যশে ক্ষতিপূরণ – প্রায় অর্ধেক আবেদনই বাতিল
যা আশঙ্কা ছিল, তাই হল। যশ বিধ্বস্ত পাঁচ জেলায় ক্ষতিপূরণ চেয়ে ‘দুয়ারে ত্রাণ’ (Duare Traan) প্রকল্পে যা আবেদন জমা পড়েছে, তার প্রায় অর্ধেকই বাতিল করে দিল প্রশাসন। জানা গিয়েছে, প্রায় ৫০ শতাংশ আবেদনই ভুয়ো। গত এক মাস ধরে আবেদনপত্র জমা নেওয়া হয়েছে। তারপর তা পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে, ৩ লক্ষ ৮১ হাজার আবেদনকারীর মধ্যে প্রকৃতঅর্থে ক্ষতিগ্রস্তের সংখ্যা ১ লক্ষ ৯০ হাজারের কিছু বেশি। সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, আজ, বৃহস্পতিবার থেকে উপভোক্তারা ক্ষতিপূরণের (Compensation) টাকা পাবেন।
‘দুয়ারে ত্রাণ’ নিয়ে যে রিপোর্ট তৈরি করা হয়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে, সব থেকে বেশি আবেদন জমা পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায়। তাই সংখ্যার বিচারে বাতিলের সংখ্যাও এই জেলায় বেশি। এখনও পর্যন্ত যা হিসেব, তাতে দক্ষিণ ২৪ পরগনায় এক লক্ষের মতো দুর্গত মানুষ এই ক্ষতিপূরণ পাবেন। অন্যদিকে, যশের তাণ্ডবে লণ্ডভণ্ড পূর্ব মেদিনীপুরে ১ লক্ষ ১৭ হাজারের কিছু বেশি আবেদন জমা পড়েছিল। আর তার মধ্যে অধিকাংশই বাতিল করা হয়েছে। তবে সংখ্যার বিচারে কম বাতিল হয়েছে উত্তর ২৪ পরগনায়। বরং নজর কেড়েছে পশ্চিম মেদিনীপুর। ওই জেলায় ভুল এবং ভুয়ো আবেদনের হার অবাক করার মতো। ব্লকভিত্তিক হিসেব অনুযায়ী, সংখ্যার নিরিখে সব থেকে কম বাতিল হয়েছে সন্দেশখালি ১ ও ২নং ব্লকে। দুটি মিলিয়ে প্রায় ২০ হাজারের মতো আবেদন জমা পড়েছিল। তার মধ্যে বাতিল হয়েছে মাত্র একটি। সন্দেশখালি ২নং ব্লকে একটিও আবেদন বাদ দেওয়া যায়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ব্লকগুলির মধ্যে সর্বাধিক আবেদন পড়েছে গোসাবায় (৩১ হাজারের কিছু বেশি)। এখানেও খুব সামান্য আবেদন বাতিল হয়েছে। সুন্দরবন লাগোয়া অন্যান্য ব্লকে অবশ্য বাতিলের হার বেশি। নামখানা, কাকদ্বীপ কিংবা কুলতলিতে অর্ধেকের বেশি আবেদন বাতিল করা হয়েছে। এদিকে, নন্দীগ্রাম ১নং ব্লকে বাতিলের হার ৯০ শতাংশের মতো। গতবার উম-পুনের সময়েও ভুয়ো আবেদনের সংখ্যা ছিল নজরকাড়া।
তবে এমনও কিছু ব্লক আছে, যেখানে ক্ষতিপূরণের আবেদন জমা পড়েছে কম। সেখানে বাতিলের হারও বেশ কম। যেমন পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা ব্লকে ৩৭৫টি আবেদন জমা পড়েছিল। সেখানে কোনও আবেদনই বাতিল হয়নি। সূত্রের খবর, এখনও পর্যন্ত ৯৮ শতাংশের মতো আবেদন পরীক্ষা করা হয়েছে। বাকি অংশ পরীক্ষার কাজ হয়ে গেলে বাতিল আবেদনের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই মনে করা হচ্ছে।