দেশের সবচেয়ে পিছিয়ে পড়া রাজ্য বিহার! নীতি আয়োগের রিপোর্টে প্রশ্নের মুখে ‘ডবল ইঞ্জিন
ডবল ইঞ্জিনের ধুয়ো তুলে বাংলা জয়ে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে ঝাঁপিয়েছিল বিজেপি। সে আশার অবসান হয়েছে আগেই। তবে ডবল ইঞ্জিনের ‘জুমলা’ বেআব্রু হয়ে পড়েছে নীতি আয়োগের রিপোর্টে। লোকসভায় কেন্দ্র জানিয়েছে, পিছিয়ে পড়া রাজ্যদের শীর্ষে রয়েছে এনডিএ শাসিত বিহার। ডবল ইঞ্জিনের এহেন দুর্দশায় বিজেপির কড়া সমালোচনা শুরু করেছে বিরোধীরা। বিহারে নীতীশ সরকারকে সমালোচনায় বিদ্ধ করেছে বিরোধী রাষ্ট্রীয় জনতা দল (আরজেডি)। সম্প্রতি নীতি আয়োগের ‘সাসটেনেবল ডেভলপমেন্ট গোলস রিপোর্ট ২০২০-’২১’ অনুযায়ী পিছিয়ে পড়া রাজ্যের মধ্যে শীর্ষে রয়েছে বিহার।
এই প্রসঙ্গে রাজ্যসভায় প্রশ্ন তোলেন নীতীশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডের সাংসদ রাজীব রঞ্জন সিং। তিনি বলেন, ‘এই তথ্য যদি সত্য হয়, তাহলে তার কারণ কী? এরকম হলে বিহার সরকারের দীর্ঘ দিনের পুরনো দাবি অবহেলিত কেন? বিশেষ রাজ্যের মর্যাদার দাবি কবে বিবেচনা করা হবে?’ তাঁর প্রশ্নের উত্তরে কেন্ত্রীয় মন্ত্রী রাও ইন্দ্রজিৎ সিং জানান, সমস্ত রাজ্যের মধ্যে বিভিন্ন এককের ভিত্তিতে বিহারের স্কোর সবচেয়ে খারাপ। ১০০ পয়েন্টের মধ্যে বিহারের স্কোর ৫২। ১১৫টি সূচকের ভিত্তিতে এই স্কোর ধার্য করা হয়। দারিদ্রতা, শিক্ষা, মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বিহারের হাল খুবই খারাপ। ৩৩.৭৪ শতাংশ মানুষ দারিদ্রসীমার নীচে রয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য এককের বিচারে দারিদ্রসীমার নীচে রয়েছেন ৫২.৫ শতাংশ মানুষ। মাত্র ১২.৩ শতাংশ মানুষ স্বাস্থ্যবিমার আওতায় এসেছেন। ১৫ বা তার বেশি বয়সিদের ক্ষেত্রে সাক্ষরতার হার ৬৪.৭ শতাংশ। ৫ বছরের কম ৪২ শতাংশ শিশু বেড়ে উঠছে প্রতিকূলতার মধ্যে। বিহারে ৫০.৬৫ শতাংশ মানুষের হাতে রয়েছে মোবাইল। মাত্র ৩০ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
বিহারের হাল নিয়ে বিধানসভায় সরব হন বিরোধী দলনেতা তেজস্বী যাদব। তাঁর প্রশ্ন, ‘ডবল ইঞ্জিন সরকার ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও কেন বিহার প্রতিটি প্যারামিটারে খারাপ ফল করছে?’ যা অস্বস্তি বাড়িয়েছে নীতীশ সরকারের। সেই সঙ্গে প্রশ্ন উঠেছে ডবল ইঞ্জিন সরকারের সাফল্য নিয়ে। বিহার ছাড়াও ডবল ইঞ্জিন লাইনচ্যুত অসমেও। সেখানে ক্ষমতায় রয়েছে বিজেপি। কিন্তু উন্নয়নের নিরিখি পিছিয়ে পড়া রাজ্যের তালিকায় নাম রয়েছে অসমেরও।
নীতি আয়োগ জানিয়েছে, এগিয়ে থাকা রাজ্যের তালিকায় রয়েছে হিমাচল প্রদেশ, তামিলনাড়ু, অন্ধ্রপ্রদেশ, গোয়া, কর্ণাটক, উত্তরাখণ্ড, সিকিম ও মহারাষ্ট্র। পিছিয়ে পড়া রাজ্যের তালিকায় রয়েছে অসম, ঝাড়খণ্ড ও বিহার। এদিকে জাতিভিত্তিক (কাস্ট বেস) জনগণনা নিয়ে ফের সওয়াল করলেন তেজস্বী। বিধানসভায় তিনি বলেন, ‘কেন্দ্র যদি জাতিভিত্তিক গণনায় রাজি না হয়, তাহলে রাজ্য এই ধরনের গণনার উদ্যোগ নিক।’