বাঁকুড়ায় শিশু পাচারে অভিযুক্তের সঙ্গে বিজেপি সাংসদের ছবি ঘিরে চাঞ্চল্য
শিশু বিক্রি ও পাচারের (child trafficking) অভিযোগে গ্রেপ্তার হওয়া কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপালের সঙ্গে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকারের ছবি ঘিরে রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। সোমবার রাজ্যের শিশু ও নারী সুরক্ষা মন্ত্রী শশী পাঁজা সেই ছবি ট্যুইট করে বিজেপি ও সুভাষবাবুর কড়া সমালোচনা করেন। তিনি ট্যুইটে লিখেছেন, বিজেপির নোংরা কাহিনি শেষ হবে না। বাঁকুড়ার (Bankura) জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের প্রিন্সিপাল শিশু পাচারে অভিযুক্ত। তার সঙ্গে খুব তৎপর্যপূর্ণ ভাবে যোগাযোগ রয়েছে বিজেপি (Bjp) এমপি সুভাষ সরকারের। বিজেপি কি এই পরিচিত অপরাধীদের আশ্রয় দেয়! তারপর শশীদেবী সুভাষবাবুর সঙ্গে প্রিন্সিপালের একটি ছবি পোস্ট করেন। একই সুরে ট্যুইট করেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কাকলি ঘোষ দস্তিদার। তাঁদের এই ট্যুইট ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
তবে দিল্লি থেকে সুভাষবাবু জানিয়েছেন, পশ্চিমবঙ্গে যে ঘটনা ঘটেছে, তা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আমি প্রশাসনিক অধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেছি। এই ঘটনার যাতে অতি দ্রুত ও নিরপেক্ষভাবে তদন্ত হয়, তার জন্য বলেছি। যদি কেউ অপরাধ করে থাকে, তার যেন দৃষ্টান্তমূলক সাজা হয়।
তাঁর সঙ্গে প্রিন্সিপালের ছবি প্রসঙ্গে সুভাষবাবু বলেন, পশ্চিমবঙ্গের নেতা মন্ত্রীদের ব্যক্তিগতভাবে ছোট করা তৃণমূলের অভ্যাস। তিনি একটি স্কুলের প্রিন্সিপাল। সেখানকার একটি গ্রামে শিশুদের খাতা, পেন্সিল, বই দেওয়ার অনুষ্ঠান ছিল। সেখানে অন্য শিক্ষকরাও ছিলেন। আমিও ছিলাম। এটা খুব স্বাভাবিক ঘটনা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চলতি বছরেরই ফেব্রুয়ারি মাস নাগাদ কালপাথর গ্রামে একটি অনুষ্ঠান হয়। সেই অনুষ্ঠানের ছবিই তৃণমূল সামনে এনেছে। শিশুদের বই, খাতা দেওয়ার অনুষ্ঠানটি হয় বিজেপির ব্যানারে। তাই সেই অনুষ্ঠানে প্রিন্সিপালের উপস্থিতি নিয়ে তৃণমূল প্রশ্ন তুলেছে। তৃণমূলের বাঁকুড়া-১ ব্লক সভাপতি সন্দীপ কুমার বাউরি বলেন, ওই প্রিন্সিপাল বিজেপি করে। সংসদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার কারণে সে সাহস পেয়েছে। বিধানসভা ভোটের আগে কালপাথরে ওই অনুষ্ঠানে এমপির সঙ্গে প্রিন্সিপাল ছিল।
যদিও বিজেপির বাঁকুড়া-১ মণ্ডল সভাপতি নির্মল মণ্ডল বলেন, খাতা, পেন্সিল দেওয়ার অনুষ্ঠানে প্রিন্সিপাল থাকলেও তার সঙ্গে রাজনৈতিক কোনও কথা বার্তা আমাদের হয়নি। তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগের কথা শুনে অবাক লাগছে। তৃণমূল বিধায়ক অরূপ চক্রবর্তী বলেন, তাই সাংসদ সম্পর্কেও যাতে আলাদা করে তদন্ত হয় তার দাবি আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানাব। কারণ, এর আগে শিশুপাচার নিয়ে বিজেপির এক নেত্রীর নাম উঠে এসেছিল।
প্রসঙ্গত, বাঁকুড়ায় শিশু বিক্রি ও পাচার কাণ্ডে আটজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিস। তাদের মধ্যে রয়েছেন ওই কেন্দ্রীয় স্কুলের প্রিন্সিপাল কমল কুমার রাজোরিয়া। তাঁর বাড়ি রাজস্থানের দৌসাতে। তবে অধ্যক্ষ স্কুলের কোয়ার্টারেই থাকতেন। পাচারের জন্য সেখানে তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে এসে রেখেছিলেন বলে অভিযোগ। যদিও অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবী রথীন দে বলেন, প্রিন্সিপাল দেড় লক্ষ টাকা মাইনের কেন্দ্রীয় সরকারের চাকরি করেন। উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে ফাঁসানো হচ্ছে।