১৯ জুলাই শুরু হচ্ছে আপার প্রাইমারি নিয়োগ ইন্টারভিউ
একই দিনে জোড়া স্বস্তির খবর। একদিকে, হাইকোর্টের সিদ্ধান্তে প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে উদ্বেগ কাটল রাজ্য সরকারের। অন্যদিকে, সরকারি এক ঘোষণায় উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষক পদপ্রার্থীদের জন্য মিলল খুশির খবর। আগামী ১৯ জুলাই, সোমবার থেকে তাঁদের ইন্টারভিউ শুরু হবে। শুক্রবার একথা ঘোষণা করেছেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু (Bratya Basu)। প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে এদিনই একটি মামলার শুনানি ছিল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court)। মামলাকারীর দাবি ছিল, উচ্চ প্রাথমিকের মতো প্রাথমিকেও শিক্ষক পদপ্রার্থীদের নামের পাশে মোট প্রাপ্ত নম্বর লিখে দিতে হবে। উচ্চ আদালত সেটি খারিজ করে দিয়েছে। ফলে প্রাথমিকে নিয়োগ নিয়ে আপাতত কোনও বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে না রাজ্য সরকারকে।
এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে ব্রাত্যবাবু জানান, আগামী ১৯ জুলাই থেকে শুরু হচ্ছে আপার প্রাইমারির (Upper Primary) শিক্ষকপদের জন্য ইন্টারভিউ। চলবে আগামী ৪ আগস্ট পর্যন্ত। আদালতের নির্দেশ মেনে এবং সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে। আপার প্রাইমারিতে শূন্যপদের সংখ্যা মোট ১৪ হাজার ৩৩৯। গত ৯ জুলাই ইন্টারভিউতে ডাক পাওয়া ১৫ হাজার ৪০৬ জনের তালিকা প্রকাশ করে স্কুল সার্ভিস কমিশন (এসএসসি)। এদিন বিকেলেই এসএসসির সরকারি ওয়েবসাইটে ইন্টারভিউ সংক্রান্ত সব তথ্য দিয়ে দেওয়া হয়। ইন্টারভিউয়ে ডাক পাওয়ার চিঠি (ইন্টারভিউ ইন্টিমেশন লেটার) সেখানে ‘আপলোড’ করা হয়েছে। অ্যাপ্লিকেশন আইডি বা রোল নম্বর এবং জন্মের তারিখ দিয়ে প্রার্থীরা সেই চিঠি ‘ডাউনলোড’ করতে পারবেন। এ সংক্রান্ত কোনও জিজ্ঞাসা থাকলে, চারটি হেল্পলাইনে ফোন করে তা জানাতে পারবেন শিক্ষক পদপ্রার্থীরা। সেগুলি হল—৯০৫১১৭৬৪০০, ৯০৫১১৭৬৫০০, ৯৮৩০৪৫৪২১৮ এবং ৯৮৩০৪৫৪২১৯।
এদিকে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে চাকরিপ্রার্থীদের নামের পাশে প্রাপ্ত নম্বর প্রকাশ করার দাবি এদিন খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। নয়তো গুরুতর সমস্যায় পড়তে হতো প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে। দু’টি জেলা ছাড়া অন্যান্য জায়গায় এই নিয়োগ প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই সম্পন্ন বলে জানা গিয়েছে। কিন্তু, কেন খারিজ হল মামলাটি? আদালত সূত্রে খবর, উচ্চ প্রাথমিক এবং প্রাথমিকের নিয়োগ দু’টি আলাদা আইনমাফিক হয়। প্রার্থীদের যাবতীয় পরীক্ষার নম্বর বাধ্যতামূলকভাবে প্রকাশ করার কথা প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত আইনে কোথাও বলা নেই।
সৌরভ কুমার পাঠক সহ ১১৫ জন আবেদনকারী হাইকোর্টে এই মামলা করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ, কোন পরীক্ষার্থী কোন খাতে মোট কত নম্বরের ভিত্তিতে নির্ধারিত জায়গায় ঠাঁই পেলেন, তার ব্যাখ্যা মিলছে না। মামলাটিতে আরও কিছু বিষয় থাকলেও, মূলত এটির উপরেই সওয়ালে জোর দেওয়া হয়। প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ হয় ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল প্রাইমারি স্কুল টিচার্স রিক্রুটমেন্ট রুলস’ অনুযায়ী। মামলাকারীরা উচ্চ প্রাথমিকের নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য ব্যবহৃত রাজ্যের সেন্ট্রাল স্কুল সার্ভিস কমিশনের আইন উল্লেখ করে জানান, এক্ষেত্রেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিত। অভিযোগ করা হয়, নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা না থাকাতেই প্রার্থীদের সম্পর্কে সব তথ্য প্রকাশ করা হচ্ছে না। বিচারপতি অবশ্য তাঁর রায়ে জানান, সংশ্লিষ্ট আইনে তেমন সংস্থান না থাকলে মামলাকারীরা সেই দাবি তুলতে পারেন না। নিয়োগকারীদেরও সেক্ষেত্রে তেমন কোনও বাধ্যবাধকতা নেই।