ধর্ষণের অভিযোগ থেকে ব্যবসায়ীকে বাঁচাতে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন জন বারলা!
বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) বিজেপি (BJP) সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় সদ্য ঠাঁই পাওয়া জন বারলার (John Barla)। নতুন করে বাংলা ভাগের ডাক দেওয়া এবং সরকারি জমিতে নির্মাণ কাজ চালানোর অভিযোগে আগেই বিদ্ধ ছিলেন তিনি। এ বার আরও গুরুতর অভিযোগ আনা হয়েছে তাঁর বিরুদ্ধে। আদিবাসী এক তরুণীকে ধর্ষণে (Rape) অভিযুক্ত স্থানীয় ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ওই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার অছিলায় ৫০ লাখ টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিজেপি সাংসদের বিরুদ্ধে। এই ইস্যুকে সামনে রেখে কোমর বেঁধে ময়দানে নেমে পড়েছে তৃণমূলও (TMC)।
বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ারের দলীয় কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে ওই টাকা লেনদেন সংক্রান্ত এক অডিয়ো বার্তা প্রকাশ্যে আনেন বিজেপি -র প্রাক্তন জেলা সভাপতি, বর্তমানে জেলা তৃণমূলের অন্যতম নেতা গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা। সেখানে ধর্ষিতা তরুণীর এক নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী জয়চাঁদ আগরওয়ালের কথাবার্তা শোনা গিয়েছে। কথোপকথনে জয়চাঁদ ওই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জন বারলাকে ৫০ লাখ টাকা দেওয়ার কথাও উল্লেখ করেছেন। যদিও প্রকাশিত অডিয়ো টেপের সত্যতা ‘এই সময়’ যাচাই করেনি।
ইতিমধ্যেই নির্যাতিতা ওই তরুণীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে জয়চাঁদকে গ্রেফতার করেছে বানারহাট থানার পুলিশ। অভিযোগে বলা হয়েছে, প্রায় ১৪ বছর ধরে তরুণী অভিযুক্ত জয়চাঁদের বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। তাঁর দারিদ্রের সুযোগ নিয়ে ব্যবসায়ী দিনের পর দিন যৌন অত্যাচার চালিয়েছেন। দীর্ঘদিন তা সহ্য করার পর শেষ পর্যন্ত পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন ধর্ষিতা।
গঙ্গাপ্রসাদের অভিযোগ, ‘একজন সাংসদ এবং কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কী ভাবে ওই ঘৃণ্য কাজ করতে পারলেন? আমরা ওই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত দাবি করে জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছি। যেখানে দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর মন্ত্রিসভার স্বচ্ছতা নিয়ে বড়াই করেন, সেখানে জন বারলার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে কেন তদন্ত হবে না?’
জেলার পুলিশ সুপার দেবর্ষি দত্ত জানিয়েছেন, ‘তদন্তের স্বার্থে সাংসদ জন বারলাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে।’ যদিও গঙ্গাপ্রসাদ শর্মার ওই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসার পর জেলা বিজেপি -র পক্ষ থেকে আলিপুরদুয়ারের দলীয় অফিসে পাল্টা সাংবাদিক বৈঠক করেন জেলার অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়ন্ত রায়।
তাঁর দাবি, ‘অডিয়ো-বার্তায় জন বারলার কোনও কণ্ঠস্বর নেই। অভিযোগকারীর আত্মীয় এবং ব্যবসায়ীর বাক্যালাপ শোনা গিয়েছে মাত্র। তার কোনও সারবত্তা নেই। এ ভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হয় না। রাজনৈতিক স্বার্থে জন বারলাকে কলুষিত করতে অপপ্রচার চালাচ্ছে তৃণমূল। আমরা রাজনৈতিক ভাবে এর মোকাবিলা করব।’
জন বারলাকে ফোন করা হলে সব শুনে তিনি বলেন, ‘বিভাগীয় বৈঠকে ব্যস্ত রয়েছি। এখন কথা বলতে পারব না।’ পরে অবশ্য যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপেরও কোনও জবাব দেননি।