দক্ষিণবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

কন্যাশ্রী রূপায়ণে রাজ্যের সেরা মুর্শিদাবাদ

July 28, 2021 | 2 min read

কন্যাশ্রী-কে টু প্রকল্পে মুর্শিদাবাদ জেলা রাজ্যের শীর্ষে রয়েছে। এই প্রকল্পের জন্য জেলায় মোট ৫০ হাজার ১৬৯টি আবেদন জমা পড়েছে। তারমধ্যে ৩৯ হাজার ৬৯৫ জনের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে শুরু করেছে। কে টু প্রকল্পে দ্বিতীয় স্থানে দক্ষিণ ২৪পরগনা রয়েছে। ৩৪ হাজার ২৬৪ জন এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে। মুর্শিদাবাদের অতিরিক্ত জেলাশাসক সিরাজ দানেশ্বর বলেন, কন্যাশ্রী প্রকল্পের কাজ এখনও চলছে। স্কুল বন্ধ থাকলেও প্রকল্পের সুবিধা পেতে কেউ যাতে বঞ্চিত না হয়, তা দেখা হচ্ছে। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। প্রয়োজনে তাঁরা ছাত্রীদের সঙ্গে নিজেরাই সরাসরি যোগাযোগ করবেন। পড়ুয়াদেরও এই প্রকল্পের জন্য আবেদন করতে আহ্বান জানানো হচ্ছে।


প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, কে ওয়ান প্রকল্পেও এই জেলায় এক লক্ষ ৯২ হাজার আবেদন জমা পড়েছে। এক লক্ষ ৮৭ হাজার পড়ুয়ার অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকতে শুরু করেছে। এই প্রকল্পে দক্ষিণ ২৪পরগনা মুর্শিদাবাদের থেকে কিছুটা এগিয়ে রয়েছে। কন্যাশ্রী প্রকল্পের জন্য জেলার মেয়েরা পড়াশোনায় আগের থেকে অনেক বেশি আগ্রহ দেখাচ্ছে বলে আধিকারিকদের দাবি। এই জেলার কন্যাশ্রী রুমানা সুলতানা রাজ্যের সেরা হয়ে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তাঁকে জেলা প্রশাসন কন্যাশ্রী প্রকল্পের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডার করেছে। জেলাশাসক শরৎ কুমার দ্বিবেদী তাঁকে কয়েকদিন আগে সংবর্ধনা দিয়ে এই ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, রুমানার এই ফলাফল অন্যান্য কন্যাশ্রীদেরও উৎসাহিত করবে। রুমানা তাঁর সাফল্যের রসায়ন অন্যান্য পড়ুয়াদের মধ্যেও ছড়িয়ে দেবেন।
মুর্শিদাবাদ থানা এলাকার বালি গ্রামীণ হাইস্কুলের শিক্ষক আবুল কালাম শেখ বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বহু পরিবার আর্থিক সমস্যায় পড়েছেন।

এই সময় কন্যাশ্রী প্রকল্পের টাকা পেয়ে ছাত্রীরা উপকৃত হয়েছে। এই প্রকল্পের সুবিধা পেয়ে অনেক মেয়ে উচ্চশিক্ষিত হচ্ছেন। আমাদের স্কুলেরও অনেক মেয়ে নার্সিং বা অন্যান্য টেকনিক্যাল বিষয়ে পড়াশোনা করছে। এই প্রকল্পের ফলে নাবালিকা বিয়েও অনেকটাই কমে গিয়েছে। আগে অভিভাবকরা মেয়েদের পড়াশোনার খরচ জোগাড় করতে না পেরে বিয়ে দিয়ে দিতেন। কিন্তু, এখন তাঁদের সেই চিন্তা করতে হয় না। স্কুল ছুটের সংখ্যাও কমে গিয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, দ্বাদশ শ্রেণি পাশ করার পর কে টু প্রকল্পে ২৫ হাজার টাকা পাওয়া যায়। তবে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে। ২০১৩ সাল থেকে এই প্রকল্পটি চালু হওয়ার পর থেকেই মেয়েদের শিক্ষার হার বেড়েছে। মুর্শিদাবাদ জেলার সমস্ত ব্লকেই কন্যাশ্রী ক্লাব গড়ে তোলা হয়েছে। তারা নাবালিকাদের বিয়ে রোখার পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কাজেও যুক্ত হয়েছে। আধিকারিকদের দাবি, জেলায় পড়াশোনার ক্ষেত্রে ছেলেদের থেকে মেয়েরা অনেক এগিয়ে গিয়েছে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে ছাত্রীরাই বেশি সংখ্যায় পরীক্ষা দিচ্ছে। এবছর জেলায় উচ্চ মাধ্যমিকে মোট ৬১ হাজার ৬২৮ জন পরীক্ষার্থী ছিল। তারমধ্যে ছাত্রের সংখ্যা ২৫ হাজার ৫২১ জন ছিল। ছাত্রী ছিল ৩৬ হাজার ১০৭ জন। মাধ্যমিকে মুর্শিদাবাদে মোট পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৮৬ হাজার ৯৫৩ জন ছিল। ছাত্র ছিল ৩২ হাজার ৬৭৯ জন। ৫৪ হাজার ২৭৪ জন ছাত্রী ছিল।


প্রশাসন সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, উচ্চমাধ্যমিক পড়া শেষ করার পরেও যাতে বেশি সংখ্যায় ছাত্রী পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে তারজন্য কন্যাশ্রী কে টু প্রকল্পে অনেক বেশি পড়ুয়াকে সুবিধা দেওয়ার টার্গেট নেওয়া হয়েছে। টেকনিক্যাল সমস্যার জন্য কিছু ছাত্রীর টাকা পেতে সমস্যা হচ্ছে। সেই সমস্যাও দ্রুত সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#murshidabad, #Kanyashree

আরো দেখুন