মাত্র ৫ দিনেই মমতার স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে আবেদন ছাড়াল ১০ হাজার
মাত্র পাঁচদিনেই বাজিমাত! পড়ুয়াদের স্বপ্ন দেখাচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাধের প্রকল্প—স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড (student credit card)। ছাত্রছাত্রীদের উচ্চশিক্ষার কথা ভেবে নির্বাচনী ইস্তাহারে তৃণমূল কংগ্রেস এই প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছিল। তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসে দু’মাসের মধ্যে তার বাস্তবায়ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। গত ৩০ জুন তিনি স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড চালু করেন। তারপর কেটেছে মাত্র পাঁচ দিন। সোমবার ছিল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের দু’মাস পূর্তি। সেই দিন সন্ধ্যায় জানা গেল, আবেদনের সংখ্যা ইতিমধ্যেই প্রায় ১০ হাজার ছুঁই ছুঁই। সবটাই অনলাইনে জমা পড়েছে। সব মিলিয়ে ঋণের পরিমাণ দাঁড়াবে প্রায় ৫০০ কোটি টাকা। দেখা গিয়েছে, আবেদনকারী অধিকাংশ ছাত্রছাত্রী রাজ্যের মধ্যে পড়তে চান। রাজ্যের বাইরে পড়তে যাওয়ার জন্যও ক্রেডিট কার্ডের আর্জি জমা পড়েছে। তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ঋণের অঙ্ক পাঁচ লক্ষ টাকার আশপাশে।
স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডে সর্বাধিক ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ মিলবে। এই পাঁচদিনের গতিপ্রকৃতি দেখে নবান্নের শীর্ষকর্তাদের ধারণা, কমপক্ষে একলক্ষ আবেদন পড়বে। সেই আর্জি খতিয়ে দেখবে শিক্ষা ও অর্থদপ্তর। তারপরে সহজ শর্তে ঋণের সুযোগ দেওয়া হবে। মাত্র ৪ শতাংশ সুদে মেলা এই ঋণ শোধ করতে হবে ১৫ বছরের মধ্যে। ব্যাঙ্কের বাকি সুদের অংশ, তা পাঁচ শতাংশ হোক বা ছয়, সেটুকু দেবে নবান্ন। পুরোটাই রাজ্য সরকারের অধীনে থাকবে। কত আবেদন জমা পড়ছে, তা খতিয়ে দেখে এই ক্ষেত্রে বাজেট স্থির করবে অর্থদপ্তর।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ক্ষমতায় এসে প্রথমেই জোর দিয়েছেন স্বাস্থ্য ও শিক্ষায়। ছাত্রীদের অল্প বয়সে স্কুলছুট হওয়া বা বিয়ে ঠেকাতে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেন। তার জন্য স্বীকৃতি এসেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ থেকে। পুরস্কৃত হন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে তিনি শিক্ষাশ্রী, ঐক্যশ্রীর মতো প্রকল্প চালু করেন। ছাত্রছাত্রীদের জন্য স্বামী বিবেকানন্দ স্কলারশিপ চালু করেন মুখ্যমন্ত্রী। তবুও পড়াশোনার খরচ এতটাই বেড়ে গিয়েছে যে, পড়ুয়াদের বিভিন্ন ব্যাঙ্ক বা অর্থলগ্নি সংস্থা থেকে এডুকেশন লোন নিতে হয়। এবার সেই ঋণের ফাঁদ থেকে তাদের মুক্তি দিলেন তিনি। রাজ্য সরকারকে গ্যারান্টার বানিয়ে।
আগামী কাল, বুধবার বাজেটে এই প্রকল্পে টাকার সংস্থান বরাদ্দ করার কথা। তবে তার আগে কিছুটা ধন্দে রয়েছে নবান্নের শীর্ষকর্তারা। কত আবেদন পড়বে বা রাজ্য সরকারের কত খরচ হবে, বিষয়টি এখনও পুরোপুরি অনুমান করা যাচ্ছে না। এ ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা শুরু হয়েছে। তবে যাই হোক, পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষার জন্য স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল।