মা, শিশুর স্বাস্থ্যরক্ষায় সিংহভাগ পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র একশোয় একশো
মা ও শিশুর স্বাস্থ্য রক্ষায় অতন্দ্র প্রহরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। তারই প্রতিফলন দেখা গিয়েছে রাজ্যের ‘মাতৃমা’ পোর্টালে। গর্ভবতী মহিলা থেকে সদ্যোজাত শিশু (children) ও তার মায়ের স্বাস্থ্যের নজরদারির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ সাফল্য এনে দিয়েছে বাংলার সিংহভাগ পুরসভা (municipalities)। অর্থাৎ মা ও শিশু সংক্রান্ত পরিবেষা ও তথ্য দেওয়ার ক্ষেত্রে ওই পুরসভাগুলি একশোয় একশো পেয়েছে বলা যায়। স্বাস্থ্য প্রশাসনের মতে, এই ঘটনা পুর স্বাস্থ্য কেন্দ্রগুলির সক্রিয়তাকেই প্রমাণ করে। এই সক্রিয়তা তৈরি হয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর অধীনে থাকা দপ্তরের ধারাবাহিক উদ্যোগে। যার জেরে শহরাঞ্চলে মা ও শিশুদের চিকিৎসার আওতায় আসার প্রবণতা বেড়েছে। পাল্লা দিয়ে কমেছে প্রসূতি ও শিশুমৃত্যুর হার।
তবে সাফল্যের এই খতিয়ানে আত্মতুষ্ট নয় স্বাস্থ্যভবন। স্বাস্থ্যকর্তাদের মতে, এই কাজে কয়েকটি জেলায় কয়েকটি পুরসভার নজরদারিতে ত্রুটি আছে। কর্তাদের বিচারে সেগুলি ৬৭-৮৫ শতাংশ নম্বর পেয়েছে। এখানেই শেষ নয়, সেইসব পুরসভা ও সংশ্লিষ্ট জেলাকে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে। এমনকী, ৯০ শতাংশ সাফল্যের তালিকায় থাকা জেলাকেও কড়া বার্তা দেওয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দম্পতিদের তালিকা তৈরির মাধ্যমে নজরদারি শুরু হয়। কোনও মহিলা গর্ভধারণ করলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর তাঁদের চিকিৎসা দেয় পুরসভা। নজর রাখা হয় মায়ের পুষ্টি ও গর্ভস্থ সন্তানের দিকেও। প্রসবের পর থেকে শিশুর স্বাস্থ্যের নজরদারিও করে পুরসভার স্বাস্থ্যকেন্দ্র। এক্ষেত্রে পুষ্টির সঙ্গে যুক্ত হয় টিকাকরণ কর্মসূচি। গোটা প্রক্রিয়াই ‘মাতৃমা’ পোর্টালে নথিভুক্ত করে রাখা হয়। ২০২১ সালের জুন মাস পর্যন্ত প্রায় এক বছরের মাতৃমা পোর্টালের নজরদারির খতিয়ান তৈরি করেছে স্বাস্থ্যভবন। সেই রিপোর্ট অনুসারে, রাজ্যের পুরসভা ও স্বাস্থ্য জেলাগুলির কাজের বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তথ্য অনুসারে, ১৩টি জেলায় পুরসভার কাজের সাফল্য ১০০ শতাংশ। এই তালিকায় আছে কলকাতা, আলিপুরদুয়ার, বাঁকুড়া, বীরভূম, দক্ষিণ দিনাজপুর, হাওড়া, ঝাড়গ্রাম, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার, উত্তর দিনাজপুর, পূর্ব বর্ধমান, মুর্শিদাবাদ, পুরুলিয়া। বসিরহাট, বিষ্ণুপুর, ডায়মন্ডহারবার, নন্দীগ্রাম ও রামপুরহাট স্বাস্থ্যজেলাতেও নজরদারির কাজ ১০০ শতাংশ হয়েছে। সব মিলিয়ে রাজ্যের ৩৬৬টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র সাফল্যের সঙ্গে কাজ করে স্বাস্থ্যভবনের প্রশংসা কুড়িয়েছে। আবার, ১০০ শতাংশ সাফল্য না পেলেও ৮৫ থেকে ৯০ শতাংশ সাফল্য পেয়েছে চারটি জেলার পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্র। সেগুলি হল, হুগলি, নদীয়া, পশ্চিম বর্ধমান ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা। খারাপের তালিকায় সবার উপরে রয়েছে উত্তর ২৪ পরগনা। স্বাস্থ্যভবনের বিচারে ওই জেলায় মাত্র ৪৩ শতাংশ ক্ষেত্রে সঠিক নজরদারি হয়েছে। পূর্ব মেদিনীপুর ও দার্জিলিংয়ে ৬৭ শতাংশ, পশ্চিম মেদিনীপুরে ৭০ শতাংশ, মালদহে ৮৩ শতাংশ কাজ হয়েছে। স্বাস্থ্যভবনের বিচারে ৪৪২টি পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মধ্যে ‘খারাপ কাজের’ তালিকায় রয়েছে মাত্র ৭৬টি। শতাংশের বিচারে যা মাত্র ১৭ শতাংশ।