ধ্বস এড়াতে পাহাড়ে ভেটিভার ঘাস লাগাচ্ছে রাজ্য সরকার
ঝড়, জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের হাত থেকে নদীবাঁধ রক্ষা করতে সেখানে ভেটিভার ঘাস লাগানো শুরু হয়েছে। পাহাড়ে ধস আটকাতেও এবার এই ঘাস লাগানো হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পাহাড়ে ভেটিভার ঘাস লাগাচ্ছে রাজ্য সরকারের পঞ্চায়েত দপ্তর।
দার্জিলিংয়ের তাকদা বাজারের কাছে রেঞ্জার ঝোরায় ওই ঘাস লাগানোর কাজ শুরু হয়েছে ইতিমধ্যেই। এই বিশেষ ধরনের ঘাসের উচ্চতা তিন-চার ফুট হলেও তার শিকড় মাটির অনেকটা নীচে নেমে যায়। প্রতি বছর এই ঘাসের শিকড় আড়াই ফুট করে বাড়ে। যা পাহাড়ের মাটি, পাথরকে ধরে রাখতে পারবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সেক্ষেত্রে পাহাড়ে ধসের আশঙ্কা অনেকটাই কমবে বলে আশা তাঁদের।
গত কয়েকবছরে বর্ষার সময় পাহাড়ে একাধিক ধসের ঘটনা ঘটেছে। বড়সড় ধস নামলে পাহাড়ের সঙ্গে সমতলের যোগাযোগই বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রেঞ্জার ঝোরা এলাকায় এই ধরনের ধসের প্রবণতা বেশি দেখা যায়। এর আগে সেখানে শালবল্লা পাইলিং করে ধস আটকানোর চেষ্টা হলেও সাফল্য আসেনি। তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো পঞ্চায়েত দপ্তরের আধিকারিকরা পরিস্থিতি পর্যালোচনার পর ভেটিভার ঘাস লাগানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। রাজ্যে প্রথম নদীয়া জেলাতে ভেটিভার ঘাস লাগিয়ে ভূমিধস আটকানোর ক্ষেত্রে সাফল্য এসেছিল। সেই কাজের দায়িত্বে থাকা এক পদস্থ আধিকারিক এখন পঞ্চায়েত দপ্তরের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে আছেন। তাঁর অভিজ্ঞতা এক্ষেত্রে কাজে লাগানো হচ্ছে।
এবার যশ ঘূর্ণিঝড়ের পরে নদী ও উপকূল এলাকার বাঁধ পুনর্নির্মাণের সময় ভেটিভার ঘাস লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর মতে, প্রতি বছর ঝড়-বৃষ্টি হবে, আর বাঁধ ভেঙে যাবে, এটা হতে পারে না। তাই এমন একটা কিছু করা দরকার যাতে স্থায়ী কিছু ব্যবস্থা হয়। জানা গিয়েছে, বাংলাদেশেও এই ঘাস লাগিয়ে উপকার পাওয়া গিয়েছে। এই ঘাস লাগিয়ে পাহাড়ে ধস আটকানোর ক্ষেত্রে যদি সাফল্য আসে, তবে তা পাহাড়ের আরও নানা জায়গায় লাগানো হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন তাকদা ক্যান্টনমেন্ট রোডে ভেটিভার ঘাস লাগানোর কাজ চলছে। ধসের কারণে রাজ্যের নানা জায়গায় রাস্তা তৈরির ক্ষেত্রেও নানা সমস্যায় পড়তে হয়। এসব পরিকল্পনা সাফল্য পেলে সারা রাজ্যেই নানা জায়গায় ভেটিভার ঘাস লাগানো হবে বলে পঞ্চায়েত দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে।