দেশদ্রোহীতার মামলা কেএলও প্রধান জীবন সিংহের বিরুদ্ধে!
ফের শিরোনামে কেএলও প্রধান জীবন সিংহ (Jiban Singh)। এবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee) ‘বহিরাগত’ মন্তব্য করেছেন কেএলও প্রধান। আর সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা অর্থাৎ ইউএপিএ (UAPA) লাগু করল রাজ্য সরকার। সদ্যই একটি ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে কেএলও প্রধান জীবন সিংহের, সেখানে দেখা গিয়েছে তিনি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ‘বহিরাগত’ বলে আক্রমণ করছেন। এর আগেও অবশ্য তৃণমূলের (TMC) একাধিক নেতৃত্বকে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ আছে জীবন সিংহের বিরুদ্ধে। কিন্তু এবার সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করায় তাঁর বিরুদ্ধে ইউএপিএ লাগু করা হল।
প্রসঙ্গত, শনিবার রাতে ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওর ভিত্তিতে বিধাননগরের ইলেকট্রনিক কমপ্লেক্স থানায় একটি মামলা দায়ের হয়। ভিডিওটিতে জীবন সিংহ বলেছেন, ‘মমতার বঙ্গভঙ্গের অভিযোগ একেবারে মিথ্যা। ভারত স্বাধীন হওয়ার আগে এবং পরে কোচ সাম্রাজ্য স্বাধীন রাজ্য ছিল। পরে তা ভারতবর্ষের সঙ্গে যুক্ত হয়। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার আগে সেখানকার ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জেরে পূর্ববঙ্গের বাঙালিরা এই ভূমিতে আশ্রয় নিয়েছিলেন।’ এমনকী ভিডিওটিতে পৃথক উত্তরবঙ্গের দাবি তোলা বিজেপি সাংসদ জনবার্লাকেও সমর্থন করতে শোনা গিয়েছে জীবন সিংহকে।
স্বাভাবিক কারণেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তাহলে কি উত্তরবঙ্গে বিশেষ করে কোচবিহারে অশান্তি পাকানোর জন্য বিজেপির (BJP) সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে কাজ করছে কেএলও (KLO)? প্রসঙ্গত, ১৯৯৮ সাল থেকে পৃথক কামতাপুর রাজ্যের দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছে কেএলও। এর আগেও নানা মামলায় বিদ্ধ হয়েছেন কেএলও প্রধান জীবন সিংহ। দিন কয়েক আগেই তৃণমূলের কোচবিহারের বর্তমান জেলা সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় ও প্রাক্তন বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মনকে প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু এবার সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আক্রমণ করায় দেশদ্রোহীতার মামলা রুজু হল জীবন সিংহের বিরুদ্ধে।
গোয়েন্দার প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছেন, কামতাপুর মুক্তি সংগঠন নামে একটি নতুন স্কোয়াড তৈরি হয়েছে। উত্তরবঙ্গের চারটি জেলা থেকে এখনও পর্যন্ত মোট ৫০জন এই স্কোয়াডের সদস্য। জীবন সিংহ নিজে এই স্কোয়াড কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব অসম ও মুসলিম ইউনাইটেড লিবারেশন টাইগার অব অসমের বেশ কয়েকজন সদস্যের সঙ্গে কেএমএসের বৈঠক হওয়ার তথ্য হাতে পেয়েছেলে গোয়েন্দারা।
আলিপুরদুয়ারের সাংসদ জন বার্লা উত্তরবঙ্গকে আলাদা রাজ্য করার দাবিতে সরব হয়েছিলেন দিন কয়েক আগেই। এ নিয়ে পালটা হুঁশিয়ারি দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আবার গোর্খাল্যান্ডের প্রসঙ্গ কার্যত উসকে দিয়েছেন দার্জিলিংয়ের বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তও। এই সবের মধ্যেই ফের উত্তরবঙ্গের মাটিতে কামতাপুর লিবারেশন অর্গানাইজেশন বা কেএলওকে ঘিরে নানা চর্চা শুরু হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের মতে, বিগতদিনে এই কেএলওর দাপট ঘুম ছুটিয়ে দিয়েছিল সরকারের। ফের কি নতুন অশান্তির প্রহর গুণছে উত্তরবঙ্গ?