কাঁথি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে কোটি টাকার দুর্নীতির অভিযোগ, নাম উঠছে শুভেন্দুর

কাঁথি কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের বিরুদ্ধে কাঁথি থানায় কোটি টাকার অনিয়মের লিখিত অভিযোগ দায়ের হল। ওই ব্যাঙ্কের শেয়ারহোল্ডার মেম্বার রীনা দাস এনিয়ে গত ১৪জুন থানায় অভিযোগ করেন। নোটবন্দির সময় আর্থিক কারচুপি হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এমনকী ব্যাঙ্ক পরিচালনার সঙ্গে কতিপয় কর্মকর্তার ঘনিষ্ঠ লোকজনকে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ঋণ পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। তদন্ত হলেই সবটা বেরিয়ে আসবে বলে অভিযোগকারিণী জানিয়েছেন। বিভিন্ন জেলায় ওই ব্যাঙ্কের ১২টি শাখা আছে। ইতিমধ্যে সিআইডির ফিনান্স সেল কাঁথির ওই ব্যাঙ্কের নথিপত্র সংগ্রহ করতে শুরু করেছে।
মৎস্যমন্ত্রী অখিল গিরি বলেন, ওই ব্যাঙ্ক ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অনেক তথ্য গোপন করেছে। ব্যাঙ্কে বোর্ড গঠনের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতি হলে কখনও ব্যাঙ্ক সঠিকভাবে পরিচালনা করা যায় না। সমবায় আইনে পরপর দু’টি টার্মে চেয়ারম্যান থাকা যায়। কিন্তু, শুভেন্দু অধিকারী সেই নিয়ম ভেঙে সরকারি সুযোগের অপব্যবহার করে একটানা আছেন।
গত ১৫জুন একাধিক অনিয়মের অভিযোগে ওই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্কের সেক্রেটারির কাছে ডেপুটেশন দেন ব্যাঙ্ক প্রতিনিধি এবং পরিচালন কমিটির কয়েকজন সদস্য। কোনও টেন্ডার ছাড়াই ব্যাঙ্কের প্লাটিনাম জুবিলি অনুষ্ঠানে কোটি টাকা খরচ হয়েছে বলে থানায় অভিযোগ দায়ের হয়েছে। চেয়ারম্যানের ব্যক্তিগত ইমেজের কথা ভেবে লভ্যাংশ থেকে দেদার অর্থ সামাজিক খাতে ব্যয় করা হয়েছে। বাছাই করা ঘনিষ্ঠ কর্মীদের অবসরের পরও পুনর্নিয়োগ করা হয়েছে। সবচেয়ে মারাত্মক অভিযোগ হল, নোটবন্দির সময় অনেক অবৈধ লেনদেন হয়েছে। নকল পরিচয়পত্র দিয়ে বেশকিছু অ্যাকাউন্ট খুলে তাতে লেনদেন হয়েছে বলে অভিযোগ। ওই ব্যাঙ্কের হলদিয়ার একটি শাখা থেকেও প্রায় কোটি টাকা অবৈধ লেনদেন হয়েছে বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।
ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে বিস্তর অনিয়মের বেশ কয়েকটি তথ্য লিখিত অভিযোগে আনা হয়েছে। ঘনিষ্ঠদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে সামান্য সিকিউরিটি ডিপোজিট কিংবা কখনও কোনও ডিপোজিট ছাড়াই দেওয়া হয়েছে বলে মারাত্মক অভিযোগ করা হয়েছে। সাধারণ গ্রাহকদের বঞ্চিত করে বিশেষ কারণে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী, উদ্যোগপতিদের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। এভাবেও সরাসরি আর্থিক সুবিধা আদায় করা হয়েছে। গত কয়েকদিন ধরে কাঁথির ওই কো-অপারেটিভ ব্যাঙ্ক এখন আলোচনার কেন্দ্রে। থানায় অভিযোগ দায়ের করার পাশাপাশি রাজ্যের অ্যান্টি কোরাপশন ব্রাঞ্চ এবং সিআইডির এডিজি’র কাছেও অভিযোগ পাঠানো হয়েছে। গোটা ঘটনায় কাঁথিজুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।