স্ট্যান স্বামীর মৃত্যু ভারতের চিরকালীন কলঙ্ক: রাষ্ট্রসঙ্ঘ
হেফাজতে থাকাকালীন স্ট্যান স্বামীর (Stan Swamy) মৃত্যু ভারতের মানবাধিকার রক্ষার (human Rights) ইতিহাসে চিরকালীন কলঙ্ক হয়ে থাকবে। বৃহস্পতিবার এই মন্তব্য করলেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের (United Nations) বিশেষ আধিকারিক মেরি ললার।
এলগার পরিষদ-মাওবাদী যোগের মামলায় ইউএপিএ-তে ধৃত ফাদার স্ট্যান স্বামী গত ৫ জুলাই হেফাজতে থাকাকালীন মারা যান। ৮৪ বছরের অসুস্থ এই মানবাধিকারকর্মীকে দীর্ঘদিন বন্দি রাখা হয়েছিল। তাঁর মৃত্যুর পর ঘরে-বাইরে নিন্দার ঝড় শুরু হয়। নিন্দায় সরব হয় রাষ্ট্রসঙ্ঘের একটি মানবাধিকার কমিটিও। যদিও কেন্দ্রের বক্তব্য ছিল, স্ট্যান স্বামীর মামলায় আইন মেনেই এগনো হয়েছে। আদালত তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ করেছিল। স্ট্যান স্বামীর চিকিৎসার সম্ভাব্য সব ব্যবস্থাই করা হয়েছিল। কাজেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নই ওঠে না।
তবে কেন্দ্র যাই বলুক, তাতে সমালোচনা বন্ধ হচ্ছে না। ললারের বিবৃতির পর কেন্দ্রের ভূমিকা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠল। রাষ্ট্রসঙ্ঘের এই স্পেশাল র্যাপারচারের বক্তব্য, চার দশকেরও বেশি মানবাধিকার রক্ষার আন্দোলনে যুক্ত একজন মানুষকে সন্ত্রাসবাদীর তকমা দেওয়ার পিছনে কোনও অজুহাত থাকতে পারে না। সন্ত্রাসবাদীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভিযোগে গত অক্টোবরে জেলে পাঠানো হয়েছিল ফাদার স্ট্যান স্বামীকে।
দীর্ঘদিন ধরে জেরার নামে হেনস্তা করা হয়েছে তাঁকে। জেলে তাঁর স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছিল। বারবার অনুরোধ করা সত্ত্বেও মুক্তি দেওয়া হয়নি। গ্রামীণ ও আদিবাসী মানুষের অধিকার রক্ষায় জীবন উৎসর্গ করেছিলেন ফাদার স্বামী। তা সত্ত্বেও হেফাজতে থাকাকালীন ৫ জুলাই এইভাবে তাঁর মৃত্যুর খবর পেয়ে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলাম। ২০২০ সালের নভেম্বরে রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশেষজ্ঞরাও এই মামলাটি ভারত সরকারের কাছে উত্থাপন করেছিলেন। তাঁরা ভারত সরকারকে মানবাধিকার রক্ষায় আন্তর্জাতিক দায়বদ্ধতার কথাও স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন। সেই দলে আমিও ছিলাম। এখন আমি ফের জানতে চাই, কেন তাঁকে মুক্তি দেওয়া হয়নি? হেফাজতে থাকাকালীন কেন তাঁকে মরতে হল?