লোকসভায় বিরোধী দলনেতার পদ খোয়াতে পারেন অধীর
বাদল অধিবেশনের আগেই লোকসভায় (Lok Sabha) কংগ্রেসের (Congress) বিরোধী দলনেতা পদ (Leader of Opposition) থেকে অধীররঞ্জন চৌধুরীকে (Adhir Ranjan Chowdhury) কেন সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে? এই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে রাজ্য–রাজনীতি এবং জাতীয় রাজনীতিতে। সম্প্রতি একুশের নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে। তাতে দেখা গিয়েছে কংগ্রেসের করুন দশা। একটি আসনও কংগ্রেস পায়নি। এমনকী জোট করেও কোনও লাভ হয়নি। তার মধ্যেই দলের অন্দরে অধীর বিরোধী সুর সপ্তমে উঠেছে। হাইকমান্ডের কাছে জমা পড়েছে একাধিক চিঠি। স্বয়ং বীরাপ্পা মইলির গলায় শোনা গিয়েছিল অধীর বিরোধী সুর। তিনি তীব্র ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন।
কিন্তু অধীরকে সরানোর আসল কারণ কী? কংগ্রেস সূত্রে খবর, গত দু’বছরে লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা হওয়া সত্ত্বেও বিরোধীদের কোনও বৈঠকে যোগ দেননি। তৃণমূল কংগ্রেস যেখানে বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করে লোকসভার ভেতরে ও বাইরে লড়াই চালিয়েছে সেখানে অধীররঞ্জন চৌধুরী তা এড়িয়ে গিয়েছেন। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের এক প্রথমসারির নেতা বলেন, ‘অধীর চৌধুরী বরাবর বৈঠক এড়িয়েছেন এবং অন্য নেতা পাঠিয়ে কংগ্রেসের অবস্থান জানিয়েছেন। আমরা কখনও একসঙ্গে বৈঠকে মিলিত হইনি।’
সূত্রের খবর, একুশের নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করতে বলা হয়েছিল অধীররঞ্জন চৌধুরীকে। অভিষেক মনু সিংভি থেকে প্রদীপ ভট্টাচার্য এই বার্তা লিখিতভাবে দিয়েছিলেন। কিন্তু অধীররঞ্জন চৌধুরী তা ফুৎকারে উড়িয়ে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিরোধিতায় মেতে ওঠেন। এমনকী এই পরিকল্পনার বিরোধিতা করেন। এই বিষয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রথমসারির নেতা বলেন, ‘কংগ্রেসের পক্ষ থেকে জোট করার কোনও প্রস্তাব আসেনি।’
এই পরিস্থিতিতে কংগ্রেসের পক্ষ থেকে সাড়া না পেয়ে তৃণমূল কংগ্রেস একাধিক কংগ্রেসের বৈঠক এড়িয়ে যায়। এমনকী কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধীর ডাকা বৈঠকে তৃণমূল কংগ্রেসকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। অথচ সেই বৈঠকটি বিরোধীদের নিয়েই ছিল। তাই গান্ধী মূর্তির পাদদেশে কংগ্রেসের প্রতিবাদের সভাতে তৃণমূল কংগ্রেসকে দেখা যায়নি। আবার তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই আন্দোলনে কংগ্রেসের উপস্থিতি ছিল নগণ্য। অথচ বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করার কাজ অধীরের করা উচিত ছিল বলে মনে করছেন কংগ্রেস নেতারা।
উল্লেখ্য, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী তথা পাঁচবারের সাংসদ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সংসদে এসেছিলেন তখন সব দলের নেতা–নেত্রীরাই সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছিলেন। সেখানেও অনুপস্থিত থেকে বিরোধিতাই করেছেন বহরমপুরের সাংসদ। তাতে তৃমমূল কংগ্রেস অধীরকে বিরোধী হিসেবেই চিহ্নিত করে ফেলেন। আর এক ইঞ্চি জায়গা কংগ্রেসকে ছাড়েনি। বিজেপি বিরোধী হিসেবে তৃণমূল কংগ্রেস উঠে এলেও অধীরকে সেখানে যুক্ত করা হয়নি। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস মনে করে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ভেতরে ভেতরে সম্পর্ক রেখে চলেছেন অধীর। তাই প্রধানমন্ত্রী তাঁকে বাংলার বাঘ বলেছিলেন।