সস্তায় পাওয়া যাবে রান্নার গ্যাস, সিএনজি, দ্রুত পাইপলাইন পাততে প্রস্তুতি নবান্নের
উত্তরপ্রদেশের জগদীশপুর থেকে পশ্চিমবঙ্গে পাইপলাইনে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগানোর প্রকল্প গড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা গেল। সেই পাইপলাইন দুর্গাপুর পর্যন্ত এসে পৌঁছেছে। এ বার রাজ্যের প্রস্তাবিত বাকি এলাকাতেও দ্রুত তা আনতে এবং গ্যাসের জোগান নিশ্চিত করতে কোমর বাঁধল রাজ্য। উদ্যোগী হল পরিকাঠামো নির্মাণে গতি আনতে। আর সেই মর্মে সহায়ক পরিবেশ গড়তে এবং স্বচ্ছতার সঙ্গে জমি নেওয়ার কাজ এগোতে জেলা প্রশাসনগুলিকে বার্তা দিল নবান্ন।
পাইপের মাধ্যমে ঘরে বা হোটেলে রান্নার গ্যাস বা গাড়ির জন্য সিএনজি মিলবে গেল-এর পাইপলাইনটি সম্পূর্ণ হলে। গ্যাস সিলিন্ডার, পেট্রল ও ডিজেলের চড়া দরের প্রেক্ষিতে রাজ্যবাসীর অনেকেই এখন সস্তার এই গ্যাস সরবরাহের দিকে তাকিয়ে।
জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, মাটির ৪-৫ মিটার নীচে পাইপলাইন পাতার কথা। ফলে কিছু জমি দরকার। কেন্দ্রীয় আইন মোতাবেক, জমি নেওয়ার আগে রাজ্যের নীতি মেনে প্রত্যেক জমি মালিকের সঙ্গে কথা বলবে জেলা প্রশাসনগুলি। প্রকল্পের সুফল ও প্রয়োজনীয়তা বুঝিয়ে এবং প্রত্যেকের সম্মতি নিয়ে এগোতে চায় রাজ্য। সংশ্লিষ্ট মহল বলছে, এই কাজে গ্রাম এবং শহরে জমি লাগবে। তবে কৃষিজমির ক্ষেত্রে সমস্যা নেই। কারণ, এক বছরের ফসলের দাম এবং জমি-মূল্যের ১০% দেওয়া হতে পারে জমিদাতাকে। আবার পাইপলাইন মাটির অনেকটা নীচ দিয়ে যাবে বলে চাষের জমিরও ক্ষতি হবে না। সংশ্লিষ্ট প্রত্যেকের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত সেই কাজ এগোনোর প্রস্তুতি নিচ্ছে নবান্ন।
২০০৫-এ রাজ্যে প্রাকৃতিক গ্যাস জোগাতে গেল-এর সঙ্গে আলোচনার কথা জানান তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য। পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৎপরতায় এ নিয়ে উদ্যোগী হয় প্রশাসন। কোথাও জমি জট থাকলেও, পরে সব বাধা কাটিয়ে এগিয়েছে পাইপলাইনের কাজ। প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা গ্যাস প্রকল্পে উত্তরপ্রদেশের জগদীশপুর থেকে হলদিয়া হয়ে ধামড়া পর্যন্ত গ্যাস জোগাবে গেল। মূল পাইপলাইন থেকে নানা এলাকায় বণ্টন করবে বেঙ্গল গ্যাস, হিন্দুস্থান পেট্রোলিয়াম, আইওসি-আদানি গোষ্ঠীর মতো সংস্থা। বর্ধমানে ম্যাটিক্সের সার কারখানা এই গ্যাস পাওয়ার নিশ্চয়তার ভিত্তিতে ফের চালু হওয়ার অপেক্ষায়।
রাজ্যের অংশে প্রকল্প শেষ করতে ২০২২ সালকে লক্ষ্য ধরা হচ্ছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, ২০২৪ সালে লোকসভা ভোটের আগে প্রকল্প শেষ হলে রাজ্যের শাসকদলের হাতে তা বড় অস্ত্র হবে।