ইউরো কাপ ফাইনাল: ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে আজ এগিয়ে ইতালি
৩০ জুলাই, ১৯৬৬। দুরন্ত হ্যাটট্রিকের দৌলতে ওয়েম্বলির নায়ক জিওফ হার্স্ট। তৎকালীন পশ্চিম জার্মানিকে হারিয়ে বিশ্বসেরা ইংল্যান্ড। কিন্তু তাঁর দ্বিতীয় গোলে জড়িয়ে বিতর্কের গন্ধ। যা অক্লেশে চ্যালেঞ্জ জানাতে পারে শার্লক হোমসের চুরুটের তীব্র ধোঁয়াকে। ক্রসপিসে লেগে বল গোললাইন অতিক্রম করেনি বলে এখনও মনে করেন ফ্রানৎস বেকেনাবাওয়ার। কিন্তু আজারবাইজানের সহকারী রেফারি তোফিক বাহরামোভ গোলের সঙ্কেতই দিয়েছিলেন।
১১ জুলাই, ২০২১। ইতিহাসের গন্ধ মেখে দাঁড়িয়ে সেই ওয়েম্বলি। এবার অবশ্য বিশ্বসেরা নয়, ইউরোপ শ্রেষ্ঠ হওয়ার লড়াই। গ্যারেথ সাউথগেটের ইংল্যান্ডের সামনে রবার্তো মানচিনির ইতালি। এই ফাইনালের আগে জিওফ হার্স্ট বলেছেন, ‘চ্যাম্পিয়ন হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে হ্যারি কেনদের।’
কী হবে রবিবাসরীয় ফাইনালে? সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সের নিরিখে অবশ্যই এগিয়ে ইতালি। মানচিনির স্পর্শে বদলে গিয়েছে চারবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। অতীতে অধিকাংশ দেশই আক্রমণের তুবড়িতে বিপক্ষকে ভাসিয়ে দিতে চাইত। কিন্তু তখন ইতালি ছিল কাতানেচ্চিও’র ধারক ও বাহক। দশকের পর দশক তারকা ডিফেন্ডার জন্ম নিত বেনিতো মুসোলিনির দেশে। ‘লকগেট’ ফেলে কীভাবে প্রতি-আক্রমণে বিপক্ষের জাল ছিঁড়তে হয় তা শিখিয়েছে ওই নীল জার্সিধারীরাই। তারপর পো নদী দিয়ে জল গড়িয়েছে নিজস্ব ধারায়।
পরিবর্তিত হয়েছে ফুটবলও। এখন কোচেদের হাতেই থাকে রিমোট কন্ট্রোল। ‘পহেলে গুণবিচারী, ফির দর্শনধারী’, এই দর্শনই এখন আঁকড়ে ধরেছে চর্মগোলককে। কিন্তু ইতালি এখন কাতানেচ্চিও থেকে বেরিয়ে এসে ৪-৩-৩ ফর্মেশনে খেলছে। জয় তো অবশ্যই প্রয়োজন, পাশাপাশি মানচিনি উপভোগ্য ফুটবল উপহার দিতে চান অনুরাগীদের। তাঁর কোচিংয়ে ৩৩টি ম্যাচ অপরাজিত পাওলো মালদিনি-ফাবিও কানাভারোর দেশ। চলতি ইউরোতেও চূড়ান্ত আক্রমণাত্মক ফুটবল খেলছে। গোলরক্ষক ডোনারুমা থেকে আপফ্রন্টে ইনসিগনে, প্রত্যেকেকে এক সুতোয় বাঁধতে পেরেছেন কোচ। প্রতিটি বিভাগেই ইংল্যান্ডের থেকে এগিয়ে ইতালি। রক্ষণে বোনুচ্চি-চিয়েলিনি, মাঝমাঠে ভেরাত্তি-বারেল্লারা স্বাভাবিক পারফরম্যান্স মেলে ধরতে পারলে সমস্যা অবশ্যই বাড়বে ইংল্যান্ডের। তবে ঘরের মাঠে খেলার সুবিধা নিশ্চয়ই কাজে লাগাতে চাইবে সাউথগেট-ব্রিগেড। কিন্তু অঘটন না ঘটলে খেতাব জয়ের সম্ভাবনা বেশি ইতালিরই। মানচিনির অশ্বমেধের ঘোড়াকে থামানো কঠিন ইংল্যান্ডের পক্ষে।