উত্তর দিনাজপুরের ইসলামপুরে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে ২০০ নেতা-কর্মী
বিজেপি (BJP) ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে (TMC) যোগদান করলেন দুই শতাধিক বিজেপি নেতা, কর্মী ও সমর্থক। উত্তর দিনাজপুর (North Dinajpur) জেলার ইসলামপুর (Islampur) ব্লকের মাটিকুন্ডা ২ গ্রামপঞ্চায়েতের বিজেপি কার্যকর্তা সহ দুই শতাধিক বিজেপি কর্মী রবিবার যোগদান করলেন তৃণমূল কংগ্রেসে।
রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগদানের কার্যত হিড়িক পড়ে গিয়েছিল। কিন্তু বিধানসভা ভোটে বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে তৃতীয়বারের ক্ষমতায় প্রত্যাবর্তন ঘটেছে তৃণমূলের। বিজেপির ২০০-র বেশি আসন নিয়ে ক্ষমতা দখলের স্বপ্ন ভেস্তে গিয়েছে। আর ভোটের পরই শুরু হয়েছে উল্টো স্রোত। বিজেপি থেকে তৃণমূলে প্রত্যেকদিনই রাজ্যের কোথাও না কোথাও তৃণমূলে যোগদানের খবর আসছে। উত্তরবঙ্গে বিজেপি তুলনামূলকভাবে ভালো ফল করলেও সেখানেও স্বস্তিতে নেই তারা। উত্তরবঙ্গেও গেরুয়া শিবির ছেড়ে ঘাসফুল শিবিরে যোগদানের ঘটনা ঘটছে।
এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়ালের ইসলামপুরের বাড়িতে বিজেপি থেকে তৃণমূলে যোগদান কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মাটিকুন্ডা ২ গ্রামপঞ্চায়েতের বিজেপি নেতা কর্মীদের ঘাসফুলের পতাকা তুলে দেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল। তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানকারী বিজেপি পঞ্চায়েত সদস্য জানিয়েছেন, বিজেপি এখন শুধু ধর্ম আর জাতপাতের রাজনীতি করছে। অপরদিকে তৃণমূল কংগ্রেসের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় রাজ্যের মানুষের উন্নয়ন করে চলেছেন। দলমত নির্বিশেষে গ্রামগঞ্জের সকল মানুষ মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়নের সুফল পাচ্ছেন। তাই মমতা বন্দোপাধ্যায়ের উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে শামিল হতেই তাঁরা বিজেপি ছেড়ে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছি।
জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, বিজেপি নেতৃত্ব সহ এদিন মাটিকুন্ডা গ্রামপঞ্চায়েতের ২০০ জন বিজেপি নেতা কর্মী তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করেছেন। এখন থেকে এরাও আমাদের তৃণমূল কংগ্রেস পরিবারের সদস্য। একসাথে সকলে মিলে রাজ্যে উন্নয়নের জন্য কাজ করব। অন্যদিকে, স্থানীয় বিজেপি নেতার দাবি ভয় দেখিয়ে তাদের কর্মী-সমর্থকদের দলে টানা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন আলিপুরদুয়ার জেলা বিজেপির সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। সুখেন্দুশেখর রায়, মুকুল রায় ও ব্রাত্য বসুর উপস্থিতিতে তিনি তৃণমূলের পতাকা হাতে তুলে নিয়েছিলেন। আলিপুরদুয়ারে ভাল ফলের পরেও গেরুয়া শিবিরে ভাঙন ধরে। গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা সহ মোট আট জন তৃণমূলে যোগ দেন। পরে গঙ্গাপ্রসাদবাবু বলেন, ভোটের আগে থেকেই এর পটভূমিকা তৈরি হয়েছিল। যখন বিজেপির জেলা নেতৃত্বকে তোয়াক্কা না করে জেলা থেকে সরাসরি মানুষকে কলকাতায় নিয়ে এসে যোগদান করিয়েছেন। দিল্লি নিয়ে গিয়ে যোগদান করিয়েছেন। জেলা নেতৃত্বকে জানানোর যোগ্যও মনে করেনি। তখন থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়েছিল। আমি তার প্রতিবাদও করেছিলাম। কিন্তু, ভোটের সময় আমি দল ছাড়িনি। সেই সময় দল ছাড়লে আমাকে ‘গদ্দার’ বলা হত। আমি ফল করে দেখিয়েছি। পাঁচে পাঁচ দলকে দিয়েছি। রেজাল্ট দেওয়ার পরে আমার মন ভেঙে ছিল। তাই আজ আমি এই জায়গায়।