মোদী-যোগী ঠান্ডা লড়াইয়ে চাপে গেরুয়া শিবির, ইউপিতে রামেই ভরসা বিজেপির
উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা ভোট আগামী বছর। তার আগেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী (Narendra Modi) ও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের (Yogi Adityanath) মধ্যে ক্রমবর্ধমান দূরত্ব নিয়ে আলোড়ন শুরু হয়েছে বিজেপিতে। গোটা গেরুয়া শিবিরকে চাপে ফেলেছে দু’জনের ঠান্ডা লড়াই। এই পরিস্থিতিতে উত্তরপ্রদেশে ভোট বৈতরণী পেরোতে মোদীর শেষ ভরসা সেই রামমন্দির এবং অযোধ্যা। তাই এবার নব অযোধ্যা ও রামমন্দির নির্মাণের কৃতিত্ব নিয়েও গোপন প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেল প্রধানমন্ত্রী এবং মুখ্যমন্ত্রীর মধ্যে। শনিবার অযোধ্যা ডেভেলপমেন্ট প্ল্যানের বৈঠকে ওই শহরের উন্নয়ন নিয়ে একঝাঁক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথও এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
সেখানে মোদী বলেন, ‘শ্রীরামচন্দ্রের প্রদর্শিত পথে অযোধ্যাকে নবরূপে নির্মাণের কাজে সকল স্তরের মানুষকে কাছে টানতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকার অযোধ্যা উন্নয়ন পরিকল্পনাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে সবরকম সহায়তা করছে।’ অযোধ্যা নির্মাণে যুব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বানও জানান তিনি। তাঁর কথায়, ‘অযোধ্যাকে কীভাবে ভারতের সাংস্কৃতিক প্রতীকে পরিণত করা সম্ভব, সেটা সুনিশ্চিত করা হবে। এমন পদক্ষেপ নিতে হবে, যা গোটা দেশের মানুষের কাছে গ্রহণযোগ্য হয় এবং অযোধ্যা হয়ে উঠতে পারে একটি মিলনকেন্দ্র। ভবিষ্যতের অযোধ্যার পরিকাঠামো এমনভাবেই গড়ে তোলা হবে, যাতে ভারতীয় ঐতিহ্য ও সেরা উন্নয়নের একটি মেলবন্ধনে পর্যবসিত হয় এই শহর।’ এর আগে এদিন আলোচনার শুরুতে অযোধ্যাকে নবরূপে গড়ে তোলার পরিকল্পনার একটি প্রেজেন্টেশন দেন যোগী। ঘোষণা করেন, অযোধ্যায় গড়ে তোলা হবে নতুন হাইওয়ে, রেলস্টেশন, সম্পূর্ণ নতুন একটি আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট এবং আরও অত্যাধুনিক পরিকাঠামো।
একমাসের মধ্যে যোগী-মোদীর এটি দ্বিতীয় সাক্ষাৎ। অযোধ্যা সংক্রান্ত এই বৈঠক এমন সময়ে আয়োজিত হয়েছে যখন রামমন্দিরের জমি ক্রয় নিয়ে একঝাঁক অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে রামমন্দির ট্রাস্টের বিরুদ্ধে। যদিও ট্রাস্টের পক্ষ থেকে তা অস্বীকার করা হয়েছে। চলতি মাসের গোড়ার দিকে দিল্লি এসে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন যোগী আদিত্যনাথ। তখন থেকেই দুই নেতার মধ্যে দূরত্ব বৃদ্ধির জল্পনা শুরু হয়েছিল। ওই বৈঠকের পরেই বিজেপি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব দুই প্রতিনিধিকে পাঠায় লখনউয়ে।
কোভিড মোকাবিলায় যোগী সরকারের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার অভিযোগই বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির সবথেকে বড় উদ্বেগ। সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধী সমাজবাদী পার্টির তুলনায় রাজ্যের শাসকদল অনেকটাই পিছিয়ে পড়ায় সেই চিন্তা আরও বেড়েছে। সেই কারণে উত্তরপ্রদেশ জয়ে মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়েছে বিজেপি। জল্পনা বেড়েছে ইস্যু নিয়েও। শনিবারের বৈঠকের পর মনে করা হচ্ছে রামমন্দির ও অযোধ্যাকেই অন্যতম প্রচারের অভিমুখ করা হবে। তাই মোদী আজ বলেছেন, এমন অযোধ্যা তৈরি করা হবে যে, আগামী দিনে প্রতিটি ভারতবাসীর ইচ্ছা হবে জীবদ্দশায় একবার অন্তত অযোধ্যা দর্শন করতে।