রাজ্যসভায় তুলকালাম! তৃণমূল সাংসদদের সাথে দুর্ব্যবহার মোদীর মন্ত্রীর
পেগাসাসের মাধ্যমে নজরদারির ইস্যুতে ফের উত্তপ্ত সংসদ। আজ দফায় দফায় বিরোধী দলগুলি রাজ্যসভা (Rajya Sabha) এবং লোকসভায় এই ইস্যুতে বিক্ষোভ দেখায়। একাধিকবার মুলতুবি হয় কার্যপ্রণালী। এমনকি পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে যায় যে সারাদিনের মত মুলতুবি করে দিতে হয় রাজ্যসভার কার্যক্রম।
আজ সকাল থেকে পেগাসাস ইস্যুতে রাজ্যসভার ওয়েলে নেমে প্রতিবাদ করছিলেন তৃণমূলের সাংসদরা। ফোনের মডেল হাতে নিয়ে অভিনব প্রতিবাদ করছিলেন তাঁরা। লোকসভাতেও চলে প্রতিবাদ, অংশ নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এরপর দুপুর ২টোর সময় রাজ্যসভায় কেন্দ্রীয় তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী পেগাসাস সম্পর্কে বিবৃতি দিতে উঠলে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ আরও তীব্র হয়।
মন্ত্রীর বিবৃতি নয়, পূর্ণাঙ্গ আলোচনা চাই। প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি চাই। এটাই ছিল তৃণমূলের দাবি। তাই, মন্ত্রীকে যাতে বিবৃতি পেশ না করেন তাই তাঁর হাত থেকে কাগজ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন ডঃ শান্তনু সেন। এরপরই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই পক্ষের মধ্যে শুরু হয় বাদানুবাদ। এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী দুর্ব্যবহার করেন সাংসদদের সাথে।
বিজেপির তরফে দাবি করা হয়েছে মন্ত্রীর কাগজপত্র ছিঁড়ে ফেলেন শান্তনু সেন। সেই দাবি নাকচ করে আরজেডি নেতা মনোজ ঝা দাবি করেন, কাগজ কাড়া হয়েছিল মাত্র। ছেঁড়া হয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন, মন্ত্রী হরদীপ সিংহ পুরী সাংসদদের উদ্দেশে এমন সব শব্দ ব্যবহার করেন যা সংসদীয় পরম্পরার পরিপন্থী।
এই ঘটনার পরেই দিল্লিতে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের রাজ্যসভার দুই সাংসদ ডেরেক ও’ ব্রায়েন এবং সুখেন্দু শেখর রায়। তাঁরা বলেন, ‘আমরা রাজ্যসভায় পেগাসাস ইস্যু নিয়ে আলোচনার আবেদন করেছি। কিন্তু সরকার আমাদের আবেদনে সাড়া দেয়নি।’
সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘এর আগে রাজ্যসভায় জনস্বার্থ বিষয় আলোচনা বহুবার হয়েছে। কিন্তু নরেন্দ্র মোদী সরকার আসার পর থেকে আর তারা জনস্বার্থ বিষয়ক কোন আলোচনা করতে দিচ্ছে না।’
সাংসদ বলেন, ‘আমরা কিছু সুস্পষ্ট প্রশ্ন করেছি কেন্দ্রীয় সরকারকে। আমাদের দাবি প্রধানমন্ত্রী সংসদে এসে প্রশ্নগুলির উত্তর দিন। এনএসও দাবি করেছে তারা পেগাসাস স্পাইওয়্যার সরকারি সংস্থা ছাড়া আর কাউকে বেঁচে না। আমাদের প্রশ্ন কোন সরকারি সংস্থা এই স্পাইওয়্যার ব্যবহার করেছে? কতো টাকা খরচ করা হয়েছে এই স্পাইওয়্যারের পেছনে। ‘
সাংসদ ক্ষোভ উগরে বলেন, ‘২০১৯ সালে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফোন হ্যাক করা হয়েছিল। তার মানে তাঁর সাথে দলের সমস্ত শীর্ষ নেতাদের কথপোকথন বিজেপি শুনেছে এবং দলের রণ কৌশল জেনেছে। এভাবেই কারচুপি করে ওরা লোকসভা ভোটে ১৮ টি আসন পেয়েছে।’
কৃষি আইন নিয়ে সুখেন্দু শেখর রায় বলেন, ‘কৃষি আইনের সময় সীমা কেন বাড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে! ওই কালা কানুন প্রত্যাহার করুক সরকার। তা না হলে সংসদের ভিতরে এবং বাইরে প্রতিবাদ অব্যহত থাকবে।’