রাজ্যগুলিকে টিকা বন্টনের নীতি কি? কেন্দ্রকে প্রশ্ন হাই কোর্টের
কেন্দ্রের কোভিড টিকা (Corona Vaccine) নীতি কী, মোদি সরকারের কাছে জানতে চাইল কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court)। রাজ্যে ভ্যাকসিন সংক্রান্ত গোলমাল নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে একাধিক জনস্বার্থ মামলা দায়ের করা হয়েছিল। সোমবার কলকাতা হাই কোর্টের ভারপ্রাপ্ত বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চে সেই সমস্ত মামলার একসঙ্গে শুনানি হয়। সেই শুনানি চলাকালীন কেন্দ্রের টিকা নীতি নিয়ে তথ্য চান বিচারপতি। এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৫ আগস্ট। তার আগে এ সংক্রান্ত হলফনামা আদালতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
টিকা সরবরাহ নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ করেছে রাজ্য সরকার। বলা হয়েছে, জনসংখ্যার অনুপাতে কোভিড টিকা পাচ্ছে না এ রাজ্য। এমনকী, দেশের বিশেষ কিছু রাজ্য বেশি পরিমাণে কোভিড টিকা পাচ্ছে। এ নিয়ে আদালতে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে। এদিন আদালতের তরফেও জানতে চা্ওয়া হয়, কোন নীতি মেনে বিভিন্ন রাজ্যে টিকা বণ্টন করছে কেন্দ্রীয় সরকার? জনসংখ্যার অনুপাতে নাকি অন্য কোনও নীতি মেনে হচ্ছে টিকা বন্টন। তা আদালতকে জানাতে হবে। একটা সময় কেন্দ্র জানিয়েছিল আগে ষাটোর্ধ্বরা টিকা পাবেন, তার পর চল্লিশোর্ধ্বরা পরে বাকিরা টিকা পাবেন। এখনও কি সেই নীতি অনুযায়ী ভ্যাকসিন বন্টন হচ্ছে, তাও জানতে চেয়েছে আদালত। ভিনরাজ্যগুলিকে কত টিকা দিচ্ছে কেন্দ্র? তাও জানাতে হবে হলফনামায়। এমনকী, রাজ্যে কত কোভিশিল্ড কত কোভ্যাক্সিন আসছে, কোন অনুপাতে তা পাঠানো হচ্ছে, তাও জানতে চেয়েছে আদালত।
এদিন হাই কোর্টে রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত হলফনামা জমা করেন। সেখানে জানানো গয়েছে, রাজ্যের মোট ২ কোটি ৩ লক্ষের কিছু বেশি মানুষ সরকারি জায়গা থেকে টিকা পেয়েছেন। ১ কোটি ৫৮ লক্ষের বেশি মানুষ প্রথম ডোজ পেয়েছেন। ৪৫ লক্ষ মানুষ ইতিমধ্যেই দু’টি ডোজ পেয়েছেন। যাঁরা দুটি ডোজই পেয়েছেন, তাঁদের শরীরে কি কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে, কাদের শরীরে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গিয়েছে, তার হিসেব কারা রাখছেন, আদৌ সেই হিসেব রাথা হয়েছে কি না, তাও রাজ্যের জানতে চেয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট।
পাশাপাশি, রাশিয়ার স্পুটনিক ভি বা স্পুটনিক লাইট ভ্যাকসিন নিয়ে চর্চা হয় আদালতে। রাশিয়ার এই টিকা এ দেশে ছাড়পত্র পেয়েছে। কিন্তু তার দাম কত, জানতে চান প্রধান বিচারপতির বিচারাধীন বেঞ্চ। তিনি জানান, অধিকাংশ জায়গাতেই তো চড়া দামে বিকোচ্ছে এই ভ্যাকসিন। এর পরই ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির প্রশ্ন, যে রাজ্যে ৩০-৪০ শতাংশ জনসংখ্যা দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করেন, তাহলে তাঁরা কীভাবে এই ভ্যাকসিন পাবেন। এ নিয়ে কি কেন্দ্রের কোনও নীতি রয়েছে, তাও জানতে চেয়েছে আদালত। ৫ আগস্টের মধ্যে এ সমস্ত বিষয় নিয়ে কলকাতা হাই কোর্টে হলফনামা জমা দিতে হবে কেন্দ্রকে।