বেসরকারিকরণ করা হবে সিংহভাগ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেরই? কেন্দ্রীয় অর্থসচিবের মন্তব্যে ঝড়
একটা দু’টো নয়, ধীরে ধীরে প্রায় সিংহভাগ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কেরই (Bank) বেসরকারিকরণ হবে। মঙ্গলবার ইন্ডিয়া পলিসি ফোরাম নামক অনুষ্ঠানে এই মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় অর্থসচিব টি ভি সোমনাথন (T. V. Somanathan)। তারপর থেকেই শুরু হয়েছে আলোড়ন। কারণ, এখনও পর্যন্ত সরকারপক্ষ বারংবার বলে এসেছে ব্যাঙ্ক বেসরকারিকরণের কোনও পরিকল্পনাই নেই। প্রাথমিকভাবে চেষ্টা করা হবে একাধিক ব্যাঙ্ককে সংযুক্ত করে সেগুলিকে লাভজনক করে তুলতে। একান্তই যখন সেই চেষ্টা ব্যর্থ হবে, তখনই হবে বেসরকারিকরণ। তবে সব ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ হবে না। গত ১৬ মার্চ স্বয়ং অর্থমন্ত্রী বলেছিলেন, ব্যাঙ্ক কর্মী ও অফিসারদের আন্দোলন বন্ধ রাখা উচিত। কারণ, তাঁদের আমরা আশ্বাস দিচ্ছি, কর্মীদের কোনওরকম সঙ্কট হয় এরকম সিদ্ধান্ত সরকার নেবে না। আর সব ব্যাঙ্ককেই বেসরকারিকরণ করে দেওয়া হবে এমনও নয়।
এই অবস্থায় হঠাৎ ন্যাশনাল কাউন্সিল অব অ্যাপ্লায়েড ইকনমিক রিসার্চের অনুষ্ঠানে অর্থসচিব বলেছেন, ব্যাঙ্কিং সেক্টরের সংস্কার কর্মসূচির অন্যতম লক্ষ্যই হল পি জে নায়েক কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ধীরে ধীরে সিংহভাগ রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণ করা। সরকারের হাতে থাকবে সামান্য কয়েকটি ব্যাঙ্ক। উল্লেখ্য, সরকার ইতিমধ্যেই ইন্ডিয়ান ওভারসিজ ব্যাঙ্ক এবং সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের বেসরকারিকরণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিগত কয়েক বছরে একঝাঁক ব্যাঙ্কের সংযুক্তিকরণও হয়েছে। এবার স্বয়ং অর্থসচিবই বলেছেন, ধীরে ধীরে সরকারের লক্ষ্য অধিকাংশ ব্যাঙ্কেরই বিলগ্নিকরণ।
শুধু ব্যাঙ্ক নয়, অর্থসচিব বলেছেন, পরিবর্তন হওয়া দরকার ভর্তুকি নীতিরও। অর্থসচিবের এই বিবৃতির পরই বিরোধীরা প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে, তাহলে সরকার ব্যাঙ্ক নীতি প্রকাশ্যে জানাক। আগামী ১৯ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে সংসদের বাদল অধিবেশন। সেই অধিবেশনে বিরোধীরা একঝাঁক ইস্যুতে সরকারকে চেপে ধরবে। জানতে চাওয়া হবে ব্যাঙ্কিং সেক্টর নীতিও। আসন্ন অধিবেশনে ডিপোজিট ইনসিওরেন্স বিল পেশ করতে চলেছে সরকার। ব্যাঙ্কে জমা টাকার উপর যে বিমা এতকাল ছিল ১ লক্ষ টাকা, সেটা বাড়িয়ে করা হচ্ছে ৫ লক্ষ টাকা। বাজেটেই ঘোষণা করা হয়েছিল এই সিদ্ধান্ত। এবার বাস্তবায়িত হতে চলেছে। সরকারের ব্যাঙ্কিং নীতি নিয়ে সামগ্রিকভাবেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। ব্যাঙ্কগুলির আর্থিক স্বাস্থ্য নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে সংসদে।