ঘরে বসেই মিলবে পুরীর ভোগের স্বাদ, রথযাত্রায় উদ্যোগ পঞ্চায়েত দপ্তরের
‘রথযাত্রা লোকারণ্য মহা ধুমধাম/ভক্তরা লুটায়ে পথে করিছে প্রণাম’! জগন্নাথদেবের (Jagannath Deb) রথযাত্রার এমন পরিচিত দৃশ্য গত বছর থেকে গায়েব। করোনার জেরে বিধিনিষেধের বেড়াজালে পুরী (Puri) -প্রিয় বাঙালির জগন্নাথদেব দর্শন এবং সেখানকার মহাপ্রসাদের (Mahaprasad) স্বাদ অধরা গত বছর থেকে। তবু সময়ের নিয়মে এসে পড়েছে রথযাত্রা (Rath Yatra)। ঘরবন্দি বাঙালির মন খারাপ। এমন সময়ে খুশির খবর নিয়ে হাজির রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তর (Panchayat Dept)। সোমবার রথযাত্রা। সেদিন তো বটেই, মঙ্গল ও বুধবার তারা মানুষের চাহিদামতো সরবরাহ করবে পুরীর মহাপ্রসাদ ও ছাপান্ন ভোগের অনুকরণে রান্না করা সুস্বাদু নানা পদ। পঞ্চায়েত দপ্তরের দেওয়া তিনটি ফোন নম্বরের যে কোনও একটিতে হোয়াটসঅ্যাপ করে বরাত দিলে বাড়িতে বসেই মিলে যাবে সুস্বাদু লাঞ্চ বা ডিনার। কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার জন্য এই উদ্যোগ নিয়েছে পঞ্চায়েত দপ্তর। এর আগে দুর্গাপুজো বা লক্ষ্মীপুজোর ভোগও তারা এভাবে মানুষের বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছে। এবার ‘জয় জগন্নাথ’ বলে তারা নেমে পড়েছে শহরের মানুষকে ছাপান্ন ভোগের স্বাদ পাইয়ে দিতে। দপ্তরের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মস্তিষ্কপ্রসূত এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করতে এখন জোর তৎপরতা পঞ্চায়েত দপ্তরে।
দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ডানলপ থেকে ঠাকুরপুকুর, গড়িয়ার কামালগাজি মোড় থেকে নবান্ন হয়ে বিমানবন্দরের এক নম্বর গেট পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় মিলবে এই সুযোগ। এর জন্য দপ্তর থেকে দেওয়া হয়েছে তিনটি ফোন নম্বর। সেগুলি হল ৬২৯০২৫৫৮৫৯, ৮১৭০৮৮৭৭৯৪ এবং ৯১৬৩১২৩৫৫৬। লাঞ্চের সময় ভোগ পেতে চাইলে আগের দিন রাত ১০টার মধ্যে হোয়াটসঅ্যাপ করতে হবে। ডিনার চাইলে অর্ডার দিতে হবে ওই দিন দুপুর ১২টার মধ্যে। প্রতি প্যাকেট পিছু খরচ ২৭৫ টাকা। জগন্নাথদেবের ভোগে যা যা থাকে, সেসব বেশিরভাগই রাখার চেষ্টা হচ্ছে পদের মধ্যে। খিচুড়ি, ডালমা, শাক, পটল রসা, পাঁপড় ইত্যাদি ছাড়াও তিন ধরনের মিষ্টি থাকবে সেখানে। থাকবে পুরীর বিখ্যাত ছানাপোড়া, রসা এবং জিবেগজাও। কিন্তু রান্নার হাত ঠিকঠাক না হলে কি সেই স্বাদ-গন্ধ আসা সম্ভব? তাও ভেবেছে পঞ্চায়েত দপ্তর। যাঁরা এসব পদ রান্না করবেন, সেই পাচকদের আনা হচ্ছে ওড়িশা এবং লাগোয়া পূর্ব মেদিনীপুর থেকে। তাঁদের সাহায্য করবেন একাধিক স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলারা। পঞ্চায়েত দপ্তরের অধীন সিএডিসি (কমপ্রিহেনসিভ এরিয়া ডেভেলপমেন্ট কর্পোরেশন) বিভাগ এই কাজ পরিচালনা করছে।
পঞ্চায়েত দপ্তরের বিশেষ সচিব সৌম্যজিৎ দাস বলেন, এই কাজের জন্য বাজার থেকে কোনও কিছুই কেনা হবে না। সবটাই সংগ্রহ করা হবে পঞ্চায়েত দপ্তরের পরিচালনাধীন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কাছ থেকে। সব্জি আনা হবে সরকারি উদ্যোগে চলা বিভিন্ন খামার থেকে। ওই সরকারি কর্তা বলেন, করোনার কারণে মানুষ কার্যত ঘরবন্দি। এই পরিস্থিতিতে আমাদের এই উদ্যোগ মানুষ উৎসাহের সঙ্গেই গ্রহণ করবে বলে আমরা আশাবাদী।