কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে এবার জিনোম সিকোয়েন্স স্টাডি

June 28, 2021 | 2 min read

বিষ নামাতে ওঝার ডাক। কিন্তু সাপের জাতটাই যদি না চেনা যায়? তাহলে বিপদ থেকেই যায়। ঠিক তেমনই করোনার (COVID 19) বিভিন্ন অবতারকে আগে চিহ্নিত করতে না পারলে রোগের দাওয়াই ঠিক করা যায় না। রোগীকে সুস্থ করাও কঠিন হয়ে পড়ে। এই কাজটাকেই বলা হয় জিনোম সিকোয়েন্স স্টাডি (Genome Sequence Study)। অর্থাৎ ভাইরাসের জিনের বিশ্লেষণ। দেশের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে প্রথম একক উদ্যোগে এই কাজ করতে চলেছে। সৌজন্যে কলকাতার স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিন (School Of Tropical Medicine)।

থার্ড ওয়েভকে (Third Wave) দ্রুত নির্মূল করতে কয়েক মাসের মধ্যে ট্রপিক্যালে শুরু হবে ভাইরাসের চরিত্র বিশ্লেষণ করে রোগ নির্ণয়ের কাজ। স্বাস্থ্য দফতর সুত্রে খবর, স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনে ভাইরাস সেল সিকোয়েন্স যন্ত্র রয়েছে। রয়েছে অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্র। যদিও এইসব যন্ত্র তেমনভাবে কাজে লাগানো হয় না। রয়েছেন বিশিষ্ট গবেষকরা । মূলত, এই বিষয়গুলো সামনে রেখে গত সপ্তাহে স্বাস্থ্য ভবনে প্রস্তাব পাঠিয়েছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তীর কথায়,“দেশে ১০টি জিনোম সিকোয়েন্স স্টাডি বা পরীক্ষাকেন্দ্র আছে। এর মধ্যে রয়েছে পশিমবঙ্গের কল্যাণী (Kalyani)। কিন্তু সবগুলি কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণে রাজ্যের নিজস্ব সিকোয়েন্স সেন্টার থাকলে করোনা আবহে চিকিৎসা ও সুবিধা হবে ।” স্বাস্থ্যমন্ত্রকের নির্দেশে গত মার্চ থেকে ভাইরাসের জিনের চরিত্র পরীক্ষার জন্য ১০টি জিনোম স্টাডি সেন্টারকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। বিশেষত, ইউকে, আফ্রিকা বা অস্ট্রেলিয়া থেকে যাঁরা বিমানে দেশে এসেছেন, তাঁরা কোভিড পজিটিভ হলে সেই ভাইরাসের চরিত্র বিশ্লেষণ অত্যন্ত জরুরি হয়ে পড়ে ভাইরোলজিস্ট ও মাইক্রোবায়োলজিস্টদের কাছে।

কারণ, নিজেকে টিকিয়ে রাখতে করোনা ভাইরাস অত্যন্ত দ্রুত চরিত্র বদল করে। স্কুল অফ ট্রপিক্যাল মেডিসিনের এক শীর্ষকর্তার কথায়, মাত্র দেড় বছরের মধ্যে ভৌগোলিক ও সময়ের ব্যব্ধানে করোনার জিনের চরিত্র বহুবার বদল হয়েছে। যতবার বদল হয়েছে ততই শক্তিশালী হয়েছে করোনা । ফলে ভাইরাসকে বাগে আনতে, রোগীকে সুস্থ করতে ওষুধের বদল করতে হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী কল্যাণীর জিনোম সিকোয়েন্স সেন্টার থেকে রিপোর্ট পেতে অন্তত দু’সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয়। দ্বিতীয়ত একসঙ্গে অনেক রোগীর লালারসের আরএনএ (রাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) না পেলে কাজ শুরু হয় না। এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হল, যেহেতু কেন্দ্রীয় সংস্থা, তাই সব রিপোর্ট দিল্লি থেকে আনতে হয়। এইসব বিষয়কে মাথায় রেখেই স্বাস্থ্য দফতর ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রস্তাবকে গুরুত্ব দিয়ে পর্যালোচনা করছে।

স্বাস্থ্য দফতরের তথ্য অনুযায়ী করোনা ভাইরাসের একটি জিনোম সিকোয়েন্স পরীক্ষা করতে প্রায় ৩৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ফি সপ্তাহে অন্তত ৯০-১০০টি তথ্য পাঠানো হয় কল্যাণীর ল্যাবরেটরিতে । রাজ্যের নিজস্ব গবেষণাকেন্দ্র থাকলে এই খরচ কমবে। দ্বিতীয়ত, শুধুমাত্র করোনা জব্দ করতেই নয়, ক্যান্সার রোগীর জিনের বিশ্লেষণ করতেও কার্যকর এই স্টাডি। এমনকী ডেঙ্গুর জিনোম স্টাডি করতেও কার্যকর এই ধরনের ল্যাবরেটরি তাই দফতরকে আরও স্বয়ংসম্পূর্ণ করতে এই পদক্ষেপ স্বাস্থ্য দফতরের।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Genome sequence study, #calcutta school of tropical study

আরো দেখুন