শীঘ্রই চালু হবে শিয়ালদহ-ফুলবাগান মেট্রোর ট্রায়াল রান
সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী ৩১ জুলাই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর ফুলবাগান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত সম্প্রসারিত রুটে ‘ট্রায়াল রান’ হবে। তা সফল হলে সংশ্লিষ্ট পথে যাত্রী পরিষেবা চালুর জন্য কমিশন অব রেলওয়ে সেফটির (সিআরএস) চূড়ান্ত ছাড়পত্র পেতে আবেদন করা হবে। চলতি বছরের ডিসেম্বর নাগাদ বহু প্রতীক্ষিত শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত মেট্রো চালুর লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে এগচ্ছে রেল কর্তৃপক্ষ। এ প্রসঙ্গে মেট্রো রেলের জেনারেল ম্যানেজার মনোজ যোশি বলেন, আগামী তিন-চারদিনের মধ্যে ফুলবাগান থেকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মেট্রোর সার্টিফিকেশন ট্রায়ালের জন্য আমরা প্রস্তুত হচ্ছি। কারিগরি সমস্যায় এমাসের শেষে তা না হলে আগস্টের প্রথম সপ্তাহে ট্রায়াল রান হবে।
মেট্রোর এই শীর্ষকর্তা আরও বলেন, গোটা যাত্রাপথের সিগন্যালিং ব্যবস্থা, কমিউনিকেশনস বেসড ট্রেন কন্ট্রোল সহ যাবতীয় দিকগুলি ‘অথরাইজ সার্টিফায়ার’ দিয়ে পরীক্ষা করা হবে। সেই শংসাপত্র পাওয়ার পর নতুন স্টেশনের যাবতীয় পরিকাঠামো সহ চূড়ান্ত ছাড়পত্র পেতে সিআরএস পরিদর্শনের আবেদন জানানো হবে। মনোজ যোশির কথায়, আমরা চেষ্টা করছি এ বছরের শেষদিকে শিয়ালদহ পর্যন্ত মেট্রো পরিষেবা চালু করে দিতে। কিন্তু করোনার জন্য নির্মাণ কাজে কিছু সমস্যা হয়েছিল, তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা চলছে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ১৬.৬ কিলোমিটার এই দীর্ঘ মেট্রোপথ নির্মাণে খরচ ধরা হয়েছিল ৮ হাজার ৫৭৫ কোটি টাকা।
অভিনব এই প্রকল্পে গঙ্গার নীচে দিয়ে মেট্রো চলাচল করবে। তার জন্য টানেল বোরিং মেশিনের (টিবিএম) মাধ্যমে লাইন পাতার কাজ ইতিমধ্যেই শেষ হয়ে গিয়েছে। এই রুটের ৫.৮ কিমি পথে ট্রেন ছুটবে মাটির উপর দিয়ে। বাকি ১০.৮ কিমি অংশে মেট্রো চলবে মাটির নীচে দিয়ে। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়াম পর্যন্ত চলতে শুরু করে। তারপর সেই যাত্রাপথের সম্প্রসারণ হয় ফুলবাগান পর্যন্ত। ২০২০ সালের ৫ অক্টোবর সম্প্রসারিত অংশে পরিষেবা চালু হয়। যদিও পর্যাপ্ত যাত্রীর অভাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো প্রকল্পের সাফল্য নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এই মেট্রো শিয়ালদহ পর্যন্ত চললে যাত্রী সংখ্যা বাড়বে বলেই মনে করে রেল কর্তাদের একাংশ। যদিও ফুলবাগান পর্যন্ত পরিষেবা চালুর পর যাত্রী সংখ্যা বৃদ্ধির সম্ভাবনার কথা শোনা গেলেও আখেরে লাভ কিছু হয়নি।
এই মুহূর্তে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোতে সারাদিনে শ’পাঁচেক যাত্রী হচ্ছে। যা এই হাই প্রোফাইল আধুনিক পরিবহণ মাধ্যমের পক্ষে আশাব্যঞ্জক নয়। এদিকে, মাটির নীচে দিয়ে লাইন পাতার কাজে ব্যবহৃত টিবিএমের কাজ কার্যত শেষ হয়ে গিয়েছে। জার্মানির এই মেশিনটি এবার মাটির নীচে থেকে উপরে তুলে আনার চেষ্টা চালাচ্ছেন রেল বিকাশ নিগম লিমিটেডের কর্মীরা। বউবাজার থেকেই সেটি উপরে তোলা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, বছর দু’য়েক আগে এই টিবিএম মেশিনের কম্পনের জেরে বউবাজার এলাকায় একাধিক বাড়ি মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। যার জেরে গোটা প্রকল্পের কাজ দীর্ঘদিন আটকে ছিল। পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপে কাজ শুরু হয়। ফের নতুন টিবিএম দিয়ে লাইন পাতা শুরু হয়।