দেশ বিভাগে ফিরে যান

যোগী রাজ্যে জাল আধার চক্র ফাঁস

July 19, 2021 | 2 min read

সীতাপুর গ্যাং দিন দিন পুলিসের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়াচ্ছে। যোগীরাজ্যে বসেই জাল আধার কার্ড তৈরির চক্র চালাচ্ছে সাইবার অপরাধীরা। সারা দেশে তাদের এজেন্ট ছড়ানো। টাকা দিতে হবে, তাহলেই মিলবে ভুয়ো কার্ড তৈরির ‘ফ্রাঞ্চাইজি’। কীভাবে? আধার বানানোর আইডি ও পাসওয়ার্ড ক্লোন করে। আর এভাবেই উত্তরপ্রদেশ (Uttar Pradesh) ছাড়াও বিহার ও রাজস্থানে ছড়িয়ে গিয়েছে এই চক্রের ডালপালা। দেশের নানা প্রান্তের নানা ঠিকানার আধার তৈরি হচ্ছে এখানে। বিনিময়ে? মোটা টাকা। তবে মূল শাখাপ্রশাখা উত্তরপ্রদেশেই। প্রতারক থেকে জঙ্গি, বিভিন্ন মামলায় এমন একটা চক্রের হদিশ পেয়ে তদন্তকারী অফিসাররা খোঁজখবর শুরু করেন। কয়েকদিন আগে মুর্শিদাবাদের সাগরদিঘি থেকে এরকমই তিন এজেন্টকে পুলিস গ্রেপ্তার করেছিল। তাদের মধ্যে জিয়াগঞ্জ এলাকার অতুল এবং হাকিম শেখকে জেরা করে তদন্তকারীরা উত্তরপ্রদেশের এই গ্যাংটির কথা জানতে পারে। জানা যায় যোগীরাজ্যের বেশ কয়েকজন প্রতারকের নামও। তাদের গ্রেপ্তারের জন্য সাগরদিঘি থানার একটি পুলিস দল সে রাজ্যে যায়। গ্রেপ্তার হয় কালীচরণ ওরফে রামস্বরূপ নামে ২৮ বছরের এক যুবক। তবে বাকিরা পালিয়ে গিয়েছে।

পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, উপযুক্ত নথির প্রয়োজন নেই, টাকা ফেললেই এরা কার্ড বানিয়ে দেয়। ভুয়ো আধার ব্যবহার করে অনেকেই অপরাধমূলক কাজ করতে পারে বলে তদন্তকারীদের অনুমান। সম্প্রতি বিএসএফ নদীয়ার সীমান্তবর্তী এলাকা থেকে কয়েকজন বাংলাদেশিকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের জেরা করে বাহিনীর আধিকারিকরা জানতে পারেন, ভুয়ো পরিচয়পত্র তৈরি করে কেরল এবং তামিলনাড়ুতেও কয়েকশো বাংলাদেশি রয়েছে। তাছাড়া কলকাতায় গ্রেপ্তার হওয়া তিন জেএমবি জঙ্গির কাছ থেকেও ভুয়ো পরিচয়পত্র পাওয়া যায়। তাই উত্তরপ্রদেশের ভুয়ো আধার কার্ড তৈরির চক্রটির হদিশ মেলায় আধিকারিকদের দুশ্চিন্তা বেড়েছে।

এক আধিকারিক বলেন, উত্তরপ্রদেশ থেকে ধৃত যুবক নিজেই বহু ভুয়ো আধার কার্ড -(Fake Aadhaar Card) তৈরির কথা স্বীকার করেছে। তার সঙ্গে সীতাপুর এলাকার আরও অনেকেই এই চক্রে জড়িত। তারা কিন্তু বৈধভাবে আধার তৈরির বরাতপ্রাপ্ত। অর্থাৎ, যে আইডি ও পাসওয়ার্ড তারা সরকারের থেকে পেয়েছে, সেগুলি ব্যবহার হয়েছে বেআইনি কাজে। মোটা অঙ্কের বিনিময়ে এই আইডি ও পাসওয়ার্ড ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে অন্য রাজ্যেও।  জঙ্গিপুরের পুলিস সুপার ওয়াই রঘুবংশী বলেন, উত্তরপ্রদেশ থেকে গ্রেপ্তার হওয়া যুবককে হেফাজতে নিয়ে জেরা করা হচ্ছে। তাদের মাধ্যমে কোথায় কোথায় অবৈধ আধার কার্ড তৈরি হয়েছে, সেটাও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিস সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, এই চক্রের এজেন্টরা টাকার বিনিময়ে যে কাউকে আধার কার্ড বানিয়ে দিত। তা তারা সংশোধনও করে দিত। কোনও নথি না থাকলে অতিরিক্ত টাকা নিয়ে কার্ড বানানো হতো। কার্ড তৈরির অর্ধেক টাকা এজেন্টরা উত্তরপ্রদেশের প্রতারকদের কাছে পাঠাত। মুর্শিদাবাদের সীমান্তবর্তী এলাকাগুলিতেও এই চক্রটি বহুজনকেই ভুয়ো আধার কার্ড তৈরি করে দিয়েছে। তবে এজেন্টরা এখানে কাজ করলেও এই চক্র উত্তরপ্রদেশ থেকেই কলকাঠি নাড়ে বলে বেশ কিছু তথ্য তদন্তকারীরা পেয়েছেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Uttar Pradesh, #Fake Aadhaar Card

আরো দেখুন