গত সাত বছরে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ৪০,০০০ নিয়োগ রাজ্যের
সিএমআইই’র পরিসংখ্যান বলছে, সদ্য শেষ হওয়া জুন মাসে ভারতে বেকারত্বের হার ৯.১৭ শতাংশ। আর সাত বছর আগে নরেন্দ্র মোদি যখন দিল্লির মসনদে বসেছিলেন, তখন দেশের বেকারত্ব ছিল ৫.৬১ শতাংশ। অথচ, গোটা বিধানসভা পর্বে তো বটেই, তার আগেও গেরুয়া শিবির লাগাতার প্রচার চালিয়ে গিয়েছে—বাংলায় নাকি সরকারি চাকরি নেই। এই অভিযোগের জবাব পরিসংখ্যানেই দিচ্ছে শুধু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাস্থ্যদপ্তর।
দপ্তরের কর্মী নিয়োগকারী সংস্থা ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের তথ্য জানাচ্ছে, শুধু সরকারি স্বাস্থ্যক্ষেত্রেই গত সাত বছরে নিয়োগ হয়েছেন ৪০ হাজার ডাক্তার-নার্স-স্বাস্থ্যকর্মী। আর কোনও চুক্তির ভিত্তিতে নয়, এই নিয়োগ সম্পূর্ণ সরকারি… চিকিৎসক-নার্সের দেশব্যাপী আকালের মধ্যেও। সবচেয়ে বড় কথা, এই ৪০ হাজার কর্মীর মধ্যে ২২ হাজারের বেশি রয়েছেন স্টাফ নার্স। শুধু তাই নয়, মেডিক্যাল অফিসার, স্পেশালিস্ট, শিক্ষক চিকিৎসক, আয়ুর্বেদিক চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক সহ বিভিন্ন শাখার প্রায় ১২ হাজার ডাক্তারও রয়েছেন এই তালিকায়। আছেন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, সহকারী সুপার, ড্রাগ ইনসপেক্টর, ফুড সেফটি অফিসার, মনোবিদ, পরিসংখ্যানবিদ, ফিজিওথেরাপিস্ট, রেডিয়েশন সেফটি অফিসাররা। দপ্তর সূত্রে খবর, এর মধ্যে বেশ কয়েকটি ক্যাডারে এক যুগ পর নিয়োগের ঘটনা ঘটেছে।
ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের চেয়ারম্যান ডঃ পি কে সুর বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী এই বোর্ড তৈরি করেছিলেন স্বাস্থ্যক্ষেত্রে নিয়োগে দীর্ঘসূত্রিতা কাটাতে। স্বচ্ছতার সঙ্গে দ্রুত নিয়োগ আমাদের প্রধান লক্ষ্য। বর্তমানে লকডাউন এবং করোনা পরিস্থিতির জন্য বেশ কিছু নিয়োগ আটকে রয়েছে। পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হলে এবং ট্রেন চালু হলে ফের প্রক্রিয়া চালু হয়ে যাবে।’
স্বাস্থ্যদপ্তর এবং এইচআরবি সূত্রের খবর, ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষ থেকে স্বাস্থ্যে নিয়োগের কাজ পুরোদমে শুরু হয়। সেবার নিয়োগ হন ৩ হাজার ৩১৬ জন। ২০১৫-১৬ অর্থবর্ষে ৫ হাজার ১১২ জন এবং ২০১৬-১৭’তে ৪ হাজার ৬৯ জনের নিয়োগ হয় স্বাস্থ্যদপ্তরের বিভিন্ন পদে।
গত সাত বছরে কর্মী-চিকিৎসক নিয়োগের এই প্রক্রিয়া লাগাতার চলেছে। এমনকী করোনা পর্বেও রাজ্য সরকার স্বাস্থ্যদপ্তরে নিয়োগ জারি রেখেছে। অর্থাৎ, ২০১৪ সাল থেকে মোট সংখ্যা গিয়ে দাঁড়িয়েছে ৩৯ হাজার ৯৫৭ জনে। তবে মহামারীর সংক্রমণে কিছুটা হলেও প্রক্রিয়া থমকেছে। কোভিড বিধির জন্য এই মুহূর্তে আটকে রয়েছে প্রায় সাড়ে ১০ হাজার ডাক্তার, নার্স, ফিজিওথেরাপিস্ট, ফার্মাসিস্ট, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট, ডেন্টাল টেকনিশিয়ান, সায়েন্টিফিক অফিসার নিয়োগ। ৮৫৩ জন ওয়ার্ড বয় নিয়োগের জন্য গত বছরই দু’লক্ষাধিক চাকরিপ্রার্থী আবেদন করেছিলেন। ১৬ হাজারের একটি মেধা তালিকাও তৈরি হয়েছিল। এমনকী ভাবা হয়েছিল, দিনে ৩০০ জন করে ইন্টারভিউতে ডাকা হবে। কিন্তু এক্ষেত্রেও বিধি বাম করোনা। তবে পরিস্থিতি একটু স্বাভাবিক হলেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় নিয়োগ ফের শুরু হয়ে যাবে। আশাবাদী এইচআরবি’র এক বড়কর্তা।