কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

দীর্ঘ লড়াইয়ের অবসান, দেবারতির কাছে ক্ষমা চাইল বুক ফার্ম

July 29, 2021 | 2 min read

কলমের জোর যে তরবারির চাইতে বেশি তা আবারও প্রমাণ করলেন বাংলার জনপ্রিয় লেখিকা দেবারতি মুখোপাধ্যায়। লেখকদের অধিকারের জন্য টানা এক বছর ধরে নানা প্রতিকূলতার সঙ্গে যুঁঝেছেন তিনি। প্রতিপক্ষ আত্মসমর্পন করা অবধি লড়াই করে গিয়েছেন একাধিক বাধা পেরিয়ে। যুদ্ধজয়ের পর সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছিলেন এক সাবধান বার্তা, ‘… যাঁরা মানুষের মানহানি করেন, তাঁরা সতর্ক হন। ডিফেমেশন কেস কিন্তু ক্রিমিনাল সুটেও ফাইল করা যায়’।

ঠিক কী হয়েছিল?

বছরখানেক আগে ‘কপিরাইট’ ইস্যু নিয়ে প্রথমে থানা এবং পরে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন লেখিকা। তাঁর অভিযোগ ছিল, বুক ফার্ম নামের প্রকাশনা সংস্থা তাঁর রয়্যালটি দিচ্ছে না। বেআইনিভাবে বই বিক্রি করছে। পাশাপাশি সংস্থার নামে মানহানির অভিযোগ এনে Criminal Lawsuit দায়ের করেছিলেন তিনি। অনেক সমস্যার সঙ্গে লড়াই করার পর, অবশেষে সেই মামলায় জিতেছেন লেখিকা। এমনটাই দাবি তাঁর। বুক ফার্ম প্রকাশনার কর্ণধার শান্তনু ঘোষও প্রকাশ্যেই ক্ষমা চেয়েছেন দেবারতির কাছে।

গত ২৯ এপ্রিল আদালত লেখিকার পক্ষে রায় দেয়, এ নিয়ে খবরও করেছিল দৃষ্টিভঙ্গি। কপিরাইট নিয়ে মামলার পাশাপাশি মানহানির মামলাও করেছিলেন লেখিকা। তাঁর কথায়, ‘বেআইনিভাবে বই বিক্রির পাশাপাশি আমার মানহানিও করা হয়েছিল। আমি একজন WBCS অফিসার, লেখিকা, পাশাপাশি শিক্ষাজগতের সঙ্গে যুক্ত। এক বেসরকারি সংস্থার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর। আমার রেপুটেশন হ্যাম্পার করা হয়েছিল। তাই এক কোটি টাকার ডিফেমেশন কেসও করেছিলাম’।

লেখিকার সংযোজন, ‘সবজায়গায় হেরে যাওয়ার পর ওঁরা এখন চাইছেন আউট অফ দ্য কোর্ট সেটেলমেন্ট হোক। সেই কারণেই ক্ষমা চেয়ে পোস্ট করেছেন’। উল্লেখ্য, Book Farm-এর তরফ থেকে শান্তনু ঘোষ সোশ্যাল মিডিয়াতেই ‘নিঃশর্ত ক্ষমা’ চেয়ে পাওনা টাকা মিটিয়ে দেওয়ার কথা বলেছিলেন।

এ বার দেবারতির পরবর্তী পদক্ষেপ কী? উত্তরে তিনি বলেন, ‘আমার পাওনা টাকা মিটিয়ে দিলে আমি মামলা প্রত্যাহার করার কথা ভাবব। বড় একটা অ্যামাউন্ট পেন্ডিং রয়েছে। এই সপ্তাহের মধ্যেই টাকা দিয়ে দেবেন বলেছেন। যাতে মানহানির মামলা তুলে নিই, ওই জন্যই ফেসবুক পোস্টটি করা হয়েছে’।

দেবারতি জানান, কলেজ স্ট্রিটে লেখকরা প্রায়সই ঠকেন। কিন্তু আইনি ধারণা না থাকায় তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নিতে পারেন না। লেখিকার কথায়, ‘একজন লেখক এতদিন ধরে থানা, পুলিশ, মামলা, আদালত করে জিতলেন, এই বিষয়টি রোজ ঘটেনা। ইটস ভেরি আনকমন। অন্যায় করা আর অন্যায় সহ্য করা একই ব্যাপার। একা হয়েও লড়াই চালিয়ে নিয়ে যাওয়া উচিত। আমার বর্তমান প্রকাশকরা এই লড়াইয়ে অনেকটাই সাহায্য করেছেন’।

কিন্তু এই লড়াইয়ের কারণ কী? দেবারতির জবাব, ‘লেখকদের কপিরাইট আইন সম্পর্কে সচেতন করার জন্যই লড়াইটা করেছি। গত ১২ জুলাই আমরা অথরস অ্যান্ড পোয়েটস গিল্ড উদ্বোধন করেছি। লেখকদের নিয়ে সংগঠন। শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়, সমরেশ মজুমদারের মতো দিকপাল লেখকরা তো আছেন, নতুনরাও রয়েছেন। আসলে মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের মত লেখকও না খেতে পেয়ে মারা গিয়েছেন। অথচ সে সময় তাঁর বই বেস্টসেলার। ওই ঘটনার পুনরাবৃত্তি আমরা চাই না। সেই জন্যই তো এই উদ্যোগ’।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Book Farm

আরো দেখুন