চিকিৎসা বিলে অস্বচ্ছতা! প্রাইভেট হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কড়া রাজ্য

স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প রূপায়ণে অস্বচ্ছতা ধরা পড়লে এবার দোষী প্রাইভেট হাসপাতাল- (private hospitals) নার্সিংহোমকে চিকিৎসার বিলের চার গুণ অঙ্ক ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে। সুয়োমোটো বা স্বতঃপ্রণোদিত তদন্ত শুরু হয়ে যাবে অভিযুক্ত হাসপাতাল নার্সিংহোমের বিরুদ্ধে। অভিযান চালাবে স্বাস্থ্যসাথী সেলের জেলা বা রাজ্য সার্ভিলিয়েন্স টিম। এমনই সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তরের স্বাস্থ্যসাথী সেল। তাতেও বাগে না আসলে, অভিযুক্ত হাসপাতাল-নার্সিংহোমের লাইসেন্স বাতিল করে দেওয়া হবে। শীঘ্রই এই সংক্রান্ত নির্দেশিকা প্রকাশ করতে চলেছে রাজ্য সরকার।
সূত্রের খবর, বিল সংক্রান্ত অস্বচ্ছতা, প্রয়োজন ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি করে রাখা, অপ্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার, অদরকারি চিকিৎসা করানো, প্রয়োজন ছাড়াই বেশি প্যাকেজের আওতায় ভর্তি করানো ইত্যাদি অভিযোগ আসার জন্য এরপর থেকে আর রোগী বা বাড়ির লোকজনের লিখিত অভিযোগের অপেক্ষা করবে না স্বাস্থ্যভবন। চিকিৎসা সংক্রান্ত বেশ কয়েকটি রাইডার বা সূচক ঠিক করেছে স্বাস্থ্যসাথী সেল। রোগীর চিকিৎসায় সেইসব সূচকগুলোতে কোনও গড়বড় হচ্ছে কি না, নজরদারি চালাবে স্বাস্থ্যভবন। তা চোখে পড়লেই সতর্ক করা হবে জেলা বা রাজ্য সার্ভিলিয়েন্স টিমকে। তারা চলে যাবে অভিযুক্ত হাসপাতালে তদন্ত করতে। রাজ্য পর্যায়ের টিমের মাথায় রয়েছেন খোদ স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডঃ অজয় চক্রবর্তী। অভিযোগ প্রমাণিত হলে প্রথমবার সংশ্লিষ্ট রোগীর চিকিৎসার পুরো খরচ কেটে নেওয়া হবে হাসপাতালে কাছ থেকে। দ্বিতীয়বার একই ধরনের ভুল করলে চিকিৎসার খরচের চার গুণ অর্থ আদায় করা হবে সেই হাসপাতালে কাছ থেকে।
স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্প নেই, এখনও স্বাস্থ্যসাথীর সঙ্গে যুক্ত হয়নি, আমরা স্বাস্থ্যসাথী পেশেন্টের চিকিৎসা করব না, এই জাতীয় প্রত্যাখানের অভিযোগে অভিযুক্ত হাসপাতাল নার্সিংহোমকে সহজে ছাড়বে না স্বাস্থ্যভবন। এতদিন পর্যন্ত যা ছিল সরকারি নির্দেশনামায় মোটামুটি সীমাবদ্ধ, তা এবার বাস্তবে কড়াভাবে প্রয়োগ করা হবে। বৃহস্পতিবার এমনই জানিয়েছেন ওই শাখার এক পদস্থ কর্তা। প্রসঙ্গত, বর্তমানে রাজ্যের প্রায় ১৭০০ প্রাইভেট হাসপাতাল ও নার্সিংহোম সমেত ২৭০০ স্বাস্থ্যকেন্দ্র এই প্রকল্পে যুক্ত। সাধারণ মানুষের জন্য রাজ্য বাজেটের ২২১৫ কোটি টাকা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বরাদ্দ করেছেন শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসাথী খাতেই। উপভোক্তা রয়েছেন রাজ্যের প্রায় দু’কোটির বেশি পরিবার। তাই এই কার্ড নিয়ে প্রাইভেট হাসপাতালের একাংশের ছিনিমিনি খেলা, সরকার মোটেই ভালো চোখে দেখছে না।