দেশ বিভাগে ফিরে যান

মূল্যবৃদ্ধি সামলাতে সক্রিয় হতে হবে বিজেপি সরকারকে, বেসুরো আরবিআই গভর্নর

July 9, 2021 | 2 min read

মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সবথেকে বেশি উদ্বিগ্ন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। বিষয়টি নিয়ে বেসুরো হয়ে এবার মোদি সরকারকে সতর্ক করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস (Shaktikanta Das)। তিনি বলেছেন, ‘একটানা মুদ্রাস্ফীতির হার আমাদের কাঙ্ক্ষিত সীমার ঊর্ধ্বে রয়ে যাচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার একঝাঁক ব্যবস্থা নিয়েছে। কিন্তু, আরও অনেক পদক্ষেপ নিতে হবে সরকারকে।’ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের এই সতর্কবার্তা এমন সময়ে এসেছে, যখন মোদী সরকার মন্ত্রিসভাকে ঢেলে সাজিয়ে নতুন রূপ দেওয়ার চেষ্টা করেছে। সর্বোচ্চ চারটি বাদে প্রায় প্রতিটি মন্ত্রকের মন্ত্রী বদল হয়েছে। বিরোধীরা এই সিদ্ধান্তকে ব্যর্থতার স্বীকারোক্তি হিসেবেই তকমা দিয়েছে। তাদের বক্তব্য, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, শ্রম, আইন, তথ্য-প্রযুক্তিতে মন্ত্রী বদলের মাধ্যমে সরকার প্রমাণ করেছে, এই মন্ত্রকগুলি প্রত্যাশিত কাজ করেনি। শুধু করোনাকালীন সময়ে নয়, তার আগে থেকেই অর্থমন্ত্রকের পারফরম্যান্স নিয়ে সবথেকে বেশি প্রশ্ন উঠেছে। কিন্তু, অর্থমন্ত্রকে কোনও রদবদল ঘটানো হয়নি। এই প্রেক্ষিতে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ফের স্বয়ং আরবিআই গভর্নরের সতর্কবার্তা মোদী সরকারের কাছে অস্বস্তিকর।

এক সাক্ষাৎকারে শক্তিকান্ত দাস বস্তুত স্বীকার করেছেন যে, আপাতত মূল্যবৃদ্ধি (Price Hike) কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। মূল্যবৃদ্ধির হার কমতে পারে একমাত্র চলতি আর্থিক বছরের তৃতীয় ত্রৈমাসিকে। অর্থাৎ, অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর সময়সীমায়। সেই সম্ভাবনা নিয়েও অবশ্য সংশয় রয়েছে। কারণ, আগে একাধিকবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) নীতি নির্ধারণ কমিটির বৈঠকের পর গভর্নর আশা প্রকাশ করেছেন যে, কয়েকমাসের মধ্যে মুদ্রাস্ফীতির হার কমে যাবে। কিন্তু, তা হয়নি। মুদ্রাস্ফীতির হার ৪ শতাংশের নীচে থাকাকে আদর্শ অবস্থা হিসেবে অভিহিত করে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু, লাগাতার পাইকারি ও খুচরো—কোনও মুদ্রাস্ফীতির হারই নিয়ন্ত্রণে থাকছে না। বরং অর্থনৈতিক মহলের আশঙ্কা, সব রেকর্ড ভেঙে দিতে চলেছে জুন মাসের মুদ্রাস্ফীতির হার। কারণ, গত মাসে খাদ্য বা পেট্রপণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়ার প্রবণতা দেখিয়েছে।

রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর আগেও বলেছেন, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে পেট্রপণ্যের উপর করের পরিমাণ কমাতে হবে। ভারসাম্য আনার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে সমন্বয় আনার কথাও বলেছে আরবিআই। কিন্তু, এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রীয় সরকার পেট্রল-ডিজেলের উপর করের বোঝা কমানোর কোনও আভাসই দেয়নি। দেশের প্রায় সর্বত্র পেট্রলের দাম ১০০ টাকা পেরিয়ে গিয়েছে অনেকদিন আগে। অর্থনীতির উপর চাপ কমাতেও কোনও পন্থা ঘোষণা করেনি সরকার। শুধুমাত্র ব্যাঙ্ক লোনের উপর ক্রেডিট গ্যারান্টির নিশ্চয়তা দেওয়া হয়েছে। অথচ, সরাসরি কোনও শিল্পের ক্ষেত্রেই প্রত্যক্ষ আর্থিক সহায়তা দেয়নি সরকার। এই অবস্থায় অর্থনীতির বিশেষ কোনও লাভ হবে বলে মনে হয় না। শক্তিকান্ত দাসও সাক্ষাৎকারে বলেছেন, আর্থিক নীতির এখনই কোনও পরিবর্তন করা হচ্ছে না। অর্থাৎ, সুদের হার আপাতত অপরিবর্তিত থাকবে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Shaktikanta Das, #RBI, #bjp

আরো দেখুন