কাটতে চলেছে শিক্ষক নিয়োগের জট ? নম্বর প্রকাশ করবে কমিশন
উচ্চ প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগে কি জট কাটতে চলেছে? শুক্রবার হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের নির্দেশে তেমনটাই আশা করছেন প্রার্থীরা। তিনি এদিন স্কুল সার্ভিস কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছেন, সাতদিনের মধ্যে ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়া প্রার্থীদের নম্বর বিভাজন প্রকাশ করতে হবে। আইনজীবীদের সূত্রে খবর, যাঁরা ইন্টারভিউয়ে ডাক পাননি, তাঁদেরও বাতিল করার কারণ জানাতে হবে। কমিশন এই নির্দেশ মেনে তা করতে সম্মত হয়েছে।
এদিনের মামলাটি হয়েছে অফলাইনে। উপস্থিত ছিলেন অ্যাডভোকেট জেনারেলও। একটি বিষয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে কমিশনের চেয়ারম্যান এবং শিক্ষাদপ্তরের প্রধান সচিবকে আদালতে তলব করেন বিচারপতি। তাঁরা গিয়ে তাঁদের মতামত ব্যক্ত করেন। তারপরেই আদালত এই নির্দেশ দিয়েছে। নির্দেশে বলা হয়েছে, অ্যাকাডেমিক স্কোরের ৫০ নম্বর এবং টেটের ৪০ নম্বরের মধ্যে কে কত পেয়েছেন, তা উল্লেখ করতে হবে।
মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, যাঁরা ডাক পাননি, তাঁদেরও বাদ পড়ার কারণ জানাতে বলেছেন বিচারপতি। সেটাও নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে জানাতে হবে। এদিন মামলাকারীদের পক্ষে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য আদালতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একটি সাংবাদিক বৈঠকের ভিডিও তুলে ধরেন। বুধবার নবান্নের সেই সাংবাদিক বৈঠকে মামলাকারীদের কটাক্ষ করেছিলেন মমতা। সেটা তুলে ধরে বিকাশবাবু বোঝাতে চান, তিনি আদালত অবমাননা করেছেন। তবে, সেটাকে গুরুত্ব দিতে চাননি বিচারপতি। এদিন বিচারপতি মৌসুমি ভট্টাচার্যের এজলাসেও কমিশনের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অন্য একটি মামলা ভিত্তি পায়নি।
তবে, পরীক্ষার্থীদের একাংশের আশঙ্কা, এই অল্প সময়ের মধ্যে কমিশন এত বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করতে পারবে কি না। ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়া প্রার্থীর সংখ্যা কম করে ২১ হাজার। আর আবেদন করেছিলেন ১ লক্ষ ২০ হাজারের উপর। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, সবার নম্বর বিভাজন প্রকাশ করতে হবে এবং বাদ পড়ার কারণ জানাতে হবে। যদিও কমিশন সূত্রে খবর, এবার সব কিছুই কম্পিউটার চালিত হওয়ায় কিছুটা হলেও এই কাজ সহজ হয়েছে। তবে, শেষ পর্যন্ত কী হয়, সেটাই এখন দেখার। কমিশন অবশ্য আশাবাদী, নম্বর বিভাজন প্রকাশ করলেই প্রার্থীরা বুঝে যাবেন, কোথাও কোনও অনিয়ম হয়নি। তাই কোনও ক্ষোভ থাকবে না। তাহলে, আগেই সেটা প্রকাশ করা হয়নি কেন? কমিশনের এক সূত্র জানিয়েছে, কোনও পরীক্ষাতেই এভাবে নম্বর প্রকাশের চল নেই। ইন্টারভিউ নিচ্ছেন যিনি, তিনি আগে থেকে নম্বর জেনে গেলে প্রভাবিত হতে পারেন। এসব ভেবেই নম্বর প্রকাশ করা হয়নি। সুপ্রতীক বেরা (নাম পরিবর্তিত) নামে এক মামলাকারীর উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ওই প্রার্থী গতবার অ্যাকাডেমিক স্কোরে ৩৮ পেয়েছিলেন। এবার পেয়েছেন ৩৬। গতবার কাগজে-কলমে নম্বর তোলা হয়েছিল। তা করতে গিয়ে গ্র্যাজুয়েশনে সেকেন্ড ক্লাস পাওয়া সত্ত্বেও তাঁকে দেওয়া হয়েছিল ১৮। যা আসলে ১৬ হওয়ার কথা। এবার তিনি ১৬-ই পেয়েছেন। তবে, ইন্টারভিউয়ে ডাক না পাওয়ায় মামলা করেছেন।