বিধানসভায় বিজেপির বিক্ষোভের অজুহাতে সংক্ষিপ্ত ভাষণ রাজ্যপালের
নির্বাচনে বড় জয়ের পরে বিধানসভায় প্রথম অধিবেশন শুরু হল আজ। বাজেট অধিবেশনের প্রথম দিনে নিয়ম মত ভাষণ দিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। কিন্তু রাজ্যপাল ভাষণ শুরু করতেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন বিজেপি বিধায়করা। আসন ছেড়ে ওয়েলে নেমে আসেন। থমকে যায় রাজ্যপালের ভাষণ। স্পিকার ও মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ফের শুরু হয় ভাষণ। কিন্তু তাও বেশিক্ষণ চলেনি। সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিয়ে বেরিয়ে যান রাজ্যপাল।
আজ রাজ্যপাল বিধানসভায় আসেন ঠিক ১টা ৫০ মিনিট নাগাদ। স্বাগত জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। তিন জনে একসঙ্গে বিধানসভা ভবন চত্বরে বাবা সাহেব আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করেন। সেই সময়ে মুখ্যমন্ত্রী আর রাজ্যপাল ছিলেন একেবারে পাশাপাশি। দু’জনকে কথা বলতেও দেখা যায়।
ধনখড় রাজ্যপাল হয়ে আসার পরে রাজ্য সরকারের সঙ্গে বারবার বিবাদ তৈরি হয়েছে নানা বিষয়ে। বিধানসভা নির্বাচনের পরে তা নতুন চেহারা নিয়েছে। তাই রাজনৈতিক মহলে কৌতূহল ছিল তিনি চিরাচরিত রীতি মানবেন কি? নিয়ম বলছে, রাজ্য মন্ত্রিসভা তথা শাসক দলের ঠিক করে দেওয়া ভাষণই পাঠ করেন রাজ্যপাল। রাজ্যের লিখে দেওয়া ভাষণ যে তাঁর মনঃপূত হয়নি তা আগেই জানিয়েছেন ধনখড়। এ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে তিনি কথাও বলতে চেয়েছিলেন। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী বুঝিয়ে দেন, মন্ত্রিসভার অনুমোদিত ভাষণই যে হেতু পাঠানো হয়েছে তাই পরে আর কিছু বদল করা যাবে না।
তাই, অনেকেই মনে করছেন আজ বিধানসভার অন্দরে রাজ্যপাল ও বিজেপির যৌথ কুনাট্য রচিত হল। বিক্ষোভ দেখিয়ে এক প্রকার ধনখড়ের সুবিধা করে দিলেন বিজেপি বিধায়করা। রাজ্য সরকারের তৈরি করা ভাষণ পড়তে হল না তাকে। একপ্রকার বলা যায়, শ্যাম-কুল দুই-ই অক্ষত থাকল।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক এক দিল্লির বিজেপি নেতা জানাচ্ছেন, ‘এটা পুরোটাই পূর্ব–পরিকল্পিত। যা অনেকেই ধরতে পারেননি। তবে রাজ্যপালের এক্তিয়ার আছে যে কোনও সময়ে বক্তৃতা থামিয়ে দিয়ে চলে যাওয়ার। তিনি সেটাই করেছেন। কারণ বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে তো আর ভাষণ দেওয়া যায় না। এই বিশৃঙ্খলার বিরুদ্ধে রাজ্যপাল পদক্ষেপ করেন কিনা সেটাই দেখার।’
এই গোটা পরিকল্পনাটি রচনা করা হলেও তা সত্যিই কেউ টের পাননি। সূত্রের খবর, বিজেপিকে এবার টিট ফর ট্যাট দিতে তৃণমূলও পরিকল্পনা ছকে ফেলেছেন। যে ফাঁদে পা দিতে চলেছেন বিজেপি বিধায়করা। আর বিধানসভার অন্দরে এই দাবা খেলায় সরগরম হয়ে উঠেছে রাজ্য–রাজনীতি।