বিজেপি পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির তৈরি ৩৮ লক্ষ টাকার সেতু ভাঙল এক মাসেই
সেতু তৈরি করতে খরচ প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা। তা তৈরি হয়েছে এক মাস আগে। সেই সেতু সামান্য জলের তোড়ে ভেঙে গেল। বিজেপি (BJP) পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির উদ্যোগেই এই সেতু (flyover) তৈরি করা হয়েছিল। কিছু দিন যেতে না যেতেই এত লক্ষ টাকা দিয়ে তৈরি সেতু কীভাবে ভেঙে গেল, তা নিয়ে তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন বাঘমুণ্ডির তৃণমূল বিধায়ক সুশান্ত মাহাত। মঙ্গলবার বাঘমুণ্ডির সুইসা গ্রাম পঞ্চায়েতের শালডোবরার ওই ভাঙা সেতু পরিদর্শনে যান বিধায়ক। অল্প দিনের মধ্যেই ওই সেতু ভেঙে যাওয়ায় তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করেন। পাশাপাশি দ্রুত ওই সেতু সংস্কার এবং এলাকার বাসিন্দাদের যাতায়াতের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা করার আশ্বাস দেন বিধায়ক।
বাঘমুণ্ডি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কার্তিক চালক বলেন, গ্রামবাসীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়েছি। ওই কাজে প্রযুক্তিগত ঠিক কী ঘাটতি ছিল, তা ইঞ্জিনিয়ারই ভালো বলতে পারবেন। আমরাও বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।
প্রসঙ্গত, গত ১৭ জুন সুইসা এলাকার শালডোবরা সেতুর একাংশ জলের তোড়ে ভেঙে যায়। সুইসা বাজার, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, স্টেশন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গার সঙ্গে প্রায় আটটি গ্রামের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র এক মাস আগেই ওই সেতু তৈরির কাজ শেষ হয়েছিল। তারপর কীভাবে সামান্য জলের তোড়েই তা ভেঙে গেল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
স্থানীয় ও পঞ্চায়েত সমিতি সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহল অ্যাকশন প্ল্যান প্রকল্পে ২০২০-’২১ অর্থবর্ষে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে প্রায় ৩৮ লক্ষ টাকা খরচে সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। চলতি বছরের ১৫ মে তার কাজ শেষ হয়। কাজ শেষের মাত্র এক মাস দু’দিনের মাথাতেই ওই সেতুর একাংশ ভেঙে পড়ার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দারাও ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, নিম্নমানের কাজ হওয়ায় সেতুর একাংশ ভেঙে পড়েছে। প্রায় ৮টি গ্রামের সব্জি চাষি থেকে সাধারণ মানুষ এতে সমস্যায় পড়েছেন। শালডোবরা গ্রামের বাসিন্দা ব্যাসদেব গোপ বলেন, নিম্নমানের কাজ হয়েছে। তদন্তের পাশাপাশি দ্রুত সেতুটি সংস্কারও প্রয়োজন।
শালডোবরার ওই সেতু পরিদর্শনে যান বাঘমুণ্ডির বিধায়ক সুশান্ত মাহাত। এছাড়াও পুরুলিয়া জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ নমিতা সিং মুড়া, বাঘমুণ্ডির বিডিও উপস্থিত ছিলেন। সুশান্তবাবু বলেন, ওই সেতু ভেঙে যাওয়ায় কয়েক হাজার মানুষ যাতায়াতে সমস্যায় পড়েছেন। নতুন তৈরি ওই সেতু কী করে এত তাড়াতাড়ি ভেঙে পড়ল, সেই বিষয়ে জেলা প্রশাসনকে লিখিত অভিযোগও করব। যথাযথ তদন্ত হওয়া প্রয়োজন। গ্রামবাসীরা নিম্নমানের কাজের অভিযোগ করেছেন। তা জেলাপ্রশাসনকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে। দ্রুত গ্রামবাসীদের সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। বাঘমুণ্ডির বিডিও সেবরাজ ঘোষ বলেন, ওই সেতু পরিদর্শন করা হয়েছে। তা নির্মীয়মাণ অবস্থায় ছিল। এক মাস আগে কাজ শেষ হলেও এখনও ওই সেতু ঠিকাদার সংস্থার কাছ থেকে হস্তান্তর নেওয়া হয়নি।