প্রবল বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত মুম্বই, বাড়ি চাপা পড়ে মৃত ২৫
একটানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত বাণিজ্যনগরী মুম্বই (Mumbai)। শনিবার রাত থেকে চলছে ভারী বর্ষণ (Heavy rains)। রবিবার সকালে সামান্য সময়ের জন্য বিরতি। তারপর থেকে ফের বৃষ্টি। ইতিমধ্যে মুম্বই ও শহরতলিতে জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। তার উপর দেওয়াল ও বাড়ি ভেঙে মৃত্যু হয়েছে অন্তত ২৫ জনের। এছাড়াও জখম হয়েছেন বেশ কয়েকজন। বৃহন্মুম্বই পুরসভা জানিয়েছে, চেম্বুরের মাহুলে নিউ ভরত নগর এলাকায় একটি পরিত্যক্ত দেওয়াল চাপা পড়ে মৃত্যু হয়েছে ১৭ জনের। জখম হয়েছেন সাতজন। শনিবার রাত একটা নাগাদ একটি পরিত্যক্ত দেওয়াল ভেঙে পড়ে। অপরদিকে রাত আড়াইটে নাগাদ পূর্ব ভিকরৌলির সূর্য নগরে একটি পুরনো বাড়ি ভেঙে পড়লে পাঁচজন প্রাণ হারান। ভান্দুপে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে দেওয়াল চাপা পড়ে। চান্দিভালিতে ধসে চাপা পড়েন দু’জন। তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে একজন মারা যান। এদিন সকালে আন্ধেরিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক মিষ্টির দোকানের মালিকের মৃত্যু হয়। এছাড়া প্রবল বৃষ্টির জেরে ধস নামায় আরও ১১টি বাড়ি ও দেওয়াল ভেঙে পড়ার ঘটনা ঘটেছে। এদিকে বাণিজ্যনগরীতে বাড়ি ও দেওয়াল চাপা পড়ে মানুষের মৃত্যুর ঘটনায় শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। ট্যুইটারে তিনি লিখেছেন, খুবই বেদনাদায়ক ঘটনা। আমি মৃতদের পরিবারকে সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। মৃতদের পরিবারকে দু’লক্ষ এবং জখমদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে প্রধানমন্ত্রীর অফিস।
রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ মুম্বইয়ের ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করেছেন। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারেও শোকপ্রকাশ করেছেন। আহতদের বিনামূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন তিনি। সেইসঙ্গে মৃতদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে মহারাষ্ট্র সরকার। উদ্ধব থ্যাকারের ছেলে তথা মন্ত্রী আদিত্য থ্যাকারে ঘটনার পর চেম্বুর যান। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় মুম্বইয়ে ২০৪.০৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। প্রবল বৃষ্টির জেরে রেললাইন থেকে বিভিন্ন সড়ক জলের তলায় চলে গিয়েছে। বাতিল হয়েছে বাণিজ্যনগরীর লাইফলাইন লোকাল ট্রেন। একাধিক স্টেশনের প্রায় প্ল্যাটফর্ম পর্যন্ত উঠে গিয়েছে জল। পাশাপাশি বিভিন্ন এক্সপ্রেসের রুট সংক্ষিপ্ত এবং বাতিল হয়েছে। হাওড়া-মুম্বই স্পেশ্যাল ট্রেনের যাত্রাপথ সংক্ষিপ্ত করে দাদর স্টেশন পর্যন্ত করা হয়েছে। জলভাসি মানুষকে উদ্ধারে শুরু থেকেই তৎপর ছিল বৃহন্মুম্বই পুরসভা। পাশাপাশি নামানো হয়েছে দমকল ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীকেও। শহরের বিহার লেকের জল এখন বিপদসীমার উপর দিয়ে বয়ে চলেছে বলে জানিয়েছে পুরসভা। তবে বৃষ্টির হাত থেকে এখনই রেহাই মিলছে না বলে জানিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর।