ধর্মের চেয়ে জীবন বেশি গুরুত্বপূর্ণ – কাঁওয়ার যাত্রা নিয়ে যোগীরাজ্যকে সুপ্রিম ভর্ৎসনা
বুধবারই উত্তরপ্রদেশকে ভর্ৎসনা করেছিল সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। শুক্রবার করোনা আবহে সেই যাত্রা পুনর্বিবেচনার কথা বলে শীর্ষ আদালত জানাল, নাগরিকদের জীবনের অধিকার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ধর্মীয় সহ কোনও ভাবাবেগই জীবনের অধিকারের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে না।
করোনা (Covid19) সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে উত্তরাখণ্ড সরকার কাঁওয়ার যাত্রা (Kanwar Yatra) বাতিল করেছে। কিন্তু একই পথে হাঁটেনি যোগীরাজ্য। জৌলুস কমিয়ে সেই ধর্মীয় অনুষ্ঠান প্রতীকী করার সিদ্ধান্ত নেন মুখ্যমন্ত্রী আদিত্যনাথ। বুধবারই এক স্বতঃপ্রণোদিত মামলার প্রেক্ষিতে উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) মতামত জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। নোটিস পাঠানো হয় কেন্দ্র ও উত্তরাখণ্ড সরকারকেও। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি আর নরিম্যান এবং বি আর গাভাইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল। সেখানে উত্তরপ্রদেশ সরকারকে আদালতের প্রশ্ন, কাঁওয়ার যাত্রা পুনর্বিবেচনা করতে তারা কি ইচ্ছুক? এরপরেই সংবিধানের ২১ নম্বর ধারায় উল্লেখিত জীবনের অধিকারের কথা উল্লেখ করে আদালত বলে, ‘প্রাথমিকভাবে মনে হয়, এক্ষেত্রে সকলেরই উদ্বেগের কারণ রয়েছে। এটা সংবিধানের ২১ নম্বর ধারার সঙ্গে যুক্ত। দেশবাসীর স্বাস্থ্য এবং জীবনের অধিকার সবার উপরে। এই মৌলিক অধিকারের কাছে ধর্ম সহ কোনও ভাবাবেগই গুরুত্বপূর্ণ নয়।
কেন্দ্রের আইনজীবী তথা সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা এদিন আদালতে বলেন, করোনা মাহামারীর কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারগুলি এই কাঁওয়ার যাত্রায় অনুমতি দিতে পারে না। পরিবর্তে ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে নির্দিষ্ট জায়গায় গঙ্গাজলের বন্দোবস্ত করা উচিত। প্রাচীন প্রথা ও ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারগুলিকে এমন ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে পুণ্যার্থীরা পবিত্র গঙ্গাজল সংগ্রহ করে নিকটবর্তী শিবমন্দিরে ঢালতে পারে। এর জন্য কোভিড বিধি মেনে উপযুক্ত বন্দোবস্ত করতে হবে। এরপরেই মেহতাকে আদালত বলে, ‘একটা বিষয় পরিষ্কার, করোনা পরিস্থিতিতে আমরা উত্তরপ্রদেশকে কাঁওয়ার যাত্রার অনুমতি দিতে পারি না।’
এরপরেই উত্তরপ্রদেশ সরকারের কৌঁসুলি সি এস বৈদ্যনাথন বলেন, ‘কাঁওয়ার যাত্রা পুরোপুরি নিষিদ্ধ করা ঠিক নয়। ধর্মীয় ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে খুব কম সংখ্যক পুণ্যার্থীকে নিয়ে প্রতীকী কাঁওয়ার যাত্রা করতে হবে। এ বিষয়ে হলফনামা জমা দেওয়া হয়েছে। এর জন্য ট্যাঙ্কারের মাধ্যমে গঙ্গাজল সরবরাহ, করোনা পরীক্ষা এবং সামাজিক দূরত্ববিধি মানা হবে। এরপরেই কাঁওয়ার যাত্রা হবে কি না, তা বৈদ্যনাথনকে ১৯ জুলাইয়ের মধ্যে জানাতে বলে আদালত। অন্যদিকে, উত্তরাখণ্ড সরকারের আইনজীবী অভিষেক আত্রে বলেন, করোনার কথা মাথায় রেখে রাজ্য কাঁওয়ার যাত্রা বাতিল করে দিয়েছে।