নারদ মামলায় হলফনামা নেয়নি হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্টে মমতা
নারদ মামলায় (Narada Case) নয়া মোড়। এ বার কলকাতা হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে গেলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালতের অবকাশকালীন বেঞ্চে হবে মুখ্যমন্ত্রীর আবেদনের শুনানি। ওই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি হেমন্ত গুপ্ত এবং বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসু।
১৭ মে নারদ-কাণ্ডে গ্রেফতার হন রাজ্যের ৪ নেতা-মন্ত্রী। ওই ঘটনার প্রতিবাদে সিবিআই দফতরে বিক্ষোভ দেখান তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা, ধর্নায় বসেন মুখ্যমন্ত্রী। অন্য দিকে, বিচার চলাকালীন আদালত চত্বরে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। এই বিষয়গুলিকে একত্রিত করে নারদ মামলা অন্যত্র সরানোর দাবি করে সিবিআই। তাদের দাবি, প্রভাবশালীদের উপস্থিতির ফলে নিম্ন আদালতের শুনানি নিরপেক্ষ হয়নি এমন ধারণা তৈরি হবে জনমানসে। গত ২১ মে থেকে মামলা অন্যত্র সরানো নিয়ে হাই কোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে চলে শুনানি।
প্রথমে সওয়াল করেন সিবিআইয়ের কৌঁসুলি তুষার মেহতা। তাঁর সওয়াল পর্ব শেষে অভিযুক্তদের হয়ে সওয়াল শুরু করেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি। ৯ জুন অভিষেকের সওয়ালের মাঝখানে মুখ্যমন্ত্রীর হয়ে হলফনামা জমার দেওয়ার আবেদন জানান তাঁর আইনজীবী রাকেশ দ্বিবেদী। কিন্তু আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দেয়। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দল এবং বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, এক পক্ষের সওয়াল শেষে নতুন করে হলফনামা নিলে তার উপর ফের আলোচনা হবে। তাই তখন মুখ্যমন্ত্রীর হলফনামা জমা নেয়নি আদালত। হাই কোর্টের ওই দিনের নির্দেশের প্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন মুখ্যমন্ত্রী। মঙ্গলবার সর্বোচ্চ আদালতে সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ ওই মামলা শুনানির জন্য সময় ধার্য হয়েছে। বিচার করবেন ডিভিশন বেঞ্চের দুই বিচারপতি।
নারদ মামলায় আগেই মুখ্যমন্ত্রী ও আইনমন্ত্রীকে পার্টি হিসেবে যুক্ত করা হয়। কিন্তু তাঁদের পক্ষ থেকে আলাদা ভাবে হলফনামা জমা দেওয়া হয়নি। শুনানির প্রায় ১৫ দিনের শেষে ৯ জুন জমা দিতে গেলে তা খারিজ হয়ে যায়। যদিও ওই দিন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত আদালতকে জানিয়েছিলেন, হাই কোর্টের নিয়ম অনুসারে কোনও মামলার ৪ সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দেওয়া যায়। কিন্তু ওই যুক্তি বিচারকরা গ্রহণ করেননি।
কলকাতা হাই কোর্টে মুখ্যমন্ত্রী মূলত তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জবাব দিতেই হলফনামা জমা দেওয়ার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু হাই কোর্ট সেই আবেদনে সাড়া না দেওয়ায় এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ মমতা।