কেন্দ্রের উদাসীনতার জের, চটশিল্পে ঘনাচ্ছে সঙ্কট
রাজ্যের চটশিল্প (Jute Industry) সঙ্কটের মধ্যে দিয়ে চলেছে। কাঁচাপাটের অভাবের কারণে এই শিল্প গত এক বছর ধরে সঙ্কটের মুখে। কিন্তু আগামী পাট-বর্ষে কাঁচাপাটের অভাবের সমস্যা কেটে যাওয়ার গ্যারান্টি মিললেও এই শিল্পের জন্য কি আরও বড় আঘাত আসছে? গত বছর সরবরাহে ঘাটতি থাকার যুক্তি দেখিয়ে বিভিন্ন রাজ্য কি চটের বস্তার বরাতে কাটছাঁট করবে? নয়া সিদ্ধান্তের পিছনে বাংলাকে বঞ্চিত করার ‘গোপন অ্যাজেন্ডা’ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মোদি সরকারের কাছে সিন্থেটিক লবির তদ্বিরের প্রেক্ষিতে এই প্রশ্ন মাথাচাড়া দিয়েছে। এই অবস্থায় সিঁদুরে মেঘ দেখে রাজ্যের পাটশিল্পকে বাঁচাতে চটকল মালিকদের সংগঠন ভরসা রেখেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) উপর। এই মুহূর্তে মোদি সরকারের যাবতীয় ‘অন্যায়’ পদক্ষেপের বিরুদ্ধে সবচেয়ে সরব মুখ্যমন্ত্রীকেই ত্রাতা বলে মনে করছে তারা।
কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রক সূত্রের খবর, আগামী ৩০ তারিখ এই সব প্রশ্নের সমাধান করতে পাটশিল্প সংক্রান্ত স্থায়ী পরামর্শদাতা কমিটির ভার্চুয়াল বৈঠক হবে। সেই বৈঠকের পরিপ্রেক্ষিতেই তৈরি হয়েছে উৎকণ্ঠা। মন্ত্রকের সচিব উপেন্দ্র সিং কমিটির প্রধান হিসেবে ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করবেন। বাংলা সহ পাট উৎপাদনকারী ১২টি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এই বৈঠকে ডাকা হয়েছে। কেন্দ্রীয় খাদ্যমন্ত্রকের আধিকারিক ছাড়াও চটশিল্প ও সিন্থেটিক ব্যাগ উৎপাদনকারীদের সংগঠনের কর্তারাও তাতে উপস্থিত থাকবেন। সেই বৈঠকেই ঠিক হবে, আগামী পাট-বর্ষ (জুন-জুলাই) মাসে বিভিন্ন রাজ্যে ধান, চাল, গম, চিনি, ডাল জাতীয় খাদ্যশস্য বস্তাবন্দি করার জন্য কত চটের ব্যাগ আর কত সিন্থেটিক ব্যাগের বরাত দেওয়া হবে। নিয়ম অনুযায়ী তাদের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটির কাছে। তারপরই আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করা হবে।
সূত্রের খবর, গত বছর ধান-গম বস্তাবন্দি করার জন্য ১০০ শতাংশ চটের ব্যাগ ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল পরামর্শদাতা কমিটি। চিনির জন্য ২০ শতাংশ চটের ব্যাগের ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। এবার এই বৈঠকের প্রাক্কালে কলকাতায় মন্ত্রকের অধীনে থাকা জুট কমিশনারের দপ্তর থেকেও নোট পাঠানো হয়েছে। সেই নোটে ধান-গমের জন্য এবার ৯০ শতাংশ চটের বস্তা ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। তবে চটশিল্পের সঙ্গে যুক্ত এক আধিকারিক জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই সিন্থেটিক লবি তাদের বরাত বৃদ্ধির জন্য লিখিত আবেদন করেছে। এনিয়ে ‘রাজনৈতিক চাপ’ও যে একেবারে নেই, তাও নয়। ভোটে বিজেপি’র পরাজয়ের পর বাংলার চটশিল্পের প্রতি বঞ্চনার আশঙ্কা মাথাচাড়া দিয়েছে। এই লড়াইয়ে নিঃসন্দেহে মমতাকেই কাণ্ডারী হিসেবে সামনে আনতে চাইছেন চটকল মালিকরা।