ভুয়ো টিকা: ষড়যন্ত্রের আভাস? ১০ সদস্যের এসআইটি গঠন কলকাতা পুলিশের
ভুয়ো করোনাভাইরাস টিকাকাণ্ডের আড়ালে কি বড় কোনও ষড়যন্ত্র আছে? তা খতিয়ে দেখতে বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট) গঠন করল কলকাতা পুলিশ। সেই দলে ব্যাঙ্ক জালিয়াতি, প্রতারণা দমন-সহ লালবাজারের একাধিক বিভাগের ১০ জন আধিকারিক আছেন।
কসবা ভুয়ো টিকাকরণ ক্যাম্পের পর ভুয়ো আইএএস অফিসার দেবাঞ্জন দেবের কীর্তি ফাঁস হয়েছে। গত বুধবার গ্রেফতার করা হয় ভুয়ো টিকাকরণ ক্যাম্পের মূল পাণ্ডা দেবাঞ্জনকে। সূত্রের খবর, দেবাঞ্জনকে জেরার পর একাধিক তথ্য সামনে এসেছে। ভুয়ো টিকা প্রদানের পাশাপাশি তাঁর বিরুদ্ধে কলকাতা পুরনিগমের নামে ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, আর্থিক প্রতারণার বিভিন্ন অভিযোগও উঠেছে। একটি অংশের দাবি, পুরনিগমের জমিতে কাজের বরাত পাইয়ে দেওয়ার টোপ দিয়ে এক নির্মাণ সংস্থার থেকে বড় অঙ্কের টাকা তুলেছেন বলেও অভিযোগ। সেইসঙ্গে নিজের ব্যক্তিগত রক্ষী রেখেছিলেন। ছিল বাতি লাগানো গাড়িও। পুলিশ সূত্রে খবর, দেবাঞ্জনের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ উঠেছে, তা বিস্তারিতভাবে খতিয়ে দেখা হবে। ভুয়ো টিকা কেনা, বাজার থেকে টাকা তোলার-সহ যাবতীয় বিষয়ের তদন্ত করে দেখবে সিট।
তারইমধ্যে তৃণমূলের একাধিক শীর্ষনেতার সঙ্গে দেবাঞ্জনের ছবি সামনে এসেছে। কলকাতা পুরনিগমের অনুষ্ঠানও তাঁকে দেখা গিয়েছে। তাতে রীতিমতো অস্বস্তিতে পড়েছে শাসকদল। তা নিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছে বিজেপি, সিপিআইএমের মতো বিরোধী দল। গেরুয়া শিবিরের তরফে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানানো হয়। তারইমধ্যে করোনাভাইরাস টিকাকাণ্ডে সিবিআই তদন্তের আর্জি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয়েছে। মামলাকারী আইনজীবী সন্দীপন দাসের দাবি, ভুয়ো টিকাকাণ্ডে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের একাংশ জড়িত আছে। রাজ্য পুলিশ সত্য উদঘাটন করতে পারবে না। তাই কেন্দ্রীয় সংস্থাকে তদন্তভার দেওয়ার আর্জি জানানো হয়েছে।
পাশাপাশি সেই ক্যাম্প থেকে টিকা দেওয়া হচ্ছিল, তা নিয়েও আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। সেখান থেকে ‘টিকা’ নিয়েছিলেন খোদ যাদবপুরের তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ তথা অভিনেত্রী মিমি চক্রবর্তী। প্রাথমিকভাবে কলকাতা পুরনিগমের তরফে জানানো হয়েছে, কোভিশিল্ড দাবি করে ওই ক্যাম্পে যে ‘টিকা’ দেওয়া হচ্ছিল, তা আদতে সেরাম ইনস্টিটিউটের করোনা টিকা নয়। বরং সম্ভবত কোনও অ্যান্টিবায়োটিকের মিশ্রণ হবে। চূড়ান্ত রিপোর্ট হাতে পাওয়ার বিষয়টি নিয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে। আপাতত যাঁরা ওই ভুয়ো ক্যাম্প থেকে টিকা নিয়েছিলেন, তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। কয়েকজনের গায়ে ফুসকুড়ির মতো বেরিয়েছে। বাকিরা মোটের উপর সুস্থ আছেন।