ফোনে আড়িপাতার ঘটনায় মোদি সরকারকে বিঁধলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়া
টেলিফোনে আড়িপাতার ঘটনায় কার্যত বিরোধীদের সুরে সুর মিলিয়ে মোদি সরকারের (Modi Govt) মুণ্ডপাত করলেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নেতা প্রবীণ তোগাড়িয়া(Pravin Togadia)। পেশায় চিকিৎসক গুজরাটের বাসিন্দারা প্রবীণ তোগাড়িয়া সঙ্গে নরেন্দ্র মোদী অমিত শাহর সম্পর্ক বেশ কিছুদিন ধরেই আদায়-কাঁচকলায়। এবার সুর সপ্তমে চড়াচ্ছেন তিনি।
সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ সুব্রহ্মমণ্যম স্বামী ভারতীয়দের ফোনে আড়িপাতার কান্ড সামনে এনেছেন। তারপর থেকেই দেশ উত্তাল। রাজনীতি সরগরম। সংসদ লন্ডভন্ড। তৃণমূল, কংগ্রেস, ডিএমকে, বাম-সহ অন্যান্য দলগুলি কাণ্ডে তদন্তের দাবি জানিয়েছে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর ইস্তফা দাবি করেছে তৃণমূল। সংসদে প্রধানমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছে বিরোধী দলগুলি।
ইজরায়েলি সফটওয়্যার পেগাসাস নিয়ে গোটা দেশ যখন উত্তাল, তখন আন্তরাষ্ট্রীয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের সভাপতি প্রবীণ তোগাড়িয়া এক আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ওরা যখন ক্ষমতা ছিল না তখন আমাদের বড্ড পছন্দ করতেন। ক্ষমতায় এসে আমাদের আর দেখতে পারেন না। তবে, আমাদের কথা শুনতে খুব পছন্দ করেন বোঝা যাচ্ছে। সেই কারণেই তো ফোনে আড়ি পেতেছেন। তবে, দেশের কোন রাজনৈতিক দলের নেতা অথবা দেশভক্ত কোন সাধারণ নাগরিকের ফোনে আরিনা পেতে সরকার যদি পাকিস্তানি এজেন্ট দের ফোনে ঠিকঠাকভাবে আড়ি পাততে পারতো তাহলে পুলওয়ামার মতো ঘটনা হতো না।
কোনও রকম রাখঢাক না রেখে তোগাড়িয়া বলেছেন, “নরেন্দ্র মোদি এবং অমিত শাহর সঙ্গে আমার যে কথা হয়েছে তা হাজার ঘন্টা পার করে যাবে। এতসব এরপরে এখন তাদের লুকিয়ে আমার কথা শুনতে হচ্ছে ! বিষয়টা বোধগম্য হচ্ছে না।”
তোগাড়িয়া আরও বলছেন, “ইজরায়েলি যে সংস্থার স্পাইওয়্যার নিয়ে কথা হচ্ছে তারা জানিয়েছে, তাদের এই সফটওয়্যার শুধুমাত্র সরকারকেই দেওয়া হয়। কোনও বেসরকারি সংস্থা এটা পেতে পারে না। তাহলে ফোনে আড়িপাতার পেছনে কারা? এই সফটওয়্যার কিনতে বহু টাকা লাগে এত টাকা কার আদায় করেছে ? সব জানতে সরকারের উচিত তদন্তের নির্দেশ দেওয়া।”
উল্লেখ্য, সেই ২০০৭ সাল থেকে নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত সাহার সঙ্গে সাপে-নেউলে সম্পর্ক প্রবীণ তোগাড়িয়ার। অথচ, এক সময় নরেন্দ্র মোদির বন্ধু হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তোগাড়িয়া। বিশ্ব হিন্দু পরিষদের প্রধান হিসেবে কর্মরত থাকার সময় মোদির সঙ্গে তার সখ্যতা কারও অজানা নয়। এরপর বিশ্ব হিন্দু পরিষদের শীর্ষ পদ থেকে তাকে সরিয়ে দিতেই সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। বেশ কয়েক বছর ধরেই মোদি-শাহর নিন্দায় মুখ খুলেছেন তোগাড়িয়া। এবার তোগাড়িয়া কাণ্ডে তদন্তের দাবি জানানোর বিরোধীরা বাড়তি অস্ত্র হাতে পেল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।