দূষণহীন দার্জিলিংএ কোভিড আবহেই পা রাখছেন পর্যটকরা
করোনা (COVID19) আবহেই পাহাড়ে বেড়াতে আসছেন পর্যটকেরা (Tourists) ! দূরপাল্লার ট্রেন চলাচল বন্ধ। সরকারী এবং বেসরকারী বাস পরিষেবাও সবে মাত্র চালু হল। আজ থেকে ৫০ শতাংশ যাত্রী নিয়ে বাস চলাচল করার নির্দেশ জারি করেছে নবান্ন। তার আগেই গুটিগুটি পায়ে চড়াই উতরাই পথ ধরে শৈলশহরে পৌঁছে গিয়েছেন পর্যটকেরা! একে কড়া বিধি নিষেধ, বন্ধ স্কুল, কলেজ সহ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অফিস কাছারিও বন্ধ। যদিও জুলাই থেকে নির্দিষ্ট হারে কর্মী কাজে যোগ দিতে পারবে। সমতলে হাসফাঁস করা গরম। আর তাই কিছুটা ছাড় মিলতেই দে ছুট পাহাড়!
মে মাস থেকে কার্যত পর্যটকশূণ্য গোটা পাহাড়। ম্যাল থেকে ক্যাভেণ্ডার্সের বারান্দা, শুধুই শূণ্যতায় ভরা। বন্ধ পদ্মজা নাইডু চিড়িয়াখানা থেকে টাইগার হিল! তাতে কী এসে যায়! বৃষ্টিভেজা পাহাড়ে ঘোরার মজাই যে আলাদা! কখনো কুয়াশার চাদরে মোড়া কাঞ্চনজঙ্ঘা, আবার কখনো সেই চাদর সরিয়ে দেখা দিচ্ছে তার রজতশুভ্র উজ্জ্বলতা, আবার কখনো বা মেঘের আনাগোনা। একেই পর্যটকহীন, চলছে না গাড়ি, কালো ধোঁয়া ছড়িয়ে ছুটছে না ‘খেলনা গাড়ি’ টয় ট্রেন, আর তাই দূষণের বালাই নেই!
পাহাড় এখন আরও উজ্জ্বল! আরও অপরূপা! নিজের সৌন্দর্য মেলে ধরেছে। সেই প্রাকৃতিক রূপ দেখতেই কিছু সংখ্যক পর্যটক বেড়িয়ে পড়েছেন। ঘোরার স্পটগুলোর দরজা বন্ধ। তাতে কি ঘরবন্দী রাখা যাবে ভ্রমনপিপাসুদের? অনেকেই হেঁটে চলেছেন ম্যালের পাশ দিয়ে। কিছুটা নীচে নেমে যাচ্ছেন। উপভোগ করছেন পাহাড়ের অপরূপ সৃষ্টিকে! চেনা ভিড়েঠাসা ম্যালে আড্ডা না হলেও মন খারাপ নয় কিংবা ঘোড়ার পিঠে ওঠা এবার নাই বা হল, স্যাঁতস্যাতে গরমের হাত থেকে কিছুটা হলেও মিলছে স্বস্তি! এবার না হয় ওঠা হল না প্রিয় টয় ট্রেনে, নাই বা দেখা গেল টাইগার হিলে গিয়ে সূর্যোদয়! আফসোস নেই তাতেও! শৈলশহরে পৌঁছতে পেরেই ওরা খুশী। আবহাওয়া ভালো হলে ম্যালের পাশের ভিউ পয়েন্ট থেকেই মিলছে যে ঘুমন্ত বুদ্ধর দর্শন!
কোভিড বিধি মেনেই সকলে এসেছেন বেড়াতে। এক্কেবারে নিরিবিলি পাহাড়ে ক’টা দিন কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করতে নারাজ! এতে কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন পর্যটন ব্যবসায়ীরা। ইতিমধ্যেই পর্যটন শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের টিকাকরণ শুরু হয়েছে। সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রায় শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। রাজ্য সরকারও কোভিড প্রোটোকল মেনে পর্যটনকে ছাড় দেওয়ার নির্দেশিকা জারি করেছে। আরটিপিসিআর পরীক্ষাও বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। একেই কোভিডের দু’ধাপে পর্যটন শিল্প ভেঙে পড়েছে। তাই এভাবে পর্যটকেরা ভিড় বাড়ালে পুজার মরসুমে ভালো সাড়া মিলবে বলে আশাবাদী পর্যটন ব্যবসায়ী সম্রাট সান্যাল। শুধু পাহাড় নয়, ডুয়ার্সের সবুজ গালিচাতেও উঁকি মারছে পর্যটকেরা। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হলে বর্ষা বিদায় নিলেই ভিড় বাড়বে পর্যটকদের, আশায় এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কয়েক লাখো মানুষ! আবার ছন্দে ফিরবে শৈলরাণী, বুক বাঁধছে পাহাড়!