কাঞ্চনের গৃহদাহ: রাজনৈতিক ছক, বলছেন অভিনেতা-বিধায়ক
রবিবার টানাপোড়েনের পর সোমবার মুখ খুললেন টলিউডের কমেডিয়ান তথা উত্তরপাড়ার বিধায়ক কাঞ্চন মল্লিক (Kanchan Mullick)। স্ত্রী পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Pinky Banerjee) বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার পাল্টা অভিযোগ এনেছেন তিনি। পাশাপাশি, রবিবার রাতে গিয়েই পিঙ্কির বিরুদ্ধে চেতলা থানায় পাল্টা অভিযোগ জানিয়ে এসেছেন অভিনেতা।
উত্তরপাড়ার নবনির্বাচিত বিধায়কের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসা ও ভয় দেখানোর অভিযোগ আনেন তাঁর স্ত্রী। বিষয়টি নিয়ে রবিবার সকালে নিউ আলিপুর থানায় কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে এফআইআর করেছেন বলে দাবি করেন পিঙ্কি। যদিও পুলিস সূত্রে জানা হয়েছে, কাঞ্চন মল্লিকের বিরুদ্ধে তাঁর স্ত্রী কোনওরকম এফআইআর করেননি। একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন। পুলিস বিষয়টি খতিয়ে দেখছে।
শুধু গার্হস্থ্য হিংসাই নয়, এই টলি অভিনেতার সঙ্গে অভিনেত্রী শ্রীময়ী চট্টরাজের (sreemoyee chattoraj) পরকীয়ারও অভিযোগ এনেছেন পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়। এ প্রসঙ্গে কাঞ্চন মল্লিক ফোনে বললেন, ‘পিঙ্কি আমার বিরুদ্ধে যে কুৎসা শুরু করেছে, সেটাই আমি পুলিসকে জানিয়েছি। আইন আইনের পথে চলবে। শুধু এটুকু বলতে পারি, আমার স্ত্রী যে অভিযোগগুলো করছে, সেগুলো পুরোপুরি মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। পিঙ্কি ওর অভিযোগের সপক্ষে যে ভিডিও দেখাচ্ছে, তাতে কোথাও হুমকি, মারামারি কোনও কিছু নেই। আমার ছোট্ট ছেলেকে সামনে রেখে যে কুৎসাগুলো ও করছে, তাতে আমি মর্মাহত।’ কথা প্রসঙ্গে বিধায়ক জানালেন, ন’বছরের বিবাহিত জীবনে আট বছর তাঁরা আলাদা থাকেন। পিঙ্কি বর্ষীয়ান অভিনেত্রী সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের নাতনি। সাবিত্রী দেবীও এই দম্পতিকে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। দাম্পত্য কলহ প্রসঙ্গে কাঞ্চনের বক্তব্য, ‘সমস্যাটা আমার আর পিঙ্কির। কিন্তু তাতে হঠাৎ কেন শ্রীময়ীর নাম জড়ানো হচ্ছে আমি বুঝতে পারছি না। ও একটা সাধারণ মধ্যবিত্ত বাড়ির মেয়ে। ওর বাড়ির লোক কী ভাবছেন ভেবে, আমার লজ্জায় মাথা কাটা যাচ্ছে।’ এর পরই স্ত্রীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ আনেন কাঞ্চন, ‘আমি ২৫ বছর অভিনয় করছি, কেউ আমার বিরুদ্ধে কোনওরকম কুৎসা করতে পারেননি। যেই বিধায়ক হলাম, অমনি নানা অভিযোগ করা শুরু হয়ে গেল! এসব রাজনৈতিক ফায়দা তোলার ছক। এই ৫১ বছর বয়সে এসে নতুন করে প্রেম করার ইচ্ছা বা মানসিকতা আমার নেই। এই আট বছর আমি শ্বশুরবাড়ি গিয়ে গিয়ে সম্পর্কটা টিকিয়ে রেখেছি। যদি, পিঙ্কি আমার সঙ্গে আর সম্পর্ক রাখতে না চাইত, সোজাসুজি বলতে পারত। এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির কী প্রয়োজন ছিল!’
কাঞ্চন-পিঙ্কি দাম্পত্য কলহে যাঁর নাম জড়িয়েছে, সেই শ্রীময়ী কী বলছেন? তাঁর বক্তব্য, ‘আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে শুনে, আমি তাজ্জব হয়ে গিয়েছিলাম। পিঙ্কিদি একজন বিধায়কের স্ত্রী, সাবিত্রী চট্টোপাধ্যায়ের নাতনি— ইন্ডাস্ট্রিতে আলাদা পরিচিতি রয়েছে, সেখানে একজন নিউ কামার হয়ে আমি ওঁকে হুমকি দেব, এত ক্ষমতা আমার আছে! পিঙ্কিদি আমাকে কাঞ্চনদার সঙ্গে জড়িয়ে অপপ্রচার করছেন। আমি আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেব। বলতে বাধ্য হচ্ছি, সস্তা প্রচারের জন্য পিঙ্কিদি এসব করছেন।’ এ প্রসঙ্গে বার বার পিঙ্কি বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে ‘পরে ফোন করছি’ বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন।