ইউনিয়নের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁদের বক্তব্য শুনছি। সংগঠনকে দ্রুত বুঝে নিয়ে আশু কর্মপন্থা ঠিক করতে বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছি। সংগঠিত শিল্পের পাশাপাশি অসংগঠিত ক্ষেত্রকে সমান গুরুত্ব দেওয়া আমার লক্ষ্য। কোন কোন অসংগঠিত ক্ষেত্রে আইএনটিটিইউসি-কে আরও প্রসারিত করার সুযোগ রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছি।’
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর যুব তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি পদে সায়নী ঘোষের উত্থান নিঃসন্দেহে বড় চমক ছিল। নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই তৃণমূল ভবনে যুবর দপ্তরে নিয়মিত বসছেন সায়নী। গত কয়েক দিনে যুব তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব ছাড়াও জেলার নেতৃত্বর সঙ্গে বৈঠকও করেছেন। এই অতিমারীর পরিস্থিতিতে যুব তৃণমূল কর্মীরা কোথায় কী ভাবে মানুষকে সহায়তা দিচ্ছেন, সেই ছবি নিয়মিত তুলে ধরছেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। সায়নীও দ্রুত জেলা সফর শুরু করবেন। নিজের ফেসবুক পেজে এই অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘করোনা পরিস্থিতির জন্য সকলের সঙ্গে একসঙ্গে দেখা করা সম্ভব হচ্ছে না। খুব শীঘ্রই জেলা সফর শুরু করব। তখন সকলের সঙ্গে দেখা করতে পারব।
এই সাংগঠনিক রদবদল পর্বে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের নেতৃত্বে সে ভাবে বদল হয়নি। যদিও তৃণমূল ছাত্র পরিষদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্যও টানা জেলা সফর করে সংগঠনকে আরও মজবুত করার কাজ করছেন। গত সপ্তাহে এই ছাত্র নেতা নদিয়া, পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম সফর করেছেন। এই সপ্তাহে বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম বর্ধমান ও বীরভূম যাচ্ছেন তিনি।