করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় বাংলার বাজেটে বরাদ্দ ১৮৩০ কোটি
দ্বিতীয় ঢেউ অনেকাংশে স্তিমিত হয়ে এলেও পশ্চিমবঙ্গে যে-কোনও মুহূর্তে করোনার তৃতীয় তরঙ্গ আছড়ে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। তাই পরিস্থিতি মোকাবিলায় খামতি রাখতে চাইছে না রাজ্য সরকার। কোভিড ব্যবস্থাপনায় ১৮৩০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বুধবার বিধানসভায় বাজেট (West Bengal Budget 2021) পেশের পরে সাংবাদিক বৈঠকে এ কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
করোনার (Coronavirus In West Bengal ) মোকাবিলায় বাংলায় ইতিমধ্যেই বেশ কিছু চিকিৎসা পরিকাঠামো তৈরি হয়েছে। তার পরেও কোভিড ব্যবস্থাপনাতেই জোর দিচ্ছে রাজ্য সরকার। অক্সিজেন প্লান্ট তৈরি থেকে শুরু করে নানান ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। তৃতীয় ঢেউয়ে শিশুরা বেশি মাত্রায় সংক্রমিত হতে পারে বলে চিকিৎসকদের আশঙ্কা। তাই বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজ, জেলা ও ব্লক স্তরে শিশুদের চিকিৎসা পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দেওয়া হয়েছে। পেডিয়াট্রিক ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট (পিকু), নিয়োনেটাল ইনটেন্সিভ কেয়ার ইউনিট (নিকু), এসএনসিইউ, এইচডিইউ-এ শয্যা বাড়ানো, কিছু জায়গায় তা নতুন করে তৈরির পরিকল্পনা চলছে। জানানো হয়েছে, শুরু থেকেই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মী ও আধিকারিকদের নিয়ে দল গড়ে দারুণ ভাবে অতিমারি পরিস্থিতি সামাল দিয়েছে রাজ্য। ২৩৫টি হাসপাতালকে শুধু কোভিড চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয়েছে। তার মধ্যে ১৯৪টি সরকারি এবং ৪১টি বেসরকারি হাসপাতাল রয়েছে। কোভিড হাসপাতাল তৈরি হয়েছে প্রতিটি জেলা তথা মহকুমাতেও।
এ দিনের বাজেটে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ বিভাগে ১৬৩৬৮.৩৮ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। গত ফেব্রুয়ারিতে অন্তর্বর্তী বাজেটে শুধু স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পে দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল। রাজ্যের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে অন্যান্য পরিকাঠামো কেন প্রাধান্য পেল না, তা নিয়ে তখন প্রশ্ন তুলেছিল বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী জানান, স্বাস্থ্যসাথী খাতে ১৯৭০ কোটি টাকা ব্যয় বরাদ্দের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বাজেট বিবৃতিতেও জানানো হয়েছে, দু’কোটির বেশি পরিবারকে আনা হয়েছে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায়। তাতে ২২৬০টি হাসপাতালের মাধ্যমে জনপ্রতি বার্ষিক পাঁচ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমা মিলবে। ফলে রাজ্যবাসী বিপুল চিকিৎসা-ব্যয় থেকে রেহাই পাবেন।
বিধানসভার আট দফা নির্বাচনের দরুন মার্চে রাজ্যে করোনার (Corona) দ্বিতীয় ঢেউ ব্যাপক ভাবে ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক প্রাণহানি ঘটেছে। নির্বাচনের পর্ব কমানোর জন্য রাজ্যের অনুরোধে কর্ণপাত করা হয়নি বলেও অভিযোগ তোলা হয়েছে বাজেট-বিবৃতিতে। পরিসংখ্যান দিয়ে বলা হয়েছে, প্রথম দফার নির্বাচনের সময় সংক্রমণের হার ছিল তিন শতাংশের মতো। ভোটের অষ্টম পর্বে তা লাফিয়ে ৩৩ শতাংশে পৌঁছে গিয়েছিল। তবে রাজ্যের প্রচেষ্টায় এখন সংক্রমণ-হার নিম্নমুখী। করোনার টিকা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের উদাসীনতার কথাও উঠে এসেছে রাজ্য বাজেটে। জানানো হয়েছে, প্রায় ২.৩ কোটি প্রতিষেধক ইতিমধ্যেই দেওয়ার ব্যবস্থা করে টিকাকরণে বাংলা এখন এক নম্বরে।