আজ দিল্লিতে মমতা, তাকিয়ে গোটা দেশ
রাজ্য মন্ত্রিসভার ‘বিশেষ’ বৈঠক। আর তারপরই রাজধানীর উদ্দেশে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘পেগাসাস’ ইস্যুতে দেশজুড়ে উত্তাল পরিস্থিতির মধ্যে তৃণমূল সুপ্রিমোর এই দিল্লি সফর ইতিমধ্যেই চর্চার ভরকেন্দ্রে। এরই মধ্যে অবশ্য নানা জল্পনা ছড়িয়েছে আজ, সোমবারের মন্ত্রিসভার বৈঠক নিয়েও। মুখ্যমন্ত্রী আচমকাই এই বৈঠক ডেকেছেন এবং নবান্নের শীর্ষ সূত্রের খবর, বড়সড় কোনও সিদ্ধান্ত হয়তো এদিন ঘোষণা করতে চলেছেন তিনি। তবে সে ব্যাপারে রবিবার রাত পর্যন্ত কেউ ঘুণাক্ষরে জানতে পারেনি। আধ ঘণ্টার মধ্যেই বৈঠক শেষ করে তিনি রওনা দেবেন বিমানবন্দরের উদ্দেশে।
শেষ মুহূর্তে পিএমও’র পক্ষ থেকে সময় পরিবর্তন না হলে আগামী কাল, মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মুখোমুখি হচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদ ভবনেই প্রধানমন্ত্রীর চেম্বারে উভয়ের একান্ত বৈঠক। প্রধানত জিএসটির বকেয়া এবং ভ্যাকসিন ইস্যুতে মমতা সরব হবেন বলেই জানা গিয়েছে। আম্পান এবং যশে’র ক্ষতিপূরণের তালিকাও তিনি মোদির হাতে তুলে দেবেন বলে খবর।
বিরোধীদের সম্মিলিত জোট ছাড়া বিজেপির বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে লড়াই যে ফলপ্রসূ হবে না, তা বিলক্ষণ বুঝছে কংগ্রেসও। তাই বার্তা পৌঁছচ্ছে তৃণমূল শিবিরে। এর আগে ভোট কৌশলী প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে বৈঠক তো ছিলই, এবার দলীয়ভাবে ট্যুইট করে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কেও প্রচারের সামনের সারিতে নিয়ে এল কংগ্রেস। রবিবার সোনিয়া গান্ধীর দল নিজস্ব ট্যুইটার হ্যান্ডলে অভিষেকের ছবি দিয়ে পেগাসাস ইস্যুতে নরেন্দ্র মোদি সরকারকে কোণঠাসা করেছে।
তাতে বলা হয়েছে, সীমাহীন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে মোদি সরকার। তাই ২০২১ সালে পশ্চিমবঙ্গে ভোটের আগে টার্গেট মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাইপো। কংগ্রেসের এই জোটের বার্তাকে স্বাগত জানিয়েছে তৃণমূল। রিট্যুইট করেছেন ডেরেক ও’ব্রায়েন—‘খেলা হবে।’ রণকৌশল ঠিক করতে সোমবার বিকেলে দলের এমপিদের নিয়ে বৈঠক ডেকেছেন অভিষেকও। সংসদ ভবনের ৬২ নম্বর ঘরে ওই বৈঠক হবে। পি চিদম্বরম এদিন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজে সংসদে দাঁড়িয়ে বলুন, পেগাসাসের নজরদারি হয়েছে কি হয়নি! তা না হলে জেপিসি হোক। আর একটা উপায়, সুপ্রিম কোর্টের নজরদারিতে তদন্ত।’ একইভাবে সরব শিবসেনার রাজ্যসভার এমপি সঞ্জয় রাউত। শিবসেনার দলীয় পত্রিকা ‘সামনা’য় তাঁর মন্তব্য, ‘হিরোশিমায় মানুষ বোমা বিস্ফোরণে প্রাণ হারিয়েছিলেন। আর পেগাসাসে মানুষের ব্যক্তি স্বাধীনতার মৃত্যু হয়েছে। কার নির্দেশে কেনা হয়েছে পেগাসাস? খরচই বা হয়েছে কত?’
২৯ জুলাই পর্যন্ত রাজধানীতে মমতা। তাই সেদিকেই তাকিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহল। প্রশ্ন বিজেপির অন্দরেও। কোথায় যাবেন ‘দিদি’? যন্তরমন্তরে কৃষকদের ধর্নামঞ্চে? অরবিন্দ কেজরিওয়ালের সঙ্গে তিনি কি সাক্ষাৎ করবেন? লালকৃষ্ণ আদবানির বাড়িতে আবার তিনি পৌঁছে যাবেন না তো? আদবানি বহুদিনই বিজেপিতে ‘ব্রাত্য’। মমতার উপস্থিতি কিন্তু তাঁকে আবারও খবরের শিরোনামে নিয়ে আসবে। কারণ, লক্ষ্য যে ‘মিশন-২৪’।