দুয়ারে ত্রাণের পর দুর্গম এলাকার সমস্যা সমাধানে এবার ‘দুয়ারে পুলিশ’
অভিযোগ জানাতে দূর-দূরান্ত থেকে পায়ে হেঁটে অথবা গাড়িতে চেপে আর থানায় যেতে হবে না। এলাকার সকল মানুষের অভাব-অভিযোগ শুনতে পুলিশই এবার পৌঁছে যাচ্ছে একেবারে ঘরের দুয়ারে। সোমবার এমনই এক কর্মসূচি পালিত হয় পূর্ব বর্ধমানের (Purba Bardhaman) নাদনঘাট থানা এলাকায়।
দুয়ারে পুলিশের সূচনার জন্য মূল ভূখন্ডের সঙ্গে বিচ্ছিন্ন হয়ে নদীর পাশে থাকা কিশোরীগঞ্জ ও মনমোহনপুর নামের এমনই দু’টি গ্রামকে বেছে নেওয়া হয় সোমবার। কালনার এসডিপিও সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য, ওসি সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায়-সহ অন্যান্য পুলিশকর্মীরা এদিন ওই এলাকায় গিয়ে সাধারণ মানুষের অভিযোগের কথা শোনেন। পাশাপাশি কিশোরীগঞ্জ-মনমোহনপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ে হওয়া অস্থায়ী পুলিশ সহায়তা কেন্দ্রে ৫০ জন বিভিন্ন বিষয়ে অভিযোগও দায়ের করেন।
থানা থেকে দূর-দূরান্তে থাকা গ্রামের মানুষজনের সমস্যা, অভিযোগ থাকলেও অনেক সময় বিভিন্ন কারণে তারা থানায় পৌঁছাতে পারেন না। সে অর্থনৈতিক সমস্যাও হতে পারে, আবার শারীরিক সমস্যাও হতে পারে। তাই অনেক সময় ন্যূনতম অভিযোগের বিষয়, যেমন ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড হারিয়ে গেলেও থানা দূরে থাকায় অনেকেই অভিযোগ জানাতে যেতে পারেন না। নাদনঘাট থানার অন্তর্গত এমনই দু’টি গ্রাম কিশোরীগঞ্জ ও মনমোহনপুর। পূর্ব বর্ধমান জেলায় এই দু’টি গ্রাম থাকলেও এই এলাকা থেকে সড়ক পথে সরাসরি যোগাযোগ করা যায় না। অথচ ওই এলাকার ব্যবসায়ী থেকে ছাত্রছাত্রী ও রোগীদের চিকিৎসা, পড়াশোনা ও ব্যবসার বেশিরভাগটাই করতে হয় ভাগীরথী নদী পেরিয়ে। স্বাভাবিক কারণেই ওই এলাকার মানুষের সমস্যা অন্যান্য এলাকার থেকে আরও অনেক বেশি।
এদিন ওই এলাকার নাদনঘাট পুলিশের করা সহায়তা কেন্দ্রে জমি সংক্রান্ত, নথি হারানো-সহ বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ দায়ের করেন নিজামুদ্দিন শেখ, নিচারুণ বিবিরা। স্বাভাবিক কারণেই একবারে ঘরের দুয়ারে পুলিশের এই সহায়তা কেন্দ্র হওয়ায় বেশ খুশি সকলে। এলাকার বাসিন্দা তথা পঞ্চায়েতের সদস্য মোবিন হোসেন মণ্ডল বলেন, “মানুষের অনেক সমস্যা থাকলেও যাতায়াতের সমস্যা থাকায় অনেকেই থানায় যেতে পারেন না। পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র হওয়ায় পুলিশ সরাসরি ঘরের কাছাকাছি আসায় এইসব মানুষজন খুবই উপকৃত হবেন। সমস্যার সমাধান হবে।” এসডিপিও সপ্তর্ষি ভট্টাচার্য বলেন, “দূরদূরান্তে গ্রামে থাকা মানুষের সমস্যা অভিযোগ শুনতেই কালনা মহকুমার এই কর্মসূচি এদিন পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের উদ্যোগে শুরু করা হয়।”