বাংলার পর এবার ‘মিশন ত্রিপুরা’ – আগস্টে যাচ্ছেন অভিষেক
ত্রিপুরা (Tripura) দখলে বাংলার স্ট্র্যাটেজিই কাজে লাগাচ্ছে তৃণমূল (TMC)। সেখানেও পর্দার আড়ালে থেকে কাজের মূল দায়িত্বে ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরই। বরং উত্তর-পূর্বের বাঙালি অধ্যুষিত ওই রাজ্যে বিধানসভা ভোটের ২০ মাস বাকি থাকতেই ‘মাঠে’ নেমে পেড়েছে পিকের টিম। শুরু হয়ে গিয়েছে কাজ। সব ঠিক থাকলে, আগামী আগস্টে ত্রিপুরা গিয়ে বস্তুত ‘ভোট-সলতে’ পাকিয়ে আসবেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)।
বাংলার ভোটের ফলপ্রকাশের পরই ত্রিপুরাসুন্দরীর রাজ্যে তৃণমূলের পক্ষে হাওয়া বইছে, অন্তত সেখানকার রাজ্য নেতৃত্বের দাবি এমনটাই। দলের কর্মীরাও অভিষেককে চাইছেন। ‘সম্ভাবনা’র কথা মাথায় রেখেই তাই ২১ জুলাই কর্মসূচি মিটলে অভিষেক ত্রিপুরা যাবেন। সেক্ষেত্রে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়ার পর এটাই হবে তাঁর প্রথম ভিন রাজ্য সফর। জুলাই মাসে উপজাতিদের জনপ্রিয় পরব ‘খড়চি পুজো’ তেও শুভেচ্ছা বার্তা পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূলের। স্পষ্ট, উপজাতি অধ্যুষিত অঞ্চলেও দাঁত ফোটাচ্ছে তৃণমূল। সেখানেও দলীয় কার্যালয় খোলা হয়েছে। লেগেছে ২১ জুলাইয়ের ব্যানার।
তৃণমূল ভবনে প্রতিনিয়ত ভিন রাজ্যগুলি নিয়ে রিপোর্ট আসছে। ত্রিপুরা হোক বা ঝাড়খণ্ড, কেরল, তামিলনাড়ু, সব ক্ষেত্রেই রিপোর্ট আশাব্যঞ্জক। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সর্বভারতীয় ইমেজ ও উন্মাদনাকে ধরে রাখতে চাইছে তৃণমূল। এই সব রাজ্যে ভার্চুয়ালি ২১ জুলাইয়ের সভা সফল করার নির্দেশও গিয়েছে। ত্রিপুরার ক্ষেত্রে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি আশিসলাল সিংয়ের এ ব্যাপারে মন্তব্য, “আগস্টে দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের আমাদের রাজ্যে যাওয়ার কথা। প্রত্যেকেই তাঁকে চাইছেন। দল প্রতিদিনই কলেবরে বাড়ছে। চাহিদা তৈরি হয়েছে ফ্ল্যাগ-ফেস্টুনেরও। আগরতলার দুই প্রান্ত ছাড়াও উদয়পুর, ধর্মনগরে জায়ান্ট স্ক্রিনে শোনানো হবে নেত্রীর ভাষণ। যদিও প্রায় সব ব্লকে এই সভা জায়ান্ট স্ক্রিনে দেখানোর দাবি রয়েছে কর্মীদের।” বিজেপি বা সিপিএম থেকে কর্মীদের আসার ব্যাপারে দরজা খোলা হলেও অন্য দলের নেতাদের ব্যাপারে বাছবিছার করতে চাইছে তৃণমূলের ত্রিপুরা রাজ্য নেতৃত্ব।
একসময়ে তৃণমূলে যোগদানকারী বর্তমানে আগরতলার বিজেপি বিধায়ক প্রাক্তন মন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মণ তৃণমূলে ফিরছেন বলে কানাঘুষো শোনা যাচ্ছে। যদিও সুদীপবাবুর বক্তব্য, “এখনও সেই পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। পাঁচ-ছ’মাস গেলে রাজনীতির চিত্র পরিষ্কার হবে।” ২১ জুলাইয়ের দিন অবশ্য শহিদদের শ্রদ্ধা জানাতে তাঁর কুণ্ঠাবোধ নেই। ত্রিপুরা রাজ্য নেতৃত্বের দাবি, গত ২ মের পর থেকে প্রায় ১৫ হাজার সক্রিয় বিজেপি বা বাম কর্মী তৃণমূলের ঝাণ্ডা ধরেছেন। ছোট ওই রাজ্যে অবশ্য সংখ্যার বিচারে তা কম নয়। তৃণমূল সূত্রের খবর, বাংলায় ভোটের দু’বছর আগে থাকতেই যেমনভাবে গুছিয়ে নেমেছিল পিকের ‘টিম’, এবারও ত্রিপুরার ক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা একইরকম। বিধানসভা কেন্দ্র ধরে ধরে ‘হোম ওয়ার্ক’-এর কাজ হচ্ছে। উত্তর ত্রিপুরা, ধলাই, উনকোটি জেলায় তৃণমূলে যোগদানের হার বেশ ভাল। এই হারটাই বজায় রেখে যেতে চায় তৃণমূল। আর তাই কেন্দ্রের পেট্রোপণ্য ও জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির মতো কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে আন্দোলনে ঝাঁপাতেও নির্দেশ গিয়েছে ত্রিপুরার ব্লকে ব্লকেও।