দিল্লিতে মমতার সাথে তলে তলে যোগ রাখছেন কারা? উদ্বেগে বঙ্গ বিজেপি
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরকালে তলে তলে কোনও দলীয় নেতা তৃণমূলের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না তো? আপাতত এই প্রশ্নেই চরম উদ্বেগের মধ্যে রয়েছে বঙ্গের গেরুয়া শিবির। এহেন পরিস্থিতি তৈরি হলে তা আটকানোর আদৌ কোনও উপায় আছে কি? তা খুঁজতেই হিমশিম খাচ্ছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। সোমবার রাতে আচমকাই দিল্লিতে মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করেছেন অধুনা তৃণমূলত্যাগী সুনীল মণ্ডল। বিজেপি সূত্রের খবর, গোটা বিষয়টিকে মোটেও ভালো চোখে দেখছে না দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এরকম পরিস্থিতি আরও তৈরি হতে পারে বলেই বিজেপি নেতৃত্বের আশঙ্কা। তাই এ ব্যাপারে দলকে প্রয়োজনে আরও সতর্ক থাকার জন্যও কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের পক্ষ থেকে বিজেপির রাজ্য নেতাদের বার্তা দেওয়া হয়েছে বলে খবর।
যদিও এ ব্যাপারে বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা সংসদ সদস্য দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘এসব ক্ষেত্রে দল কোনওরকম নজরদারি চালানোতে বিশ্বাস করে না। যাঁর দেখা করার, তিনি দেখা করবেন। এতে কী করার আছে?’ দিলীপবাবুর এই মন্তব্যকে কেন্দ্র করে তুমুল জল্পনার সৃষ্টি হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। কারণ এবারের পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা নির্বাচনে প্রধানত দলবদলু ইস্যুতে জোর ধাক্কা খেতে হয়েছে বঙ্গ বিজেপিকে। সাংগঠনিক দুর্বলতার কারণে ২০০টি আসনে জয় তো দূর অস্ত, তিন অঙ্কেই পৌঁছতে পারেনি বিজেপি। তেমনই আবার বঙ্গ ভোটে ভরাডুবির পরই ‘বেসুরো’ বাজতে শুরু করেছে গেরুয়া শিবিরের দলবদলুদের বড় অংশ। দিলীপবাবুর ওই মন্তব্যের পরই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে যে, সেক্ষেত্রে দল বদল নিয়ে কি একপ্রকার নিশ্চিতই হয়ে গিয়েছে গেরুয়া শিবির? এবং সেই কারণেই কার্যত গা ছাড়া মনোভাব নিয়ে চলছেন দলের নেতারা?
এই ইস্যুতে রাজনৈতিক মহলের জল্পনা বৃদ্ধি করেছেন বঙ্গ বিজেপির আরেক সংসদ সদস্য জগন্নাথ সরকার। মঙ্গলবার এই ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বিজেপি কোনও ব্যক্তিনির্ভর দল নয়। এটি সুনির্দিষ্ট আদর্শের উপর ভিত্তি করেই দাঁড়িয়ে রয়েছে। যাঁরা ভিন দল থেকে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন, প্রত্যেককে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। এখন যদি কেউ ফের দলবদল করতে চান, তাঁদের তো আর আটকে রাখা সম্ভব নয়।’ অর্থাৎ, এখানেও ইঙ্গিত স্পষ্ট। বিজেপির অন্দরের খবর, ফের দলবদলের সম্ভাবনা নিয়ে দলে উৎকণ্ঠা রয়েছে যথেষ্ট। কারণ সেক্ষেত্রে রাজ্য তথা জাতীয় রাজনীতিতে ফের মুখ পোড়ার আশঙ্কা করছেন নেতারা। কাজেই কীভাবে সতর্ক থাকা যায়, তার দিশানির্দেশ খুঁজতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে বঙ্গ ব্রিগেড।