ধনখড়ের পদত্যাগ দাবি জৈন হাওয়ালা কেলেঙ্কারি প্রকাশ্যে আনা সাংবাদিকের
জৈন হাওয়ালা কাণ্ড নিয়ে উত্তাল রাজ্য রাজনীতি। গতকাল রাজ্যপালকে দুর্নীতিগ্রস্ত তকমা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন জগদীপ ধনখড়ের নাম ছিল এই মামলার চার্জশিটে। আর তারপরই মমতার প্রশংসা করে ফেসবুকে পোস্ট করলেন সাংবাদিক বিনীত নারায়ণ। জৈন হাওয়ালা মামলার বিষয়টি উত্থাপন করার জন্য ধন্যবাদ জানালেন তিনি। এই সাংবাদিকই হাওয়ালা কাণ্ডের খবর প্রকাশ্যে এনেছিলেন।
বিনীতের দাবি, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের সাথে জড়িত এই মামলার বিষয়ে কোনও রাজনৈতিক নেতা বা সংগঠন কখনও কথা বলতে রাজি হননি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম এতদিন পরে বিষয়টি উল্লেখ করলেন। তাই একটি ফেসবুক পোস্ট করে সাংবাদিক মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এবং তার সাথেই জগদীপ ধনখড়ের পদত্যাগের দাবি করেছেন তিনি।
কী এই ‘জৈন হাওয়ালা’ মামলা?
১৯৯১ সালে কাশ্মীর থেকে এক হিজবুল জঙ্গিকে ধরা হয়েছিল। আশফাক হুসেন লোন নামক সেই জঙ্গিকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায় যে হাওয়ালার মাধ্যমেই টাকা আসত ওই জঙ্গি সংগঠনের হাতে। আশফাক জানায়, সেই টাকা আসত সুরেন্দ্র কুমার জৈন নামক এক শিল্পপতির কাছ থেকে। এই হাওয়ালায় জৈনের আত্মীয়রাও জড়িত ছিল বলে জানা যায়।
আশফাকের সেই বয়ানের ভিত্তিতেই তল্লাশি চালান গোয়েন্দারা। খোঁজ মেলে জৈনের দুটি ডায়েরি আর দুটি নোটবুক। কবে, কাকে, কত টাকা দিয়েছেন, তা তাতে লিখে রেখেছিলেন জৈন। আর সেই তালিকা ছিল বিস্ফোরক। তদন্তে জানা যায়, ৪২ জন হেভিওয়েট রাজনীতিবিদের নাম রয়েছে সেই ডায়েরিতে। ১৯৮৮ থেকে ১৯৯১ পর্যন্ত একাধিক নেতাকে মোট ৫২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছিল। যে নেতাদের টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন বাংলার বর্তমান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
গতকাল ৩০ বছর পর সেই মামলার কথাই তুলে আনেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। জৈন হাওয়ালা মামলার চার্জশিটে রাজ্যপালের নাম থাকার কথা উল্লেখ করেন। যদিও রাজ্যপাল সে কথা অস্বীকার করেছেন। তৃণমূলের পাল্টা, চার্জশিটে নাম নেই বলেছেন রাজ্যপাল, জড়িত নন তা একবারও বলেননি। এখন এই বিষয় নিয়েই উত্তাল রাজ্য রাজনীতি।