জাতীয় গড়ের তুলনায় বেকারত্বের হার কম বাংলায়
বাংলায় বেকারত্বের হার (Unemployment rate) জাতীয় গড়ের তুলনায় অনেক কম। সোমবার লোকসভায় লিখিতভাবে তথ্য দিয়ে এই কথা জানিয়েছে শ্রমমন্ত্রক। সেই তথ্য থেকেই দেখা যাচ্ছে, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে দেশে বেকারত্বের হার ৫.৮ শতাংশ। অর্থাৎ, উল্লিখিত অর্থবর্ষে দেশে প্রতি ১০০ জনের মধ্যে বেকার প্রায় ছ’জন। অন্যদিকে, ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে পশ্চিমবঙ্গে এই হার ছিল ৩.৮ শতাংশ, যাকে রীতিমতো তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে তথ্যাভিজ্ঞ মহল। এদিন লোকসভায় কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব লিখিতভাবে জানিয়েছেন, কর্মসংস্থান ইস্যুতে সারা দেশে ইতিমধ্যেই একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মসূচিও গ্রহণ করা হয়েছে।
লোকসভায় কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী লিখিতভাবে জানিয়েছেন, স্ট্যাটিসটিকস অ্যান্ড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশন মন্ত্রকের অধীন ন্যাশনাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিস (এনএসও) ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ আর্থিক বছরে অ্যানুয়াল পিরিয়ডিক লেবার ফোর্স সার্ভে (পিএলএফএস) করেছে দেশজুড়ে। সেই সমীক্ষাতেই উঠে এসেছে সংশ্লিষ্ট তথ্য। এদিন লোকসভায় শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব যে তথ্য পেশ করেছেন, তাতে দেখা যাচ্ছে ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ -এই দু’টি আর্থিক বছরেই বাংলায় বেকারত্বের হার জাতীয় গড়ের তুলনায় কম। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে সারা দেশে বেকারত্বের হার ছিল ছয় শতাংশ। ওই আর্থিক বছরেই বাংলায় বেকারত্বের হার ছিল ৪.৬ শতাংশ। অর্থাৎ উল্লিখিত দু’বছরে বাংলায় বেকারত্বের হার ক্রমশ কমেছে। একইভাবে বেকারত্বের জাতীয় হারও ওই দু’টি অর্থবর্ষে হ্রাস পেয়েছে। বেকারত্বের জাতীয় হার হ্রাস পেলেও কয়েকটি রাজ্যে অবশ্য তা বৃদ্ধি পেয়েছে। কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান থেকে তেমনই জানা যাচ্ছে।
তথ্যাভিজ্ঞ মহলের মতে, বর্তমানে যখন কর্মসংস্থান অন্যতম বড় ইস্যু, এক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গের এই ব্যতিক্রমী ভূমিকা নিঃসন্দেহে অত্যন্ত লক্ষ্যণীয়। এদিন লোকসভায় লিখিতভাবে শ্রমমন্ত্রী ভূপেন্দ্র যাদব জানিয়েছেন, দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে গত বছর ১ অক্টোবর থেকে আত্মনির্ভর ভারত রোজগার যোজনা (এবিআরওয়াই) চালু করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংগঠনের (ইপিএফও) মাধ্যমে এই কর্মসূচি চালু করে সরকার সংস্থা-কর্তৃপক্ষকে নতুন কর্মী নিয়োগে উৎসাহ দিতে চাইছে। কারণ ওই কর্মসূচির আওতায় কোনও সংস্থা নতুন কর্মীদের এমপ্লয়িজ ও এমপ্লয়ার্স কন্ট্রিবিউশন দু’বছরের জন্য মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তবে নতুন কর্মীদের বেতন মাসে ১৫ হাজার টাকার কম হতে হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানিয়েছেন, করোনা পরিস্থিতিতে যদি কোনও নতুন কর্মী কর্মচ্যুত হন এবং ২০২০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইপিএফের আওতায় থাকা কোনও প্রতিষ্ঠানে কাজে যোগ না দেন, তাহলে তিনিও এই কর্মসূচির আওতায় থাকতে পারবেন। এক্ষেত্রে নাম নথিভুক্তির সময়সীমা বৃদ্ধি করে ২০২২ সালের ৩১ মার্চ করা হয়েছে। একইভাবে ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল চালু হওয়া প্রধানমন্ত্রী রোজগার যোজনার (পিএমআরপিওয়াই) আওতাতেও কার্যত একই সুবিধা মিলবে। তিন বছর পর্যন্ত মাসে ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনপ্রাপক নতুন কর্মীদের এমপ্লয়ার্স কন্ট্রিবিউশন এক্ষেত্রে মিটিয়ে দেয় কেন্দ্র। এছাড়া প্রাইম মিনিস্টার্স এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রাম, প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনার মতো একাধিক কর্মসূচিও কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন শ্রমমন্ত্রী।