বাংলায় ভোট মিটতেই বিশ বাওঁ জলে সিএএ, বাড়ল নিয়ম বানানোর সময়সীমা
সিএএ নিয়ে নরেন্দ্র মোদি সরকারের যাবতীয় আগ্রহ কি বাংলার ভোটে স্বপ্নভঙ্গের সঙ্গেই শেষ হয়ে গেল? প্রায় দু’বছর হতে চলল, অথচ নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের বিধিনিয়ম তৈরি করে উঠতে পারেনি কেন্দ্র। বরং এই সংক্রান্ত সময়সীমা আরও একবার বাড়ানোর জন্য সংসদের কাছে আবেদন জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। আর তাতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এবার রুলস তৈরির সময়সীমা ধার্য হয়েছে ৯ জানুয়ারি ২০২২ পর্যন্ত।
নরেন্দ্র মোদির সাধের সিএএ নিয়ে বিজেপি তথা সরকার টানা সক্রিয় এবং আগ্রাসী রাজনীতি করেছে। সেটি চালু করার প্রধান অস্ত্র, আইনের রুলস তৈরি করতে কেন পারছে না স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক? নির্বাচনের আগে অমিত শাহ বলেছিলেন, বাংলায় বিজেপি ক্ষমতায় আসার পর মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) পাশ করানো হবে। উদ্বাস্তু পরিবারদের পাঁচ বছর ধরে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হবে। ভোটে বিপুল ধাক্কা খাওয়ার পর বিজেপি তথা মোদি সরকার এতটাই হতোদ্যম যে, এখন আর সিএএ নিয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ২০১৯ সালের অক্টোবর মাসে যে আইন সংসদে পাশ হয়েছে, ডিসেম্বর মাসে বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে এবং ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে কার্যকর হয়েছে, তার গতি হঠাৎ রুলস নির্মাণের ক্ষেত্রেই কেন থমকে যাচ্ছে? সংসদে রুলস তৈরির জন্য সময়সীমা প্রার্থনা করেছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সেই সময়সীমা অতিক্রান্ত। এবারও সময়সীমা সম্প্রসারণের আবেদন মঞ্জুর হয়েছে। এখন কি শৈথিল্যের বাতাবরণ কাটবে? নাকি গোটাটাই নির্বাচনী হাতিয়ার? অস্ত্র ফ্লপ করায় এটাই এখন লাখ টাকার প্রশ্ন। লোকসভায় সিএএ নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই বলেছেন, সিএএ রুলস তৈরির সময় বাড়ানো হয়েছে।
বাংলাদেশ, পাকিস্তান, আফগানিস্তান থেকে ভারতে আসা হিন্দু, শিখ, জৈন, খ্রিস্টান, পার্সি ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী উদ্বাস্তুদের ভারতীয় নাগরিকত্ব দেওয়া হবে—এই আইনই হল সিএএ। অথচ ২০১৯ থেকেই কিন্তু এর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-আন্দোলন হয়েছে। অভিযোগ, এই আইন ব্যবহার করে আসলে মুসলিমদের নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত করা হবে। কিন্তু মোদি সরকার সেই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছে, এর সঙ্গে কোনও ধর্মকে বঞ্চিত করার উদ্দেশ্য নেই। নির্বাচনের প্রচারে এই ইস্যুকে অগ্রাধিকার দিয়েছে বিজেপি। সেই উৎসাহে আপাতত ভাটার টান। নির্বাচন পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে বলেই কি?